1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সীমান্তে ভারতের ভাসমান চৌকি কেন?

২৯ অক্টোবর ২০১৬

বাংলাদেশ-ভারত জল সীমান্তে আরো ভাসমান চৌকি স্থাপন করবে ভারত৷ আগামী বছর এই চৌকি স্থাপন করা হবে বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে৷ সুন্দরবন এলাকায় এই ধরনের তিনটি ভারতীয় ভাসমান চৌকি আছে৷ এবার ইছামতি নদী এলকায় এসব চৌকি হবে৷

Bangladesch Sundarbans Sibsa Fluß Schrimpsfischer
ছবি: Imago/Bluegreen Pictures

বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন, ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে এধরনের চৌকি স্থাপন করা৷ কেউ কেউ বলছেন, এধরনের চৌকি স্থাপন করে ভারত চায় বাংলাদেশকে সব দিক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে৷ নিরাপত্তা ইস্যু আসলে তাদের অজুহাত মাত্র৷ ভাসমান চৌকি স্থাপনের ভারতীয় সিদ্ধান্তের কথা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের মহাপরিদর্শক পি এস আর অঞ্জনেইয়ুলু৷ তবে মোট কয়টি আউটপোস্ট স্থাপন করা হবে তা জানাননি তিনি৷ ধারণা করা হচ্ছে ছয় থেকে সাতটি চৌকি স্থাপন করা হতে পারে৷

Khan - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতোমধ্যে কোস্টাল পুলিশ স্টেশন স্থাপন করেছে৷ বৃদ্ধি করেছে উপকূলীয় পুলিশ সদস্যের সংখ্যা৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘প্রতিটি আউটপোস্টে ৩৫ থেকে ৪০ জনের একটি দল নিয়োগ করা হবে৷ প্রত্যেক দলের কাছে ৪টি বা ৫টি করে স্পিডবোট থাকবে৷ থাকবে রাডার৷ বোটগুলো এলাকায় টহল দেবে৷ তারা প্রয়োজনে পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে৷'' ভাসমান বিওপি স্থাপন করতে এক বছরের মতো সময় লেগে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

এদিকে, দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার বিএসএফের ডিআইজি আর পি এস জয়সয়াল বলেন, ‘‘আমাদের সদস্যরা ইতোমধ্যে চব্বিশ ঘণ্টাই পাহারা বজায় রেখেছেন, কিন্তু বিওপিগুলো হয়ে যাওয়ার পর পাহারার মান অনেকগুণে বৃদ্ধি পাবে৷''

প্রসঙ্গত, ভাসমান চৌকি স্থাপনের পিছনে ভারত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে৷ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে পহেলা জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস (ইসলামিক স্টেট)৷ এরপর থেকেই তাদের তৎপরতা নিয়ে দিল্লীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে৷ এই হামলা বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধির কারণ৷ এর আগে ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার সঙ্গে জড়িত লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্যরাও জলপথে মুম্বই পৌঁছায়৷ ফলে জলসীমান্তের পাহারা জোরদার করাকে গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত৷

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশ ও ভারতের দক্ষিণবঙ্গকে বিভক্ত করে রেখেছে ইছামতি নদী৷ সেই নদীর ৮০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থাপিত হবে এইসব ভাসমান চৌকি৷ সুন্দরবন অঞ্চলে জলসীমায় ১০২টি দ্বীপ রয়েছে যার ৫৪টিতে মানুষ বাস করে৷ বাকিগুলো গভীর অরণ্য এং সেখানে বন্যপ্রাণীর বসবাস৷'' 

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আরো জানিয়েছে, ভারতের বর্তমান সরকার বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর পাহারা জোরদার করেছে এবং সীমান্তপথে গরু পাচার কমিয়ে এনেছে৷ ক্ষমতায় আসার পরপরই বিজেপি সরকার এ বিষয়ে বিএসএফকে নির্দেশনা দেয়৷ স্পিডবোটের সাহায্যে গরু পাচারকারীদের ধরে ফেলা সম্ভব হয়৷ এর প্রতিক্রিয়ায় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভারত আসলে বাংলাদেশকে সব দিক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে৷ এই ভাসমান চৌকি স্থাপনের পরিকল্পনা তারই অংশ৷ নিরাপত্তা ইস্যু একটি অজুহাত মাত্র৷''

তিনি বলেন, ‘‘এরইমধ্যে ভারত বাংলাদেশকে চারদিক দিয়ে কাঁটাতারে ঘিরে ফেলেছে৷ এবার জলসীমানাও ঘিরে ফেলবে৷ এভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়না৷ নিরাপত্তার জন্য দরকার আস্থার পরিবেশ৷ ভারত যা করছে তাতে আস্থার নয়, অনাস্থার পরিবেশ তৈরি হবে৷ বাংলাদেশ সরকারের উচিত এসব ব্যাপারে ভারত সররকারের সঙ্গে কথা বলা, কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া৷''

Rashid - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

অন্যদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তি আছে৷ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেয়া হয়৷ আমার মনে হয় ভারত এধরনের ভাসমান আউটপোস্ট নির্মাণ করলে তা বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে স্থাপন করলেই ভালো৷ আর ভারত ভাসমান নিরাপত্তা চেকপোস্ট নির্মাণ করলে বাংলাদেশের দিক থেকেও একই ধরনের আউটপোস্ট নির্মাণের প্রশ্ন আসে৷''

তবে তিনি মনে করেন, ‘‘বিষয়টি সাংঘর্ষিক কোনো কিছু নয়৷ নিরাপত্তা ইস্যু দুই দেশের জন্যই সমান গুরুত্বপূর্ণ৷''

উল্লেখ্য, ভারতের এই ভাসমান সীমান্ত চৌকি স্থাপন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা বা হবে কিনা তা জানা যায়নি৷ বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি'র দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে এনিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলতে পারেননি ডয়চে ভেলে'র ঢাকা প্রতিনিধি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ