সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতমালায় পাঁচজন ক্রস-কান্ট্রি স্কিয়ারের মরদেহ পাওয়ার কথা সোমবার জানিয়েছে পুলিশ৷ প্রায় তিন হাজার ৭০৬ মিটার উচ্চতার টেট ব্লন্শ পর্বতের কাছে এসব মরদেহ পাওয়া যায়৷ ষষ্ঠ ব্যক্তির খোঁজ চলছে৷
বিজ্ঞাপন
আল্পস পর্বতমালা এলাকায় পর্যটনের জন্য বিখ্যাত সুইজারল্যান্ডের স্যার্মাট শহর থেকে রোববার ছয় ব্যক্তি স্কি টুরে বেরিয়েছিলেন৷ পরে তাদের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেলে তল্লাশি শুরু করে সুইজারল্যান্ডের ভালে ক্যান্টনের পুলিশ৷
খারাপ আবহাওয়া ও তুষারধসের ঝুঁকির কারণে তল্লাশি চালানো কঠিন হলেও পাঁচজনের মরদেহ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ৷ স্কিয়ারদের বয়স ২১ থেকে ৫৮-র মধ্যে বলে জানিয়েছে তারা৷
আল্পস পর্বতমালার অন্যতম উঁচু পর্বতের নাম মাটাহর্ন৷ চূড়ার উচ্চতা চার হাজার ৪৭৮ মিটার৷ সুইজারল্যান্ড ও ইটালি সীমান্তের মধ্যে অবস্থিত মাটাহর্ন দেখতে অনেকটা পিরামিডের মতো৷ এটি দেখতে প্রতিবছর অনেক পর্যটক সুইজারল্যান্ডের স্যার্মাট শহরে ভিড় জমান৷
জেডএইচ/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)
আল্পস ভ্রমণ – অতীত এবং বর্তমান
এ বছর গ্রীষ্মে একদল পর্যটক সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতচূড়া ভ্রমণে গিয়েছিলেন৷ ১৮৬৩ সালে প্রথম পর্বতারোহীরা যে পথ ধরে আল্পস-এ গিয়েছিলেন, সেই পথ ধরেই গিয়েছিলেন তাঁরা৷
ছবি: PHOTOPRESS/Anthony Anex/Tourism Switzerland
পূর্বসূরিদের পথ ধরে
১৮৬৩ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো একটি পর্যটন সংস্থা সুইজারল্যান্ডের আল্পস-এ একটি ভ্রমণের আয়োজন করেছিল৷ এ বছরের সুইস গ্র্যান্ড ট্যুর ২০১৩-তে একটি দল সেই সময়ের পথ ধরেই আল্পস ভ্রমণ করল৷ লিউকারবাড এবং কান্ডেরস্টেগের মধ্যকার গেমি পাস-এ দলটির অনেকে পর্বতারোহণও করেছে৷
ছবি: PHOTOPRESS/Anthony Anex/Tourism Switzerland
নোট নেয়া
সে সময়কার একজন পর্যটক মিস জেমিমা মোরেল ঐ ভ্রমণের পুরো বর্ণনা একটি ডাইরিতে লিপিবদ্ধ করেছিলেন৷ সেই ডায়রির বর্ণনা নতুন দলটিকে সাহায্য করেছে পথ বেছে নিতে৷ জেমিমা সেসময় ইংল্যান্ডের অনেক স্থান ভ্রমণ করলেও বিদেশে সেটাই ছিল তাঁর প্রথম ভ্রমণ৷
ছবি: Thomas Cook
সঠিক পোশাকে পর্বতারোহণ
১৮৬৩ সালের ২৬শে জুন ‘জুনিয়র ইউনাইটেড আল্পাইন ক্লাব’ লন্ডন ব্রিজ থেকে তাদের তিন সপ্তাহের যাত্রা শুরু করেছিল৷ এই ছবিতে বাম দিক থেকে তৃতীয় নারীটিই জেমিমা৷ জেমিমা মোরেলসহ তখনকার নারীরা ভিক্টোরিয়া-যুগের পোশাকে অভ্যস্ত ছিলেন এবং তাঁদের হাতে থাকত একটি করে ছাতা৷
ছবি: Thomas Cook
আধুনিক পর্যটন ব্যবস্থা
১৮৬৩ সালের ঐ ভ্রমণের মাধ্যমে আধুনিক পর্যটন ব্যবসা শুরু হয় বলে অনেকের ধারণা৷ ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ারের থমাস কুক ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে তাঁর পর্যটন সংস্থাটি প্রথম চালু করেন৷ সুইজারল্যান্ড পর্যটন কোম্পানিগুলো তখন কুকের সাথে ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী হয়৷ তিনি ব্যবসার চেয়ে আগ্রহী ছিলেন তাঁর প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পরিচিত করতে৷
ছবি: Thomas Cook
ভ্রমণের টিকেট
১৮৬৩ সালের আগেও কিছু পর্যটন সংস্থা ছিল, কিন্তু কুক তাঁর ভ্রমণে এমন কিছু বিষয় জুড়ে দিলেন, যাতে তা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠল৷ যেমন রেল, বাস কোম্পানিগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তাঁর কোম্পানির সাথে যুক্ত করা৷ বিদেশের হোটেল বুকিং-এমন অনেক কিছু যুক্ত করেছিলেন কুক, যা পর্যটন ব্যবসায় একেবারেই নতুন ছিল৷
ছবি: Thomas Cook
গাইডস এবং ট্রাভেলারস চেক
এখানে যেমন দেখা যাচ্ছে – এ ধরনের ভ্রমণ বই দিয়ে প্রথমদিকে বেশ কিছু অর্থ উপার্জন করেছিলেন কুক৷ সেখানে থাকত ট্রেনের টাইমটেবিল৷ সেইসাথে তিনি ট্রাভেলারস চেকও আবিষ্কার করেছিলেন৷
ছবি: Thomas Cook
দরিদ্র কিন্তু সুন্দর
১৮৬০ সালে সুইরজারল্যান্ডের অবস্থা আজকের মতো এত ভালো ছিল না৷ অর্থাৎ, অর্থনীতির দিক দিয়ে দেশটি ছিল দরিদ্র৷ মোরেল তাঁর ডাইরিতে সুইজারল্যান্ডের গ্রামগুলোর তখনকার চিত্র তুলে ধরেছেন৷ কিন্তু কুকের পর্যটন সংস্থা সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে, বিশেষ করে সুইস আল্পসকে৷
ছবি: PHOTOPRESS/Anthony Anex/Tourism Switzerland
আল্পসের স্বর্ণযুগ
সুইজারল্যান্ডে কুকের পর্যটন ব্যবসা সেদেশে পর্বতারোহণকে জনপ্রিয় করে তোলে৷ এ কারণে সেই সময়টাকে আল্পসে পর্বাতারোহণের স্বর্ণযুগ বলা হয়৷ অনেক ব্রিটিশ পর্বতারোহী সুইস আল্পসে প্রথমবারের মতো আরোহন করেছিলেন৷ এডওয়ার্ড উইম্পার তাঁদেরই একজন, যিনি আল্পস পর্বত চূড়ায় প্রথম উঠেছিলেন ১৮৬৫ সালে৷