1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সীতাকুণ্ডের আগুনে নয় কর্মীকে হারালো ফায়ার সার্ভিস

৬ জুন ২০২২

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর আগুন নেভাতে গিয়ে একসঙ্গে নয় কর্মীর মৃত্যু হয়েছে৷ এর আগে কখনও আগুন নেভাতে গিয়ে এত কর্মীকে হারাতে হয়নি বাংলাদেশের অগ্নি নির্বাপক বাহিনীকে৷

ছবি: AFP

গত ৪১ বছরে যেখানে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল, সেখানে সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর এক অগ্নিকাণ্ডেই প্রাণ গেল নয়জনের৷

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রোববার শোকাহত কণ্ঠে সহকর্মী হারানোর কথা বলছিলেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের উপ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শাহজাহান শিকদার৷

 ‘‘১৯৮১ সাল থেকে এই পর্যন্ত মোট ১৭ জন ফায়ার সার্ভিস সদস্য নিহত হয়েছেন৷ আর এই ঘটনায়.... আমরা সত্যিই অনেক মর্মাহত ও শোকাহত৷”

দীর্ঘ ৩৯ বছর চুড়িহাট্টাসহ বিভিন্ন বড় বড় দুর্ঘটনায় আগুন নেভানোর দায়িত্ব পালন করছেন ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন৷ বর্তমানে তিনি অবসর-পূর্ব ছুটিতে রয়েছেন৷ তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এত ফায়ারম্যানের মৃত্যু তিনি কখনও দেখেননি৷

 ‘‘আগে বিভিন্ন অভিযানে একজন সদস্য মারা যাওয়ার ইতিহাস আছে৷ তবে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনজন নিহতের একটি ঘটনা মনে পড়ছে৷”

চট্টগ্রাম নগরী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বিএম ডিপোতে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে৷ পরে রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে৷

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সবগুলো ইউনিট চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় রাতে সাড়ে ৩টার দিকে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নি নির্বাপক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়৷

অগ্নিকাণ্ডে যে ৪৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে, তার মধ্যে নয়জনই ফায়ার সার্ভিসের সদস্য৷ এছাড়া কয়েকজন নিখোঁজও রয়েছেন৷

ফায়ার সার্ভিসের নিহত সদস্যরা হলেন- কুমিরা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রানা মিয়া, আলাউদ্দিন, শাকিল তরফদার, নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট মনিরুজ্জামান, লিডার মিঠু দেওয়ান, সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের লিডার নিপুন চাকমা, ফায়ার ফাইটার রমজানুল ইসলাম ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী৷

এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার একটি পোড়া লাশ ফায়ার সার্ভিসের কর্মী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে তবে তার পরিচয় মেলেনি৷ অশনাক্ত এমন লাশ শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ ফায়ার সার্ভিসের যে কর্মীরা এখনও নিখোঁজ, তারা হলেন- কুমিরা ফায়ার স্টেশনের লিডার ইমরান হোসেন মজুমদার, ফায়ার ফাইটার শফিউল ইসলাম, সীতাকুণ্ড স্টেশনের ফায়ারফাইটার রবিউল ইসলাম ও ফরিদুজ্জামান৷

বাহিনীর কর্মকর্তা শাহজাহান জানান, অগ্নিকাণ্ডে আহত ১৫ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি৷ এর মধ্যে দুজনকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয়েছে বাকি ১৩ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷

প্রথমে যারা গিয়েছিল, নিহতদের মধ্যে তারাই বেশি

সীতাকুণ্ডে আগুনের খবর পেয়ে প্রথম ঘটনাস্থলে পৌঁছে কুমিরা ফায়ার স্টেশন আর দ্বিতীয় দল হিসেবে যায় সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশন৷ নিহত আটজন ফায়ার সদস্যের মধ্যে ছয়জন কুমিরার আর দুজন সীতাকুণ্ডের৷

দেবাশীষ বর্ধন বলেন, ‘‘ফার্স্ট রেসপন্স দলের সদস্য নিহত হওয়ায় এটাই প্রমাণ করে যে, তথ্যের ভুল ছিল৷ আগুন লেগেছে রাসায়নিকে, আর বলেছে কাপড়ের কন্টেইনার অথবা অন্য কিছু বলেছে৷

"যদি রাসায়নিক পদার্থে আগুনের কথা বলা হত, তাহলে শুরুতে পানি ব্যবহার করা হত না; ফায়ারম্যানরা ফোম ব্যবহার করত৷’’

কুমিরা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান মাহের উদ্দিন রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের লিডার স্টেশন মাস্টার সুলতান মাহমুদ প্রথম দল নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়৷

ক'টায় রওনা দিয়েছে- জানতে চাইলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বলেন, ‘‘শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় রওনা দেয়৷ কিন্তু আসার এন্ট্রি নেই৷ কারণ ওই দল তো আর ফিরে আসেনি।৷আসলেই না এন্ট্রি করত৷’’

এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ