সুইডেনের ওলান্ড দ্বীপ পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়৷ সেখানে রাজপরিবারের গ্রীষ্মকালীন আবাসও রয়েছে৷ দ্বীপের অতীত চরিত্র এখনো পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি৷ ভবিষ্যতের জন্যও তা সংরক্ষণ করার উদ্যোগ চলছে৷
ছবি: imago/blickwinkel
বিজ্ঞাপন
ওলান্ড দ্বীপে বেড়াতে গেলে সাধারণত সেতু পেরিয়েই যাত্রা শুরু হয়৷ হেমন্ত এলে দ্বীপের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া রুক্ষ হয়ে ওঠে৷ যারা শান্ত পরিবেশ পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটাই সেরা সময়৷ কারণ বাকি সময় পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে৷ তখন ওলান্ড দ্বীপের অপূর্ব প্রকৃতির স্বাদ পাওয়া কঠিন হয়৷
প্রায় ১৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বীপের উপকূলের সব প্রান্তেই একটি করে লাইটহাউস রয়েছে৷ উত্তরে তার নাম লম্বা এরিক৷ ওলান্ড স্থানীয় ইতিহাস মিউজিয়ামের ইয়ুলিউস সেয়েফ বলেন, ‘‘এই দ্বীপে সমুদ্রযাত্রার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে৷ লাইটহাউসগুলি তারই চিহ্ন৷ দ্বীপের ঠিক সামনের জলপথে অনেক বাধা রয়েছে৷ তাই এতগুলি লাইটহাউস রয়েছে৷ দু'টি বড়, অন্যগুলি ছোট৷''
উইন্ড মিলও দ্বীপের নিসর্গের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷ আজ বেশিরভাগ মিলই অচল৷ আগে সারা বছর সমুদ্রের বাতাসের ধাক্কায় পাখা ঘুরতো৷ এখানকার কৃষিকাজে সেগুলির বিশেষ গুরুত্ব ছিল৷ ইয়ুলিউস সেয়েফ বলেন, ‘‘একটা সময় ছিল, যখন দ্বীপের প্রায় সব চাষির বাড়িতে নিজেদের চাহিদা মেটাতে উইন্ডমিল ছিল৷ ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ওলান্ড দ্বীপে প্রায় ২,০০০ মিল ছিল৷''
রাজপরিবারের গ্রীষ্মকালীন আবাস আছে যে দ্বীপে
02:36
This browser does not support the video element.
দ্বীপের সোললিডেন দুর্গও একটা বড় আকর্ষণ৷ ওলান্ড দ্বীপের সুবাতাস গ্রহণ করতে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে সুইডেনের তৎকালীন রানি ভিক্টোরিয়া গ্রীষ্মকালীন আবাস হিসেবে দুর্গটি তৈরি করিয়েছিলেন৷ দুর্গের বাগানটি আজও এক দৃষ্টব্য৷ দুর্গের প্রতিনিধি আনা শিবলি বলেন, ‘‘দুর্গের বাগানের সবচেয়ে প্রাচীন অংশে এক ইংলিশ পার্ক ও এক ইটালীয় বাগান রয়েছে৷ রানি ভিক্টোরিয়ার আমলেই এগুলি তৈরি হয়েছিল৷ তাছাড়া পরে কিছু অংশ যোগ হয়েছে৷ আমরা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ করি, যাতে ভবিষ্যতেও সেটি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে৷''
পর্যটকদের কাছে সোললিডেন দুর্গ অত্যন্ত প্রিয় গন্তব্য৷ কার্ল গুস্তাফ, সিলভিয়া ও রাজপরিবারের সদস্যরা গ্রীষ্মকালে কোথায় যান, পর্যটকরা একবার সেই জায়গা দেখতে চান৷
ইউরোপের প্রাসাদদুর্গ, নগরদুর্গ
মধ্যযুগ থেকে চলে আসছে এই সব দুর্গের মতো সুরক্ষিত প্রাসাদ, চারপাশে পরিখা ও শেকলে টানা পাটাতন, কামান বসানোর ফাঁক যুক্ত প্রাচীর ও প্রাকার, কত যুগের ইতিহাস৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হোহেনজোলার্ন ক্যাসল, জার্মানি
সোয়েবিয়ান আল্পসের একটি ৮৫৫ মিটার উঁচু শৈলশিরার উপর নির্মিত এই প্রাসাদদুর্গ হোহেনজোলার্ন রাজপরিবারের আদি বাসস্থান৷ হোহেনজোলার্ন নৃপতিরা ১৫২৫ সাল থেকে ১৯১৮ সাল অবধি প্রাশিয়া শাসন করেছেন, এছাড়া ১৮৭১ থেকে ১৯১৮ সাল অবধি জার্মানিতে রাজত্ব করেছেন তারা৷ হোহেনজোলার্ন ক্যাসলটিকে ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর প্রাসাদদুর্গগুলির মধ্যে গণ্য করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টাওয়ার অফ লন্ডন
এই দুর্গটি তার সুদীর্ঘ ইতিহাসে কখনো ছিল রাজকীয় প্রাসাদ, কখনো অস্ত্রাগার, কখনো কোষাগার, কখনো পশুশালা - হাতি, বাঁদর বা গণ্ডার, কে না থেকেছে এখানে! হাজার বছরের পুরনো টাওয়ারে আজ শুধু দাঁড়কাকদের বাস৷ কিংবদন্তিতে বলে, এই বায়সরাই নাকি ইংল্যান্ডের রক্ষাকবচ: তারা বিদায় নিলেই রাজ্য ও টাওয়ারের পতন ঘটবে৷ তা যা’তে না ঘটে, সেজন্য তাদের সকলেরই একটি করে পাখা ছাঁটা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Rain
ক্যাসল অফ দ্য হোলি এঞ্জেল, ইটালি
১৫২৭ সালে পবিত্র রোমক সাম্রাজ্যের সৈন্যরা যখন রোম নগরীকে বিধ্বস্ত করে, তখন পোপ সপ্তম ক্লিমেন্ট স্বয়ং আশ্রয় নিয়েছিলেন এই প্রাসাদদুর্গটিতে৷ পোপের রাজত্বে সপ্তদশ শতাব্দী থেকে ১৮৭০ সাল অবধি এই ক্যাসলটিকে কারাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল৷ প্রাসাদটি টাইবার নদীর দক্ষিণ তীরে৷ এককালে ছিল রোমান সম্রাট হেড্রিয়ানের সমাধিসৌধ, যিনি মারা যান ১৩৮ সনে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.Laporta
লোকেট ক্যাসল, চেক প্রজাতন্ত্র
মহাকবি গ্যোটে স্বয়ং এই ক্যাসলে গেছেন দশবারের বেশি৷ ১৮২৩ সালের ২৮শে আগস্ট গ্যোটে তাঁর ৭৪তম জন্মদিন পালন করেন এই লোকেট ক্যাসল-এ৷ সেযাত্রায় গ্যোটের সঙ্গে ছিল আর এক পরিবার, যাদের ১৯ বছর বয়সি কন্যা উলরিকে ফন লেফেটৎসভ’কে বিবাহের প্রস্তাব দেন গ্যোটে - ও প্রত্যাখ্যাত হন৷
ছবি: picture alliance/dpa
এলটৎস ক্যাসল, জার্মানি
দুর্গের সবচেয়ে পুরনো অংশটি নবম শতাব্দীর৷ রাইনল্যান্ড প্যালেটিনেটে মোজেল নদীর উপকূলবর্তী পাহাড়ের কোলে, নদীবক্ষ থেকে ৭০ মিটার উঁচু শৈলশিরার উপর নির্মিত ক্যাসলটি গত ৩০ প্রজন্ম ধরে এলটৎস পরিবারের বিভিন্ন শাখার মালিকানায় রয়েছে৷ বিভিন্ন শতাব্দীতে দুর্গটি সারানো বা বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে এলটৎস ক্যাসলের নিজস্ব স্থাপত্যশৈলী সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/M. Norz
ভার্টবুর্গ ক্যাসল, জার্মানি
১০৮০ সালে ম্যার্জেবুর্গের বিশপ ব্রুনোর লিখিত একটি নথিতে ভার্টবুর্গ দুর্গের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়৷ ১৫২১ সালে প্রটেস্টান্ট গির্জার প্রতিষ্ঠাতা মার্টিন লুথার এই ভার্টবুর্গে আশ্রয় নেন এবং বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টকে গ্রিক থেকে জার্মানে অনুবাদ করেন৷