সিরীয় শরণার্থীদের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সীমান্ত খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা৷ এদিকে ইরাক ও সিরিয়ার শরণার্থীদের শীতবস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী দেবে একটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা৷
বিজ্ঞাপন
সিরিয়া থেকে গড়ে প্রতি মিনিটে একটি শিশু দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে' – এ কথা জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধান আন্তনিও গুতেরেস বলেন, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থী সমস্যা সারা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ এটা শুধু গত কয়েক দশকের মধ্যে জঘন্যতম মানবিক বিপর্যয়ই নয়, আঞ্চলিক শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্যও এটা বড় ধরনের হুমকি৷'' এ সময় তিনি বিশ্বের সব দেশ, বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোকে সিরিয়া ছাড়তে বাধ্য হওয়া শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখারও আহ্বান জানান৷
জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ২৭ লাখ সিরীয় প্রাণ বাঁচাতে নিজের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে৷ তাদের বেশিরভাগই পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে৷ এ ছাড়া ৬৫ লাখ সিরীয় ঘর-বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলেও সিরিয়া ভেতরেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
ইরাক ও সিরিয়া থেকে আইএস-কে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস-কে ইরাক ও সিরিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ওয়াশিংটনের অদূরের এক সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠক করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ সেই নিয়েই ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Augstein
কোবানির বর্তমান অবস্থা
সিরিয়ার কোবানিতে চলছে আইএস-বিরোধী বিমান হামলা৷ লন্ডনভিত্তিক সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তের কোবানি শহরের এক-তৃতীয়াংশ দখল করে নিয়েছে ইসলামিক স্টেট৷
ছবি: REUTERS/U. Bektas
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি
মঙ্গলবার সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কোবানিতে ২১ বার বিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট৷ সে হামলায় শহরটির পুরোপুরিভাবে ইসলামিক স্টেটস বা আইএস-এর নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া আপাতত রোখা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/G. Sahin
ওবামার বৈঠক
ইরাক ও সিরিয়া থেকে আইএস-কে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা প্রণয়নে জোটভুক্ত দেশগুলোর সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/Kevin Lamarque
ইরাক ও সিরিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা
ওবামা ওয়াশিংটনের অদূরের এক সামরিক ঘাঁটিতে বৈঠক করেন৷ বৈঠকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মার্টিন ডেম্পসিকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিমা ও মধ্যপ্রাচ্যের মোট ২০টি দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন৷
ছবি: Reuters/G. Cameron
যুদ্ধটি হবে দীর্ঘমেয়াদী
বৈঠক শেষে ওবামা জানান, আইএস বিরোধী জোট ‘কোয়ালিশন অফ দ্য উইলিং’-এর এ বৈঠকে অংশ নেয়া সবাই একটি বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, ‘‘আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধটি হবে দীর্ঘমেয়াদী’’৷
ছবি: Reuters/Umit Bektas
নীরব দর্শকের ভূমিকায় তুরস্ক
মাত্র কয়েক’শ গজ দূরের সীমান্ত থেকে নীরব দর্শকের মতো যুদ্ধ দেখছে তুরস্কের সেনাবাহিনী৷ নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রকে আইএস-এর ওপর হামলা চালানোর অনুমতি দেয়নি তুরস্ক৷
ছবি: picture-alliance/AA
তুর্কি সরকারের কাছে কুর্দি বিদ্রোহীদের আহ্বান
কুর্দি বিদ্রোহীরা বলে আসছে, আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তারা তুরস্কের সেনাবাহিনীর সহায়তা চায় না৷ তারা চায়, কোবানিকে রক্ষা করতে যেসব অস্ত্র প্রয়োজন সেগুলো কুর্দি যোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুর্কি সরকার তাদের ভূমি ব্যবহার করার অনুমতি দিক৷ কুর্দিদের সেই দাবিও প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক৷
ছবি: Reuters/Rodi Said
জার্মানিতে বিক্ষোভ
শনিবার( ১১.১০.১৪) জার্মানির ড্যুসেলডর্ফে কয়েক হাজার কুর্দি কোবানিতে আইএস জঙ্গিদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Augstein
8 ছবি1 | 8
এদিকে বৃষ্টি এবং আসন্ন শীতের কষ্ট থেকে বাঁচাতে ইরাক ও সিরিয়ার শরণার্থীদের শীতবস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী দেবে ‘ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি' (আইআরসি) নামের একটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা৷ ইরাকের আনবার প্রদেশ এবং সিরিয়ার কোবানি শহরের ওপর সুন্নিদের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর হামলা এখনো চলছে৷ ফলে প্রতিদিন শরণার্থীর সংখ্যাও বাড়ছে৷ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে আনবার প্রদেশের কুবালসা এবং হিত শহর দুটি দখল করে নেয় আইএস৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, আইএস-এর আক্রমণের মুখে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ হিত ছেড়েছে৷ তুরস্কের সীমান্তবর্তী সিরীয় শহর কোবানি থেকেও অসংখ্য মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দেশান্তরী হয়েছে৷ কোবানির অন্তত ৫ হাজার ৪শ বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছে ইরাকে৷ আগামীতে আরো ১৫ হাজার মানুষ কোবানি ছাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷