ব্রিটিশ সরকারের ফরমায়েশি একটি রিপোর্টে সুপারবাগদের ভবিষ্যৎ দৌরাত্ম্যের যে ছবি তুলে ধরা হয়েছে, তা ভীতিকর৷ ২০৫০ সাল থেকে বছরে এক কোটি মানুষ প্রাণ হারাবে সুপারবাগ ইনফেকশনে, যদি কিছু করা না হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Becker
বিজ্ঞাপন
রিপোর্টটির নাম হলো ‘রিভিউ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্স'৷ রিপোর্টটি সেই ধরনের সব ‘সুপারবাগ'-দের নিয়ে, প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে যাদের কাবু করা যায় না; যার ফলে ছোটখাটো ইনফেকশন থেকেও রোগীর প্রাণসংশয় ঘটতে পারে, বড় বড় অপারেশনের তো কথাই নেই৷ এমনকি সন্তানের জন্মদান প্রসূতির পক্ষে অতীতের মতোই একটা মরণ-বাঁচনের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে, কেননা কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না৷
মনে রাখা দরকার,গত শতাব্দীর আশির দশকের পর আর কোনো নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়নি৷ অপরদিকে পশুপালনে যেমন অ্যান্টিবায়োটিক্সের ব্যবহার বেড়েছে, তেমনই ডাক্তাররাও যে কোনো ইনফেকশনে কারণে-অকারণে – যেমন ভাইরাল ইনফেকশনে – অ্যান্টিবায়োটিক্স প্রেসক্রাইব করার ফলে সাধারণ জীবাণুগুলো অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্স বা এএমআর, অর্থাৎ ওষুধ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছে৷ ২০১৪ সালের মাঝামাঝি যাবৎ দশ লাখ মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক্স প্রতিরোধী জীবাণুর প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছে, বলে জানাচ্ছে এই রিপোর্ট৷
কাঁচা মাছ-মাংস থেকে সাবধান!
সুপারবাগ বা ব্যাকটিরিয়া আপনার বাড়িতেই ঘাঁটি গাড়তে পারে৷ শুধুমাত্র পঁচা বা বাসি কোনো বস্তু থেকে নয়, বাজার থেকে আনা কাঁচা মাংস থেকে হতে পারে এই সুপারবাগ৷ এ সব ব্যাকটিরিয়ার সাথে কীভাবে মোকাবিলা করবেন জেনে নিন ছবিঘর থেকে৷
ছবি: Colourbox
মাংসের দোকান থেকে বাড়িতে
বাজারে যে কাঁচা মাংস বিক্রি হয় তাতে ব্যাকটিরিয়া থাকতে পারে৷ তাই এ থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হলে ব্যাকটিরিয়াগুলো মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়৷ ফলে মানুষ সহজেই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়৷
ছবি: Colourbox
হিমায়িত খাবার
ফ্রিজে দীর্ঘদিন ধরে বেশি মাংস সংরক্ষণ করা উচিত না৷ কেননা যে তাপমাত্রায় অল্প মাংস রাখা উচিত, সে তাপমাত্রায় বেশি পরিমাণ মাংস সংরক্ষণ করলে রান্না করার সময় ব্যাকটিরিয়া মরে যাওয়ার বদলে গাণিতিক হারে তা বৃদ্ধি পেতে থাকে৷
ছবি: Colourbox
সঠিক আসবাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে বোর্ডে সবজি বা মাংস কাটা হয় সেটি কাচের হলে ভালো৷ প্লাস্টিক বা কাঠের বোর্ড থেকে সহজেই ব্যাকটিরিয়া অন্য খাবারে চলে যায়৷
ছবি: picture-alliance/L. Halbauer
কাঁচা দ্রব্যের জন্য আলাদা যন্ত্র
কাঁচা মাংস, মাছ, সবজি বা সালাদের জন্য আলাদা বাসন-পত্র ব্যবহার করা উচিত৷ রান্না হলে জীবাণুগুলো যেমন মরে যায়, তেমনই কাঁচা খাবার থেকে ছড়িয়ে পড়া ব্যাকটিরিয়া সুপার ব্যাকটিরিয়ার পরিণত হয়৷ আসলে এ সব খাবার রান্নার পর আবারো যদি কাঁচা খাবার নাড়ার কোনো আসবাব দিয়ে খাবার নাড়া-চাড়া করা হয়, তবে ব্যাকটিরিয়া রান্না করা খাবারে প্রবেশ করে৷
ছবি: Colourbox
খাবার সঠিকভাবে রান্না করা
বেশিরভাগ জীবাণু ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াম তাপামাত্রায় মরে যায়৷ তাই কাঁচা মাংস সঠিকভাবে রান্না করা হয়েছে কিনা, তা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে৷ মাইক্রোওয়েভে রান্না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব জীবাণু মরে যাবে কিনা তার কিন্তু কোনো নিশ্চয়তা নেই৷
ছবি: Colourbox
হাত ধোয়া
রান্নার আগে এবং পরে গরম পানি এবং সাবান দিয়ে হাত ভালো করে ধোয়া উচিত৷ এছাড়া মাছ, মাংস কাটা এবং ডিম ফাটানোর পর সাথে সাথে হাত ভালো করে ধোয়া জরুরি৷ তা না হলে গ্লাভস ব্যবহার করলে ভালো হয়৷
ছবি: Colourbox
পরিষ্কার রাখা
রান্না ঘরের বাসন-পত্র ও আসবাব গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত৷ এছাড়া কাঁচা মাছ, মাংস যেসব বাসনে রাখা হয়েছিল, সেগুলো ডিশওয়াশারের ভেতর ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ধোয়া অত্যন্ত জরুরি৷
ছবি: Colourbox
7 ছবি1 | 7
রিপোর্টটির দায়িত্বে ছিলেন গোল্ডম্যান স্যাক্স কোম্পানির সাবেক অর্থনীতিবিদ জিম ও'নিল, যিনি উত্থানশীল দেশগুলিকে ‘‘ব্রিক'' আখ্যা দেবার জন্য খ্যাত৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ওনিল-কে এএমআর সুপারবাগ থেকে বিশ্বব্যাপি ঝুঁকির ব্যাপারটা তলিয়ে দেখতে বলেন৷ ওনিল-এর উত্তর হলো, বিষয়টিকে একটি অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাগত ঝুঁকি হিসেবে গণ্য করা প্রয়োজন, যা কিনা ‘‘সন্ত্রাসবাদের মতোই একটা বড় ঝুঁকি''৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন ডাবলিউএইচও ইতিপূর্বেই সাবধান করে দিয়েছিল যে, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টান্সের ফলে বিশ্ব প্রাক-অ্যান্টিবায়োটিক যুগে ফিরে যেতে পারে৷ ওদিকে মুশকিল এই যে, অ্যান্টিবায়োটিকের যে কোনো ধরনের ব্যবহারই সুপারবাগগুলির বিকাশ ও বিস্তার বাড়াতে পারে৷
জিম ও'নিল-এর নেতৃত্বাধীন গবেষক দল বিষয়টি নিয়ে দেড় বছর চর্চা করার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, একদিকে যেমন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমানো উচিত, অন্যদিকে তেমন নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন৷ নয়ত রিপোর্টে যে দশটি ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে যেমন একটি বিশ্বব্যাপী সচেতনতা কর্মসূচি পড়ে, তেমনি পড়ে বিশুদ্ধ পানীয় জল, সাধারণ স্বাস্থ্যবিধান ও হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা৷ অ্যান্টিবায়োটিক্স ব্যবহারের চেয়ে টিকাদানের উপরও বেশি জোর দেওয়া যেতে পারে৷
জীবাণুমুক্ত থাকার ১৩টি উপায়
আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে নানা জীবাণু, যা আমরা হয়ত লক্ষ্যই করি না৷ এ সবই কি মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার একটা বড় কারণ? একটু সচেতন হয়ে কিভাবে এই সব জীবাণু থেকে নিজেকে দূরে রেখে সুস্থ থাকবেন – তারই কিছু উপায় পাবেন এখানে৷
ছবি: vsurkov/Fotolia
হাত ধোয়া
গাড়ি, রিক্সা, কোনো কিছুর দরজা বা হ্যান্ডেল সাধারণত আমরা হাত দিয়েই ধরি৷ অথচ সেগুলোতে কতজন হাত দিয়েছে, তার কোনো ঠিক নেই৷ তার ওপর বাতাসেও ছড়িয়ে নানা জীবাণু৷ তাই বাইরে থেকে এসে প্রথমেই খুব ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলা প্রয়োজন৷ তা না হলে বাইরের জীবাণুগুলো খুব সহজেই ঢুকে পড়তে পারে আপনার শরীরে৷
ছবি: bilderbox
কম্পিউটার
আজকের দিনে প্রায় সব জায়গাতেই রয়েছে কম্পিউটারের ব্যবহার৷ চাকরির প্রয়োজনে যাঁদের ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয়, তাঁদের জন্য পরামর্শ – কাজ শুরুর আগে হাত দুটো ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’ দিয়ে মুছে নেবেন এবং কাজ শেষ হওয়ার পর ঐ একই পদ্ধতিতে হাত পরিষ্কার করে ফেলবেন৷ এছাড়া বাড়িতে ঢুকেও প্রথম কাজ হতে হবে ভালো করে হাত মুখ ধুয়ে ফেলা৷
ছবি: Fotolia/fotek
রান্নাঘর
রান্নাঘরেই লুকিয়ে থাকতে পারে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জীবাণু৷ কাঁচা মাংস কাটার পর সেই কাটিং বোর্ডে অন্য কিছু কাটাকাটি করা হলে, যা তার সংস্পর্শে আসবে, তাতেই মাংসের জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ তাই কাঁচা মাছ, মাংস কাটার জন্য আলাদা বোর্ড ব্যবহার করুন৷ আর তা ব্যবহারের পর বোর্ড, ছুড়ি, দা এবং অবশ্যই হাত দুটো ভালো করে ধুয়ে ফেলুন৷ এছাড়া রান্নাঘরের কাঁচা আবর্জনা পরিষ্কার করুন প্রতিদিন৷
ছবি: Fotolia/industrieblick
বাথরুম
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বেশিরভাগ বাড়িতেই বসার ঘর কিংবা শোবার ঘর যতটা পরিষ্কার বা সুন্দর করে সাজানো থাকে, রান্নাঘর বা বাথরুমের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা দেখা যায় না৷ অথচ বাথরুম এবং রান্নাঘরই হচ্ছে জীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা৷ তাই বাথরুম সব সময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখুন৷ তার সঙ্গে ব্যবহৃত টয়লেট পেপার বা কসমেটিক পেপার সহ সব ময়লা নিয়মিত সরিয়ে ফেলুন৷
ছবি: Fotolia/Pixelwolf
ব্যবহৃত যে কোনো ব্রাশ
রান্নাঘর, বাথরুম অথবা বাড়ির অন্য কোনো ঘরই বলুন, সেই সব জায়গা পরিষ্কার বা মোছার জন্য ব্যবহার করা ব্রাশটিতে কিন্তু থাকে অসংখ্য জীবাণু৷ তাই ব্রাশগুলো ব্যবহারের পর প্রতিবারই ধুয়ে এবং পানি চিপে ফেলে দিয়ে পরেরবার ব্যবহারের জন্য রেখে দিন৷ এছাড়া মাসে অন্তত একবার পুরনো ব্রাশ ফেলে দিয়ে নতুন ব্রাশ কিনে আনুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টুথ ব্রাশ
দাঁত মাজার ব্রাশের ভেতরও জমে থাকতে পারে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া৷ তাই সময়মতো, অর্থাৎ মাসে অন্তত একবার টুথব্রাশ পরিবর্তন করা উচিত৷ তা না হলে নিজের ব্রাশের জীবাণুই আবারো নিজেরই ক্ষতি করতে পারে৷ এছাড়া ‘‘প্রতিবার ব্যবহারের পর টুথব্রাশটি গরম পানি দিয়ে ধুয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি৷’’ একথা বলেন কোলন শহরের দাঁত বিশেষজ্ঞ ডা. আইকার৷
ছবি: imago/CTK/CandyBox
ঘরের ভেতরের গাছের পানি
অনেকেই সখ করে ঘরে গাছ লাগিয়ে থাকেন৷ এ সব গাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি দেওয়া হলে, তা জমে জীবাণুর জন্ম হয়, যা কিনা সে’সব জায়গায় বসা মশা, মাছি বা পোকামাকড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে৷
ছবি: picture alliance/dpa
ইনজেকশনের সিরিঞ্জ
নানা কারণেই মানুষকে ইঞ্জেকশন দিতে হয়৷ তবে ইনজেকশন দেওয়ার আগে অবশ্যই পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত সিরিঞ্জটি নতুন কিনা৷ কারণ সিরিঞ্জটি আগে যে ব্যবহার করেছেন, তাঁর কোনো ছোঁয়াচে রোগ থাকলে এর মধ্য দিয়ে অন্য আরেকজন আক্রান্ত হতে পারেন সহজেই৷ বলা বাহুল্য, এইচআইভি ভাইরাসের মতো বিপজ্জনক ভাইরাসও কিন্তু এভাবে ছড়াতে পারে৷
ছবি: Fotolia
বাতাসে জীবাণু ছড়ায়
সার্দি-কাশি বা হাঁচিতে জীবাণু ছড়ায় – সেকথা কম-বেশি আমরা অনেকেই জানি৷ তাই এ ধরণের রোগীদের থেকে খানিকটা দূরে থাকাই ভালো৷ এ সব অসুখ ছড়ায় সাধারণত, বাস, ট্রেন, মিটিং, মিছিল বা সেই সব জায়গায় যেখানে অনেক মানুষের যাতায়াত৷ যাঁরা শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল বা যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁরা সহজেই এভাবে আক্রান্ত হয়ে পরতে পারেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
পানি
পানির আরেক নাম জীবন৷ পানি পান করা ছাড়াও প্রায় সব কাজেই প্রয়োজন হয় পানির৷ তবে যে কোনো জায়গার পানি পান না করাই ভালো৷ পানি বাহিত রোগের কথা কে না জানে? তাই প্রয়োজনে এক বোতল ফুটন্ত পানি বাড়ি থেকে সাথে নিয়ে বের হন৷ অথবা পথেই ‘মিনারেল ওয়াটার’-এর বোতল কিনে নিন৷ গোসলের সময়ও লক্ষ্য রাখা উচিত যাতে পানি পেটে না চলে যায়৷
ছবি: Fotolia/photo 5000
সতর্কতা
জীবাণু সম্পর্কে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই সতর্ক করে দেওয়া উচিত৷ বিশেষ করে, অন্য কোথাও টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই হাত ধোয়া উচিত, সেই ছোট থেকেই৷ বাইরের খাবারের ব্যাপারেও ভলোভাবে সতর্ক হওয়ার কথা শিশুদের বুঝিয়ে বলতে হবে৷ আর সতর্ক না হলে তার ফল যে ভয়ংকর হতে পারে – সেটারও একটা ধারণা দেয়া উচিত সেই ছোটবেলাতেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাস্তার খাবার
রাস্তা বা ফুটপাথে মজার মজার লোভনীয় খাবারের দোকানগুলো আমাদের কেমন যেন হাতছনি দিয়ে ডাকে৷ তাই না? কিন্তু খাবারগুলো লোভনীয় হলেও এ সব থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা উচিত৷ বাইরে খোলা অবস্থায় রাখা খাবারগুলোয় মাছি, ধুলোবালি পড়ে৷ অনেকক্ষণ আগে কেটে রাখা ফল বা সালাদ তো একেবারেই খাওয়া উচিত নয়৷ তবে ফুটন্ত বা রান্না করা খাবার গরম অবস্থায় খাওয়া যেতে পারে৷
ছবি: dapd
ভ্রমণ
অনেককেই দেখা যায় ভ্রমণ বা বেড়ানোর পর ফিরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ এর কারণ নিয়ে কি কেউ খুব বেশি মাথা ঘামায়? জায়গা, পরিবেশ, খাবার সবই তো ছিল ভিন্ন৷ বিশেষ করে দূরে কোথাও গেলে তা এ কথা বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যায়৷ কাজেই বেড়াতে গেলে ছোট থেকে বড় সবারই বিশেষভাবে সতর্ক থাকা উচিত৷
ছবি: vsurkov/Fotolia
13 ছবি1 | 13
নতুন অ্যান্টিবায়োটিক শুধু আবিষ্কার করলেই চলবে না – সবচেয়ে বড় কথা, এই নতুন অ্যান্টিবায়োটিক সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার না করে, ‘আপৎকালীন অবস্থার' জন্য রেখে দিতে হবে৷ অর্থাৎ অন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক যখন কাজ করছে না, তখন এই আনকোরা নতুন অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হবে৷ এক্ষেত্রে সমস্যা এই যে, ভেষজ কোম্পানিগুলি যদি এই নতুন অ্যান্টিবায়োটিক বাজারে ছাড়তে না পারে, বিক্রি না করতে পারে, তাহলে তারা সেই অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করতে যাবে কেন?
কাজেই ও'নিল ও তাঁর সতীর্থদের রিপোর্টের একটি মূল প্রস্তাব হল, অ্যান্টিবায়োটিক্স সংক্রান্ত প্রাথমিক গবেষণার জন্য একটি দুই বিলিয়ন ডলারের ‘গ্লোবাল ইনোভেশন ফান্ড' সৃষ্টি করা হোক৷ এছাড়া ভেষজ কোম্পানিগুলিকে তাদের আবিষ্কৃত প্রতিটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের জন্য এক বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে৷ টাকার অঙ্কগুলো বেশি শোনালে মনে রাখতে হবে, রিপোর্টই বলেছে যে, ২০৫০ সালের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর কারণে বিশ্বের অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়াবে বছরে ১০০,০০০,০০০,০০০,০০০ ডলার৷
এসি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)
২০৫০ সাল থেকে বছরে এক কোটি মানুষ প্রাণ হারাবে সুপারবাগ ইনফেকশনে – বিশ্বাস করেন?
যেগুলো ‘টয়লেট সিট’-এর চেয়েও নোংরা
আপনি হয়ত ভাবছেন ‘টয়লেট সিট’ এই সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়ার বাস৷ কিন্তু গবেষণা বলছে অন্য কথা৷ ছবিঘরে থাকছে বিস্তারিত৷
ছবি: Colourbox
মোবাইল ফোন ও ট্যাবলেট
ব্রিটিশ ওয়াচডগ ‘হুইচ?’ ২০১৩ সালে ৩০টি ট্যাবলেট, ৩০টি মোবাইল ফোন এবং ৩০টি টয়লেট সিট পরীক্ষা করে দেখেছে, ট্যাবলেট আর মোবাইল ফোনে টয়লেট সিটের তুলনায় অনেক বেশি জীবাণু পাওয়া গেছে৷ ট্যাবলেটে পাওয়া ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ ছিল ৬০০ ইউনিট আর মোবাইল ফোনে ১৪০ ইউনিট৷ অন্যদিকে, টয়লেট সিটে ২০ ইউনিটেরও কম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে৷
ছবি: Robert Kneschke - Fotolia.com
পানির কল
বাথরুমে থাকা পানির কলে টয়লেট সিটের তুলনায় ২১ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে৷ আর রান্নাঘরের পানির কলেতো সেই সংখ্যা আরও বেশি, প্রায় ৪৪ গুণ! সুতরাং সবসময় বেসিন পরিষ্কার রাখুন, প্রয়োজনে জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন৷
ছবি: CWindemuth/Fotolia
হাতব্যাগ
ব্রিটিশ কোম্পানি ‘ইনিশিয়াল ওয়াশরুম হাইজিন’-এর গবেষণায় দেখা গেছে নারীদের ব্যবহৃত হাতব্যাগ নাকি টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে! গড়পড়তা একটি ব্যাগে টয়লেট সিটের চেয়ে তিনগুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে৷ আর যে ব্যাগ নিয়মিত ব্যবহার করা হয় সেখানে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেশি থাকে৷
ছবি: Ruslan Kudrin - Fotolia.com
লিফটের বোতাম
ক্যানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় লিফটের বোতামে টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে৷ সৌদি আরবে করা আরেক গবেষণায়ও একই ফল পাওয়া গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কম্পিউটার গেমস কন্ট্রোলার
ইউনিসেফ ও ডোমেসটস-এর উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, কম্পিউটার গেমস কন্ট্রোলারে টয়লেট সিটের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে৷ টয়লেট সিটের প্রতি ১০০ বর্গসেন্টিমিটারে যেখানে গড়ে প্রায় ১,৬০০ জীবাণু থাকে, কন্ট্রোলারে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৭,৮৬৩৷