1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিইউক্রেন

সুমিতে হামলার পর কি ইউক্রেনে শান্তি ফেরার আশা শেষ?

১৬ এপ্রিল ২০২৫

সুমিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দুই পক্ষই তাদের অবস্থান কঠোর করেছে। ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে নতুন প্রস্তাব আছে।

সুমিতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জরুরি পরিষেবার এক কর্মী ল্যাম্পপোস্টের আলোয় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।
সুমিতে রাশিয়ার হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ছবি: Roman Pilpey/AFP/Getty Images

ইউক্রেনে যুদ্ধের তীব্রতা আবার বেড়ে গেছে। রোববার উত্তরপূর্ব ইউক্রেনের শহর সুমিতে রাশিয়া যে ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে তারপর দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে একমত হওয়া কঠিন হয়েছে এবং শান্তি আলোচনা ধাক্কা খেয়েছে।

জার্মান কাউন্সিল অফ ফরেন রিলেশনসের ইউক্রেন বিশেষজ্ঞ উইলফ্রেড জিলগে ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''রাশিয়া ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সুমিতে এই যুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। তবে এটাই প্রথম ঘটনা নয়। আমরা এখনো পুরোপুরি ধরতে পারছি না, ঘরে-বাইরে এই শাসন কতটা নির্মম।''

সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, তারা সুমিতে সামরিক টার্গেটে আক্রমণ করেছে। ইউক্রেনের সেনার বৈঠক হচ্ছিল। সেখানেই তারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। ৬০ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ইউক্রেন সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছিল।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার হামলায় দুই শিশু-সহ ৩৪ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ক্রেমলিনের হুঁশিয়ারি

জার্মানির চ্যান্সেলর-ইন-ওয়েটিং ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেনকে টরাস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা উচিত।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ''জার্মানি যদি ইউক্রেনকে এই ক্ষেপণাস্ত্র দেয়, তাহলে যুদ্ধের তীব্রতা আরো বাড়বে। ইউরোপের অন্য দেশগুলিও এই পথে হাঁটতে চাইছে। ফলে যুদ্ধ আরো দীর্ঘ হতে পারে।''

অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

মাসখানেক আগে যুদ্ধবিরতির আশা প্রবল হয়েছিল। ডনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুটিন সিদ্ধান্তে এসেছিলেন, ৩০ দিন কোনো পক্ষই জরুরি পরিকাঠামোর উপর আক্রমণ চালাবে না।

তবে সেই সময়েও রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অন্যের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ করে। তবে তাদের দাবি নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

জিলগে বলেছেন, ''এই চুক্তি ছিল বৃহত্তর কৌশলের একটা অঙ্গ। রাশিয়ার কোনো তাড়াহুড়ো ছিল না। ক্রেমলিন ভেবেছিল, পশ্চিমা দেশগুলি এই বিষয়ে একমত হতে পারবে না। তারা ভেবেছিল, অ্যামেরিকা ইউরোপ থেকে সরে যাবে এবং ইউক্রেনকে আর সাহায্য করবে না।''

গত ১০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার উপর আবার নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে দেয়ায় তিনি কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। জো বাইডেন ২০২১ সালের এপ্রিলে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তা আরো একবছর বাড়িয়েছেন ট্রাম্প।

ইউক্রেনকে আরো সাহায্য করতে চায় ইইউ

জিলগে মনে করেন, ''ইউরোপকেই এখন সক্রিয় হতে হবে। এখনো নিষেধাজ্ঞাকে কড়া করার অনেক সুযোগ আছে। ইউরোপ তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইউক্রেনকে ঢুকিয়ে নিতে পারে।''

ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাজা ক্যালাস সেটাই চান। ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে গত সোমবার তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কড়া নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনকে আরো সাহায্য করতে হবে।

ইইউ ইউক্রেনকে ২০ লাখ রাউন্ড গুলি-গোলা দেবে বলে জানিয়েছে। জিলগে বলেছেন, ''ইউক্রেনের অস্ত্র কারখানাগুলিতে উৎপাদন বাড়ানোর ব্যবস্থা করাটাও একটা বিকল্প। ২০২২-এর পর থেকে ইউক্রেন এই উৎপাদন অনেক বাড়িয়েছে। এখন তারা তাদের প্রয়োজনীয় গুলি-গোলার ৫০ শতাংশ উৎপাদন করে।''

রাশিয়া যা বলছে

রাশি্য়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি তখনই হতে পারে, যখন যুদ্ধের মূল কারণগুলি দূর হবে। এই কারণের মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার সংখ্যালঘুদের প্রতি শ্রদ্ধার অভাবের বিষয়টিও আছে।

তিনি বলেছেন, ''রাশিয়ার লক্ষ্য হলো সংখ্যালঘু অধিকার পুরোপুরি্ সুরক্ষিত করা। কয়েক শতক ধরে যারা সেখানে বাস করছেন, তারা যাতে সেখানে বসবাস করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা।''

তার অভিযোগ, ''ইউক্রেন থেকে ওরা রাশিয়ার সব চিহ্ন মুছে ফেলতে চায়। রুশ ভাষা, অর্থডক্স চার্চকে ওরা নিষিদ্ধ করেছে।''

লাভরভ বলেছেন, ''৩০ দিনের আংশিক যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছিল কারণ, ন্যাটোকে বাদ দিয়ে, আঞ্চলিক বিষয়ে কোনো আলোচনা ছাড়া এই যুদ্ধবিরতি করা সম্ভব হয়েছিল।'' 

নতুন প্রস্তাব দেবেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা কী করে শুরু হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। সোমবার ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন নিয়ে তিনি কিছু ভালো প্রস্তাব শীঘ্রই দেবেন

জিলগে জানিয়েছেন, ট্রাম্প দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। তবে অ্যামেরিকা যেভাবে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তা নিয়ে তাদের দেশেই সমালোচনা হচ্ছে।

জিলগে মনে করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্কো রুবিও এবং ইউক্রেনে ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলোগের সঙ্গে ট্রাম্পের মত মিলছে না।

অ্যাসট্রিড প্র্যাঙ্গে ডি ওলিভিয়া/জিএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ