1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুইস গরুর শিং নিয়ে গুঁতোগুঁতি

২২ ডিসেম্বর ২০১৭

গরুর শিং থাকা উচিত, না আগেই কেটে দেওয়া উচিত? সুইজারল্যান্ডে কৃষকদের মধ্যে এই নিয়ে চরম বিতর্ক চলছে৷ এক কৃষকের উদ্যোগে এই প্রশ্নে গণভোট আয়োজিত হতে চলেছে৷ প্রকৃতির গণ্ডির মধ্যেই কৃষিকাজ চান তিনি৷ 

Symbolbild BSE Wales
ছবি: picture alliance / blickwinkel/K. Fitzmaurice-Brown

কখনোই মানিয়ে নেবার চেষ্টা করেননি৷ সবসময়ে নিজের পথেই চলেছেন৷ আরমিন কাপাউল বরাবরই গতানুগতিক ধ্যান-ধারণা ভেঙে এসেছেন৷ একবার কোনো লক্ষ্য স্থির করলে তিনি কাজটা করেই ছাড়েন৷ যেমন তাঁর মতে, গরুর শিং থাকা উচিত৷

জন্মের সময়ে তা থাকলেও সুইজারল্যান্ডের প্রতি ১০টি বাছুরের মধ্যে ৮টির শিং পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে সেগুলি বড় হতে না পারে৷ পশুদের জন্য সেই প্রক্রিয়া প্রায়ই বড় কষ্টকর হয়৷ আরমিন মনে করেন, এই রীতি পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘সৃষ্টিকর্তা গরুদের শিং দিয়েছেন, তাই আমার কাছে সেগুলি সেই প্রাণীরই সম্পত্তি৷ নাকি এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে?'' 

গরুর শিং থাকলে ক্ষতি কি?

04:02

This browser does not support the video element.

সুইজারল্যান্ডের গরুদের শিং ফিরিয়ে দিতে তিনি তাই এক উদ্যোগ শুরু করেছেন৷ প্রথম কয়েক বছর ধরে তিনি অনুরোধ-উপরোধ, আবেদন-নিবেদন করে চেষ্টা চালিয়েছেন৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতারা তাতে কর্ণপাত করেন নি৷ তারপর তিনি ‘গরুর শিং' নামের এক উদ্যোগ শুরু করেন এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে দেড় লক্ষেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন৷ সুইস আইন অনুযায়ী গণভোট আয়োজনের জন্য যত স্বাক্ষরের প্রয়োজন, এই সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি৷ 

কয়েক মাসের মধ্যে ৫০ লক্ষেরও বেশি সুইস ভোটার এই প্রশ্নে তাঁদের রায় জানাতে পারবেন৷ আরমিন তাঁর অবস্থানের পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন পাবেন, এমন সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে৷ সরকার, সংসদ ও কৃষক সংগঠন অবশ্য আরমিন-এর উদ্যোগের বিরোধিতা করে চলেছে৷ সুইস গবাদি পশুপালক সংগঠনের আন্দ্রেয়াস আয়েবি বলেন, ‘‘গরুর শিং থাকবে কিনা, এমন বিষয় সংবিধানে স্থান পাবে – এটা হতে পারে না৷ আমাদের চারিদিকে এই গরুগুলিকে দেখুন৷ তারা কত নীরব ও শান্ত৷ তাদের কোনো অভাব আছে, আমি সেটা বিশ্বাস করি না৷ আবার শিং-যুক্ত গরুর আবির্ভাব ঘটলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাবে৷'' 

শিংয়ের কারণে আহত হবার আশঙ্কার গল্পকে অমূলক বলে মনে করেন আরমিন৷ তিনি বরং নিজের গোয়ালের গল্প বলতে ভালোবাসেন৷ তাঁর মতে, গরুরা শিংয়ের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে৷ তিনি বলেন, ‘‘শিংয়ের মাথা দিয়ে সে চোখের ময়লা দূর করেছে৷ এক গরু শিং স্থির রেখেছে, অন্যটি তা কাজে লাগিয়েছে৷''

আরমিন জানেন, তিনি গরুর শিং কাটা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করাতে পারবেন না৷ রসিকতা করে তিনি বলেন, সে ক্ষেত্রে কিছু চাষি তাঁর গোয়ালে আগুন ধরিয়ে দেবেন৷ বরং যে সব চাষি শিং কাটেন না, তাঁদের জন্য আর্থিক সাহায্য চান তিনি৷ কারণ শিং-যুক্ত গরুদের গোয়ালে বেশি জায়গা লাগে৷

বিরোধীদের মতে, আরমিন-এর উদ্যোগের ফলে ৩ কোটি সুইস ফ্রাঁ ব্যয় হবে৷ আন্দ্রেয়াস আয়েবি বলেন, ‘‘এই টাকা কোথা থেকে আসবে? চাষবাসের ব্যয়ের মধ্য থেকেই সেই টাকা বার করতে হবে৷ সরকারি ভরতুকির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে৷ অর্থাৎ কৃষিকাজের মধ্যে আবার অসন্তোষ দেখা দেবে৷'' 

শিং নিয়ে এই বিবাদের মূলে রয়েছে ভিন্ন ধারার প্রকৃতিসম্মত কৃষি নীতি৷ আরমিন সেই লক্ষ্যে আরও সংঘাতের জন্য প্রস্তুত৷ আপাতত গণভোটের প্রচারের জন্য তাঁর অর্থের প্রয়োজন৷ স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযানের জন্য তিনি নিজের অর্থ ব্যয় করেছেন৷ এবার তাঁর স্ত্রী গণভোটের জন্য অর্থ ব্যয় করতে দিচ্ছেন না৷

ফাইট-উলরিশ ব্রাউন/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ