সুইডেনে শুধু শনিবারে মিষ্টি খাওয়ার রীতি
১৭ জুলাই ২০২৫
সুইডেনে শুধু শনিবার ক্যান্ডি খাওয়ার চল আছে৷ কয়েক দশক আগে শুরু হওয়া এই চল কি এখনও সেখানকার মানুষজন মেনে চলেন?
আর এই ব্যবসার অন্ধকার দিকগুলো কী কী? যুক্তরাষ্ট্রের এক সোশ্যাল মিডিয়া-হাইপ কীভাবে মিষ্টির ঘাটতি তৈরি করেছিল?
সুইডেনের সুপারমার্কেটগুলোতেও প্রচুর পরিমাণে ক্যান্ডি সংগ্রহে রাখা হয়৷
আর স্টকহোমে ক্যান্ডিপ্রিয়দের জন্য বিশেষ দোকান ক্যারামেলাতো আছেই৷ সেখানে পাঁচশো ধরণের ক্যান্ডি পাওয়া যায়: সব স্বাদ, রঙ আর আকারের৷ দোকানটি যেন পৃথিবীতে এক স্বর্গরাজ্য - অন্তত স্ভালব্রিং পরিবারের জন্য৷
গড়ে একজন সুইডিশ বছরে প্রায় ১৫ কেজি মিষ্টি খায়৷ তাদের অনেকেই শুধু শনিবারেই মিষ্টি কেনেন৷ এগুলো ‘লোরডাগসগুডিস' বা শনিবারের ক্যান্ডি নামে পরিচিত৷
ক্যারামেলা দোকানের কর্মী শেরিন শাকার জানান, ‘‘শনিবার এখানে খুব ভিড় থাকে৷ সেই সময় সব বাচ্চারা তাদের বাবা-মায়ের সাথে আসে৷ কিন্তু অনেক সময় শুক্রবারেও দোকানটি পূর্ণ থাকে৷ অনেকেই তখন এই আশায় মিষ্টি কেনেন যে, এগুলো দিয়ে তাদের সপ্তাহান্ত কেটে যাবে৷’’
‘লোরডাগসগুডিস' ধারণাটি মূলত ১৯৫০-এর দশকে সুইডিশ কর্তৃপক্ষ চালু করেছিল৷ এর লক্ষ্য ছিল মিষ্টি খাওয়া কমানোর মাধ্যমে দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা৷ সেই সময় একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে, চিনি দাঁতের ক্ষয় ঘটায়৷ কিন্তু ভিপাহোম পরীক্ষা - যার উপর ভিত্তি করে গবেষণাটি করা হয়েছিল - তা ছিল অত্যন্ত অনৈতিক৷
নরডিক যাদুঘরের কিউরেটর উলরিকা টোরেল জানান, ‘‘দক্ষিণ সুইডেনের এক মানসিক হাসপাতালে যেখানে রোগীদের খাদ্যাভ্যাসের উপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল, সেখানে মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি এবং চিনি দেওয়া হত৷ এটা বেশ কয়েক বছর ধরে করা হয়েছিল৷ লক্ষ্য ছিল, রোগীদের দাঁতের ক্ষয় হয়েছে কিনা তা খুঁজে বের করা৷ এবং ঠিক তাই হয়েছিল৷’’
লোরডাগসগুডিসের পেছনের ধারণা ছিল মিষ্টির ব্যবহার কমানো৷ কিন্তু আজও সুইডিশরা মিষ্টির প্রতি অনুরাগী৷
২০২৪ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রে সুইডিশ গুডিস সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয়, তখন হঠাৎই সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছিল৷
শেরিন শাকার জানান, ‘‘সুইডিশ ক্যান্ডি সম্পর্কে প্রায় এক বছর ধরে ঐ প্রচার চলছে৷ মূলত সুইডেনে তৈরি বুবস এর চাহিদা বেশি৷ আর সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি ব্যাপক প্রচারিত হওয়ায় কিছু জাতের ক্যান্ডি তখন পাওয়া যায়নি৷’’
ইয়েন্স ফন লার্শার/জেডএইচ