1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই’

২১ অক্টোবর ২০২১

সিসি কামেরায় ধরা পড়া যুবকই কুমিল্লার পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরান রেখেছেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক আহমেদ৷ তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই৷

বুধবার পুলিশের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করা হয়৷ছবি: Bangladesh Police

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এই ঘটনায় ওই যুবক ইকবাল হোসেনের(২৫) স্বার্থ কী? নিশ্চয়ই এর পিছনে কোনো শক্তিশালী চক্র আছে৷ এসপি এর জবাবে বলেন, ‘‘ইকবালকে গ্রেপ্তার করতে পারলে আমরা এসব জানতে পারব৷’’

বুধবার পুলিশের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করা হয়৷ আর বলা হয় পাশের দারোগাবাড়ি মসজিদ থেকে থেকে সে কোরান এনে ১২ অক্টোবর দিবাগত রাত তিনটার পর কোনো এক সময় নানুয়া দিঘীর পাড় মণ্ডপে ঢোকার পথে হনুমানের মূর্তির কাছে রাখে৷

বৃহস্পতিবার সিসি ক্যামেরার আরও একটি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে৷ তাতে দেখা যায় এক ব্যক্তি দারোগাবাড়ি মসজিদ থেকে পবিত্র কোরান নিয়ে বের হচ্ছেন৷ ফুটেজটা কিছুটা আবছা৷ পুলিশ বলছে তিনি ইকবাল৷ মসজিদ থেকে ওই কোরান নিয়েই তিনি মণ্ডপে রাখেন৷

ইকবালের ছোট বোন সুলতানা বেগম জানান,‘‘ভিডিও ফুটেজে যাকে দেখা গেছে সেই আমার ভাই ইকবাল৷ তবে ১০ বছর ধরে সে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন৷ সে বিবাহিত এবং তার একটি মেয়ে আছে৷ সে রঙ মিস্ত্রির কাজ করত৷ ১০-১২ দিন আগে সর্বশেষ তাকে এলাকার লোকজন দেখেছেন৷ আমরা পাঁচ ভাই বোন এবং ইকবাল সবার বড়৷’’

ফারুক আহমেদ

This browser does not support the audio element.

তিনি আরো বলেন, ‘‘ইকবাল মাদকাসক্ত এবং মানুষের সাথে নানা ঝামেলা করত৷ সে কারনেই তাকে পরিবার থেকে বের করে দেয়া হয়৷ তবে সে দারোগাবাড়ি মসজিদে যেত৷ সেখানে থাকত৷ সে অপরাধী হলে তাকে যেন শাস্তি দেয়া হয়৷’’

তবে সুলতানার কথা, ‘‘সে কেন এই পাগলামি করল! তার কী স্বার্থ থাকতে পারে? আপনাদের কাছে অনুরোধ তার জবানবন্দি নেন৷ কারা তাকে দিয়ে এই কাজ করাল, আপনারা বের করেন৷’’

তিনি জানান, তারা মামা তাজির ইসলাম এবং ছেটো ভাই ছোটনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে ইকবালের খোঁজ জানতে৷ কিন্তু ওই ঘটনার পর পরিবারের সাথে  ইকবাল আর কোনো যোগাযোগ করেননি৷

কুমিল্লার লেখক এবং গবেষক আহসানুল কবির বলেন, ‘‘কারণ ছাড়া বৃষ্টিও পড়েনা৷ ইকবাল কারণ ছাড়া এটা করবে কেন? আর তার কী স্বার্থ থাকতে পারে কিছু টাকা-পয়সা পাওয়া ছাড়া৷ এটা স্পষ্ট যে তাকে কোনো কুচক্রী মহল ব্যবহার করেছে৷ আর তারা পরিকল্পিতভাবে এটা করেছে৷ সেটা না হলে এই ঘটনা কুমিল্লায়ই শেষ হয়ে যেত৷ দেশের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ত না৷’’

তার মতে, ‘‘নেপথ্যে যারা আছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে৷ যদি তা করা না হয় তাহলে একই ধরনের ঘটনা বার বার ঘটতেই থাকবে৷ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় দেশের মানুষের সামনে তাদের চেহারা উন্মোচন করা দরকার৷’’

কুমিল্লার এসপি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা এখন পুরোপুরি নিশ্চিত যে ইকবালই মণ্ডপে পবিত্র কোরান শরিফ রেখেছিলো৷ আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত হয়েছি৷ পাশের মসজিদ থেকে সে কোরান আনে৷ এখন আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি৷’’

ফুটেজ পেতে এত দেরি এবং এবং তাকে এখনো কেন গ্রেপ্তার করা যায়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি৷ আশা করি অচিরেই তাকে গ্রেপ্তার করতে পারব৷’’

ওই ব্যক্তি মসজিদ থেকে কোরান এনেছেন: আসাদুজ্জামান খান কামাল

This browser does not support the audio element.

এদিকে সিসি ক্যামেরার যথার্থ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘মোট ১২টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা জব্দ করেছি৷ আপনারা চাইলে তা আমরা অফিসে এসে দেখে যেতে পারেন৷ দেখলে আর প্রশ্নের অবকাশ থাকবে না৷ আর ক্যামেরাগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর দিক পরিবর্তন করে, মুভ করে৷ এটা বুঝতে এখন আর এক্সপার্ট হতে হয় না৷ যে কেউ পুরো ফুটেজ দেখলেই বুঝতে পারবে৷ এগুলো মুভিং ক্যামেরা ৷ এখনো লাগানো আছে৷ যে কেউ গিয়ে দেখতে পারেন৷ ছবি তো আর মিথ্যে কথা বলে না৷’’

এর সাথে প্রভাবশালী কোনো পক্ষ জড়িত থাকতে পারে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এটা তো তাকে গ্রেপ্তারের পর বিস্তারিত তদন্তে জানা যাবে৷’’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি(ইকবাল) মোট তিনবার পাশের মসজিদে রাত তিনটার দিকে গিয়েছেন৷ আমাদের অভিজ্ঞ বিশ্লেষকেরা দীর্ঘক্ষণ ধরে এটা(ফুটেজ) এনালাইসিস করে নিশ্চিত হয়েছে যে ওই ব্যক্তি মসজিদ থেকে কোরান এনে রেখেছেন৷’’

কুমিল্লার ঘটনায় এপর্যন্ত মোট নয়টি মামলায় ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে মণ্ডপ থেকে ফেসবুক লাইভ যিনি করেছেন সেই ফয়েজ এবং তার এক সহযোগী আছেন৷

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় সারা দেশে ৭২টি মামলায় ৪৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ