সুদানে সামরিক সরকার ও বিক্ষোভকারীদের আলোচনা বাতিল
২২ এপ্রিল ২০১৯
দীর্ঘ প্রতিবাদের মুখে তিন দশক পর অবশেষে ক্ষমতাচ্যুত হলেন সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির৷ দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দাবিতে পথে নামা জনতা বর্তমানে ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক সরকারের সাথে সংলাপও বন্ধ রেখেছে৷
বিজ্ঞাপন
সুদানে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দাবিতে এখনো রাস্তায় আন্দোলন করছেন সাধারণ মানুষ৷ অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক সরকার জানিয়েছে যে, এখনই নির্বাচন করা যাবে না৷ এর ফলে, আন্দোলনকারীরা আরো জোরদার আন্দোলনের আভাস দিচ্ছেন৷
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাইরে একটি সভায় জনতার পক্ষে প্রতিবাদী জনতার প্রতিনিধি মোহামেদ আল আমিদ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক সরকারের সাথে সব রকমের সংলাপ তাঁরা বাতিল করেছেন৷
শুধু তাই নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাঁরা দেখছেন ক্ষমতাচ্যুত আল-বশিরের সরকারের প্রতিরূপ হিসেবে৷ সুতরাং, যতদিন না দেশ পরিচালনার ক্ষমতা নাগরিক কাউন্সিলের হাতে তুলে দেওয়া হয়, ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা, জানিয়েছেন আল আমিদ৷
প্রস্তাবের অপেক্ষায় সামরিক সরকার
সুদানে ক্ষমতা বর্তমানে সামরিক বাহিনীর হাতে৷ নতুন সেনা প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান রবিবার জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা আন্দোলনরতদের দাবির উত্তর দেবেন৷ সব রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মতামতকে মাথায় রেখে একটি নাগরিক কাউন্সিল গঠনের কথা বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
শান্তি চুক্তি হলেও ঘরে ফিরছেন না তাঁরা
দক্ষিণ সুদানের সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সম্প্রতি একটি শান্তি চুক্তি সই হয়েছে৷ তবুও ঘরে ফেরার সাহস পাচ্ছেন না দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ছেড়ে যাওয়া বাসিন্দারা৷
ছবি: Reuters/B. Ratner
নতুন দেশ
২০১১ সালে সুদান থেকে পৃথক হয়ে স্বাধীন একটি দেশ হিসেবে দক্ষিণ সুদানের যাত্রা শুরু হয়৷ কিন্তু মাত্র দুই বছর পরই দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও তখনকার ভাইস-প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাচারের মধ্যে বিবাদের পর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়৷
ছবি: Reuters
শান্তিচুক্তি
সম্প্রতি সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি সই হয়েছে৷ গৃহযুদ্ধে কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/M. Hjaj
তবে ভয় কাটেনি
দক্ষিণ সুদানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মালাকাল৷ গৃহযুদ্ধের কারণে সেখানকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে শহরের কাছে স্থাপিত জাতিসংঘের শিবিরে বাস করছেন৷ শান্তিচুক্তি হলেও তারা এখনো বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না৷
ছবি: Reuters/B. Ratner
মৃত্যুর ভয়
জোসেফিন আদিমিস নামের এক নারী তাঁর পরিবারের আট সদস্যের সঙ্গে জাতিসংঘের ঐ শিবিরে থাকেন৷ তিনি বলছেন, চুক্তি হলেও তিনি এখনো ফিরতে চান না, কারণ, তাঁর আশংকা কেউ তাঁর বাড়ি দখল করে আছে৷ ফলে বাড়িতে গেলে তারা তাঁকে মেরে ফেলতে পারে৷
ছবি: Reuters/B. Ratner
মালাকালে যুদ্ধ
গৃহযুদ্ধের সময় এলাকাটি একেকবার এক পক্ষের নিয়ন্ত্রণে ছিল৷ ফলে শহরটির প্রায় পুরোটা ধ্বংস হয়ে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Lynch
বসবাসের অনুপযুক্ত
কয়েক বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে শহরের অবকাঠামো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে৷ যেমন, স্কুলের এই শ্রেণিকক্ষটি৷
ছবি: Reuters/B. Ratner
ব্যস্ততা নেই
মালাকাল একসময় ব্যস্ত বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল৷ সেখান থেকে সুদানে মালপত্র রপ্তানি করা হতো৷ কিন্তু যুদ্ধ সেই ব্যস্ততা কেড়ে নিয়েছে৷ এখন জাতিসংঘের শিবিরের কাছে ব্যস্ত বাজার গড়ে উঠেছে৷ ফলে নীল নদের মাছ মালাকালে না গিয়ে জাতিসংঘের বাজারেই যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/B. Ratner
উৎসাহ
দেশটির আপার নীল অঞ্চলের তথ্যমন্ত্রী ঘরছাড়া মানুষদের তাঁদের বাড়িতে ফিরে যেতে উৎসাহ দিচ্ছেন৷ তিনি তাঁদের বলছেন, মালাকালে এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে৷ ফলে সেখানকার সবকিছু ঠিকঠাক চলছে বলে দাবি করেন তিনি৷
ছবি: Reuters/B. Ratner
8 ছবি1 | 8
আল বুরহান আরো জানান, প্রতিবাদী জনতার কাছে কাউন্সিল সদস্যদের প্রস্তাবিত নামের তালিকা তাঁরা চেয়েছেন৷ কিন্তু নাগরিক কাউন্সিলে যাতে একজন সেনা প্রতিনিধি থাকে, সেই বিষয়টির ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি৷
এদিকে, সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে বিক্ষোভরতদের একাংশ এখনো সন্দিহান৷
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, এই সামরিক সরকারের সাথে ক্ষমতাচ্যুত আল বশিরের সরকারের খুব একটা পার্থক্য নেই৷