অভিনব রেলযাত্রার অভিজ্ঞতা
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬বাঁক, সুড়ঙ্গ, সাঁকো সামলে ছোট রেললাইনের উপর দিয়ে দুলকি চালে এগিয়ে চলেছে গ্লেসিয়ার পুলমান এক্সপ্রেস৷ রেটিয়ান রেলওয়ে কোম্পানির ট্রেনচালক ক্রিস্টফ রোনার বলেন, ‘‘রেল ইঞ্জিন যত পুরানো, তত বেশি যন্ত্রপাতি রয়েছে৷ সবক'টির উপর নজর রাখতে হয়, কান পেতে শব্দ শুনতে হয়, তাপমাত্রার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়৷ আধুনিক রেল ইঞ্জিনে কম্পিউটারই সে সব কাজ করে৷''
দুপুরের দিকে গ্লেসিয়ার পুলমান এক্সপ্রেস রাইন নদীর উপত্যকায় পৌঁছেছে৷ নদীর উজানে স্রোত কম নয়৷ ট্রেনের রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজ চলছে৷ এই কামরাটিও রেলের সুবর্ণ যুগের প্রতীক৷ ট্রেনের দোলানি সত্ত্বেও একফোঁটা পানীয় বাইরে পড়লে চলবে না৷
সুইস রেলের ঐতিহ্যের সঙ্গে সুইস নিপুণতার মেলবন্ধন এখানে দেখা যায়৷ সুইজারল্যান্ডের মানুষ ট্রেনে চাপতে বড় ভালোবাসেন৷ ট্রেন ম্যানেজার পাইডার হেয়ার্টলি বলেন, ‘‘ফুটবলে কোনোদিন বিশ্বকাপ না পেলেও রেল যাত্রার ক্ষেত্রে আমরাই চ্যাম্পিয়ন৷ এ নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি৷ অন্য কোনো দেশের মানুষ এত বেশি ট্রেনে চাপেন না৷ সবচেয়ে বড় ট্রেনের সুড়ঙ্গ এখানেই আছে৷ কিন্তু মানুষ সেই গর্ব দেখায় না, কিন্তু অবশ্যই গর্বিত হওয়া উচিত৷''
যাত্রীরা এই ভ্রমণ উপভোগ করেন৷ বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুরেও এগিয়ে চলেছে৷ তবে রাতে ট্রেনে নয়, হোটেলের বিছানায় আরাম করার পালা৷ অনেক ধোঁয়া ছেড়ে স্টিম ইঞ্জিন যাত্রা শুরু করে৷ প্রায় ১০০ বছর পুরানো ট্রেনে যাত্রীরা রেল যাত্রার আদিযুগের আমেজ উপভোগ করেন৷ গিয়ারহুইল ড্রাইভের সাহায্যে ট্রেন ২,০০০ মিটারেরও উপরের গিরিপথ পৌঁছে যায়৷ জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়েও সেখানে বরফ দেখা যায়৷ সুইজারল্যান্ডে রেলযাত্রায় চড়াই-উতরাইয়ের অভাব নেই৷ ফুরকা গিরিপথ থেকে আবার নীচের উপত্যকায় নামার পালা৷
মার্টিন হ্যারৎসগ/এসবি
দেবারতি গুহ