পশ্চিম সুদানে একটি বেসরকারি সোনার খনিতে ধস নামে। এই সোনার খনিটি খার্তুম থেকে পাঁচশ কিলোমিটার পশ্চিমে। খনির নাম দারসায়া মাইনস।
এখনো পর্যন্ত যা জানা গেছে
সুদানের মিনারেল রিসোর্স কোম্পানির প্রধান জানিয়েছেন, বেশ কিছু খনি শ্রমিক আহত। ভয়ংকর ধসের ফলে এতজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সংবাদসংস্থা এপি স্থানীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, অন্তত ৩৮ জন মারা গেছেন এবং আটজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
সামাজিক মাধ্যমে দেয়া ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের মানুষ মাটি সরানোর যন্ত্রপাতি নিয়ে ভিড় করেছেন এবং তারা মাটি সরিয়ে মৃত ও আহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া মৃতদের কবর দেয়ার কাজও শুরু হয়েছে।
সোনার খনির জন্য বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা৷ সেখানকার সিবান্যে অঞ্চলের একটি খনিতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন হাজারেরও বেশি শ্রমিক৷ শেষপর্যন্ত তাঁদের সকলকেই উদ্ধার করা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/Balance/Photoshot/P. B. Pickford বুধবার খনিতে কাজ করতে নেমে আটকে পড়েন হাজারেরও বেশি শ্রমিক৷ মূলত ধস নামার কারণেই বন্ধ হয়ে যায় সুরঙ্গ৷ প্রাথমিকভাবে বহু চেষ্টা চালিয়েও শ্রমিকদের উদ্ধার করা যায়নি৷ খনির সামনে চলে আসে অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দল৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Guerciaসার্চলাইট লাগানো হয় খনি অঞ্চলে৷ উদ্ধারকারীরা দিনরাত শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে থাকেন৷ বাইরে থেকে খনির ভিতর অক্সিজেন পাঠানোর কাজও শুরু হয়৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত শ্রমিকদের বাঁচানো যাবে কিনা,তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়৷
ছবি: Getty Images/G.Guerciaঅবশেষে শ্রমিকদের উদ্ধার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ একজন একজন করে শ্রমিক বদ্ধ খনি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন৷ অনেকের অবস্থাই তখন ভয়াবহ৷ দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Joeমোটামুটি সুস্থ শ্রমিকদের তোলা হয় একটি বাসে৷ সেখানে তাঁদের জল এবং খাবার দেওয়া হয়৷ সকলের চোখে-মুখে তখনো আতঙ্ক৷
ছবি: Getty Images/G.Guerciaপ্রায় এক হাজার জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সহজ কথা নয়৷ প্রথমে কয়েকশ’ শ্রমিককে উদ্ধার করার পর উদ্ধারকারীরা নেমে পড়েন সুরঙ্গে৷ নিকশ অন্ধকারে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার উদ্ধার কাজ৷
ছবি: Reuters/M. Hutchingsদীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে জানানো হয়, সমস্ত শ্রমিককে উদ্ধার করা গিয়েছে৷ কিন্তু কীভাবে এই বিপর্যয় ঘটল, তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি৷ সাময়িক কাজ বন্ধ থাকলেও, উদ্ধার কাজ শেষ হলে খনি থেকে সোনা তোলার কাজ ফের শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: picture-alliance/Balance/Photoshot/P. B. Pickford একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই খনিতেই জানুয়ারিতে চারজন মারা গেছিলেন। দুর্ঘটনার পর সরকার খনি বন্ধ করে দেয় এবং নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করে। কয়েক মাস আগে নিরাপত্তারক্ষীরা চলে যায়।
কেন সোনার খনিগুলি নিরাপদ নয়?
সুদান হলো বিশ্বের গরিব দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। এক দশক আগে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকার পর খনি থেকে সোনা তোলার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। সুদানে প্রায় ২০ লাখ মানুষ সোনার খোঁজ করতে থাকেন। তারা হামেশাই আধা-আইনি খনিতে কাজ করতে থাকেন। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এভাবেই সুদানে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ সোনা তোলা হয়। ২০২০ সালে সুদানে ৩৬ দশমিক ছয় টন সোনা তোলা হয়েছিল।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)