1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মৃত্যুর ফালির জায়গায় প্রকৃতির লীলা

৯ জুন ২০২১

শীতল যুদ্ধের সময়ে দুই জার্মানির সীমান্ত ছিল উত্তেজনায় ভরা বিপজ্জনক এক জায়গা৷ ৩০ বছর ধরে সেই সীমান্তের কিছু অংশে এক সংরক্ষিত অরণ্য গড়ে উঠেছে৷ মানুষের তৈরি বিভাজন দূর করে প্রকৃতিই নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়েছে৷

Deutschland Baumsterben im Nationalpark Harz nahe des Brocken
ছবি: Martin Wagner/Imago Images

এককালে পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যে সীমান্তে ছিল কড়া পাহারা৷ আজ সেই জায়গা হার্ৎস জাতীয় পার্ক, যা জার্মানির অন্যতম বড় সংরক্ষিত প্রাকৃতিক এলাকা৷ প্রায় ৩০ বছর আগে সেই রিজার্ভ সৃষ্টির সময় থেকে জীববিজ্ঞানী গুন্টার কার্স্টে তদারকির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ এই উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘এই জাতীয় পার্কের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, আমরা প্রকৃতির কাছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জায়গা ছেড়ে দিয়েছি৷ সেখানে প্রকৃতি যা খুশি তাই করতে পারে৷ কাঠ শিল্পের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছাড়া এত বড় জঙ্গল এলাকা সত্যি বিরল৷''

যখন জাতীয় পার্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল, তখন কর্মীদের একেবারে নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হয়েছিল৷ সীমান্ত বরাবর একশো মিটার চওড়া এলাকা নিরপেক্ষ এলাকা ‘ডেথ স্ট্রিপ' নামে পরিচিত ছিল৷ কারণ কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির সীমান্তরক্ষীদের উপর ‘শুট অ্যাট সাইট' নির্দেশ ছিল৷ ১৯৮৯ সালেও সৈন্যরা সীমান্ত পাহারা দিত৷ কাঁটাতারের বেড়া ও কংক্রিটের দুর্গের মতো দেখতে স্থাপনা অতিক্রম করা কার্যত অসম্ভব ছিল৷

বিপজ্জনক সীমান্তে প্রকৃতির লীলা

04:04

This browser does not support the video element.

তিন দশক পর প্রকৃতি সেই মৃত্যুর ফালি নতুন করে প্রাণবন্ত করে তুলেছে৷ গুন্টার কার্স্টে বলেন, ‘‘বার্চ গাছ টিকে গেছে৷ এখানে এত ভেষজনাশক এবং কীটনাশক ব্যবহার করা হতো, যে প্রায় কোনো গাছই গজানোর উপায় ছিল না৷ অথচ গত ৩০ বছরে এখানে কত কীই না ঘটেছে!''

শুধু গাছপালাই নতুন করে গজাচ্ছে না৷ বেশ কিছু বিরল প্রজাতির প্রাণীও আবার নিজেদের স্বাভাবিক আবাসে ফিরে আসছে৷ এক গোপন ক্যামেরা সর্বশেষ আগন্তুকের ছবি তুলতে পেরেছে৷

প্রায় ২০০ বছর আগে এই এলাকা থেকে নিশ্চিহ্ন হবার পর লিংক্স জাতের শিকারি বনবfড়াল আবার ফিরে এসেছে৷ বনকর্মীদের হস্তক্ষেপের দৌলতে সেই প্রজাতির প্রায় একশো প্রাণী সেখানে পাকাপাকিভাবে বসবাস করছে৷ কার্স্টে বলেন, ‘‘হার্ৎস এলাকায় অনেক কাল ধরে লিংক্স বসবাস করতো৷ তারপর মানুষই তাদের মেরে ফেলে৷ প্রাপ্য পুনর্বাসন তরান্বিত করতে আমরা ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে লিংক্সের বসতি গড়ে তুলি৷''

সেই উদ্যোগ বেশ সফল হয়েছিল, যদিও তার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছিল৷ কার্স্টে হাজার হাজার ঘণ্টা জঙ্গলে কাটিয়ে অতীতের সীমান্ত এলাকায় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রকৃতির তৎপরতা নথিভুক্ত করেছেন৷

জাতীয় পার্কের বনকর্মীরা বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন৷ চারিদিকে শুধু মৃত গাছ চোখে পড়ছে৷ আগে সেখানে বিশাল মাপের স্প্রুস গাছ ছিল৷ কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে খরা এবং বেড়ে চলা তাপমাত্রা গাছগুলিকে দুর্বল করে দিয়েছে৷ তারপর ‘বার্ক বিটল' পোকা সেগুলিকে নষ্ট করে দিয়েছে৷

এবার জাতীয় পার্কের সবচেয়ে উঁচু জায়গার দিকে যাবার পালা৷ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,১০০ মিটার উচ্চতায় ব্রকেন এলাকা অবস্থিত৷ এককালে পূর্ব জার্মানি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের গুপ্তচর সংস্থা সেখান থেকে পশ্চিমা বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর আড়ি পাততো৷ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল এই এলাকা৷ আজ পাশেই কয়েক'শো রকম জাতের গাছপালার একটি বাগান শোভা পাচ্ছে৷ গুন্টার কার্স্টে বলেন, ‘‘এর অর্থ, অন্তত আংশিকভাবে হলেও ব্রকেন গত ৩০ বছরে তার পুরানো অবস্থায় ফিরে গেছে৷ ফলে আমরা খুব খুশি৷''

তবে তাঁর কাজ এখনো শেষ হয় নি৷ যতদিন না দেশের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে বিভাজন দূর না হয় গুন্টার কার্স্টে কাজ চালিয়ে যেতে চান৷

আলেক্সান্ডার ফাইস্ট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ