1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সীমান্তে রোহিঙ্গাদের চাপ বাড়ছে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

মিয়ানমারের রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে সীমান্তে রোহিঙ্গাদের চাপ আড়ছে। অল্প কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার খবর পাওয়া গেলেও বড় আকারের কোনো দল এখনো বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।

DW Akademie Galerie zu Rohingya Refugee Camp
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির (ফাইল ফটো)ছবি: Lina Elter

আর নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও আতঙ্কে আছে। তবে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি অবস্থান ও টহল  জোরদার করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় লোক জনের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

টেকনাফে কথা বলে জানা গেছে এই মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই পরিবারের পাঁচ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের একজন দিলারা বেগম তার শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। তার  স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তারা এখন কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।

এরা সবাই রাখাইনের বুধিডং এলাকার বাসিন্দা। তারা নির্যাতনের মুখে মংডু হয়ে নাফ নদী পাড় হয়ে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ওই রোহিঙ্গা নারী জানিয়েছেন, আরো তিনটি পরিবার সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। তাদের বাংলাদেশে আসতে ১১ দিন লেগেছে।

কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা  শরণার্থী  নূর মোহাম্মদ বাংলাদেশে এসেছেন ২০১৮ সালে। তার পরিবার বা আত্মীয় স্বজন এখন আর কেউ মিয়ানমারে নাই। তিনি জানান,"আমরা খবর পেয়েছি সেখানে(রাখাইনে)  এখন আবার নির্যাতন করা হচ্ছে। ঘরবাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। অনেকেই সীমান্ত এলাকায় এসে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে ঢুকতে চাচ্ছেন। কিন্তু ঢুকতে পারছেন না। তবে দুই-তিনজন করে প্রবেশ করছেন বলে আমরা খবর পেয়েছি। তারা বিভিন্ন ক্যাম্পে আছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পরিস্থিতি চলছে। ”

‘ রাখাইনে প্রতিদিনই গোলাগুলি হচ্ছে’

This browser does not support the audio element.

কুতুপালং উপজেলার রাজা পালং ইউপি সদস্য মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন জানান,"আমরা খবর পেয়েছি বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গত কয়েকদিনে ২০-৩০ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারে প্রবেশ করেছে। প্রথমে তারা ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলো। পরে তাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারের ওপারে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান নিয়েছেন। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তে তারা অবস্থান করছেন। নোম্যান্স ল্যান্ডে থাকা চার-পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাও আতঙ্কে আছেন।

উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান,"পরিস্থিতি ২০১৭ সালের দিকে যাচ্ছে। রাখাইনে প্রতিদিনই গোলাগুলি হচ্ছে। আমাদের কাছে যে খবর আছে তাতে সেখানে এখনো যে রোহিঙ্গারা আছে তারা সীমান্তের দিকে চলে আসছে ভয়ে। সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত না হলে তারা বাংলাদেশে ঢুকতে বাধ্য হবে। এছাড়া তো তাদের আর উপায় নেই। আর আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় আছি তারাও ভয়ের মধ্যে আছি। এখনো রোহিঙ্গারা বড় সংখ্যায় ঢুকছে না। তবে প্রতিদিনই বিভিন্ন সীমন্ত দিয়ে অল্প কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।”

‘সেখানে (রাখাইনে) এখন আবার নির্যাতন করা হচ্ছে’

This browser does not support the audio element.

তবে কক্সবাজার এপিবিএন-এর অধিনায়ক সৈয়দ হারুন অর রশীদ জানান,"বিজিবি সীমান্তে শক্ত অবস্থান নেয়ায় কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকতে পারছে না। আমরা ক্যাম্পে অবস্থান করি। নতুন কোনো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছে বলে আমাদের কাছে তথ্য নেই।”

রাখাইনে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। আর এই অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে তারা গত এক মাসে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের স্থল এবং আকাশ সীমা লঙ্ঘন করেছে। তারা সীমান্তে অভিযান চালাচ্ছে বলে তাদের গোলাগুলি কক্সবাজারে এসে পড়ছে।  এতে বাংলাদেশিদের মধ্যে সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কয়েক দফায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানোর পরও থামছে না মিয়ানমার।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের সংখ্যা এখন ১২ লাখে দাঁড়িয়েছে। তারা এখন ভাসানচরসহ ২৭টি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। এপর্যন্ত নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। বাংলাদেশ এপর্যন্ত আট লাখ ২৯ হাজার  ৩৬ জনের তালিকা দিয়েছে মিয়ানমারকে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ