1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সুশাসনের কারণে করোনায় কেউ না খেয়ে মারা যায়নি’

হারুন উর রশীদ স্বপন
৮ জানুয়ারি ২০২১

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ চায় বিশ্বের ধনী-গরিব সব দেশ যেন করোনার ভ্যাকসিন পা৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া তার এ সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে করোনা সংকট মোকাবেলা এবং ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে নানা কথা৷

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশের তো অনেক  করোনা ভ্যাকসিন লাগবে৷ভ্যাকসিন কূটনীতিতে বাংলাদেশ কীভাবে এগোচ্ছে?

এ কে আব্দুল মোমেন:  কোভিড তো নতুন৷ তাই প্রথম দিকে আমাদের কিছু দুর্বলতা ছিল৷ কিন্তু সেগুলো আমরা কাটিয়ে উঠেছি৷ আর যখনই শুনলাম ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, তখনই আমরা আমাদের চোখ-কান খোলা রেখেছি৷ যে-ই ভ্যাকসিন তৈরি করবে, আমরা তার কাছ থেকেই নেবো৷ আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো দেশ থেকে বা একটা দেশ থেকে ভ্যাকসিন আনার কোনো পরিকল্পনা করিনি৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডে ওয়ান থেকে দরজা খোলা রেখেছে৷ সব অপশন ওপেন রেখেছি৷ প্রথমে এলো চীন৷ তাতে কিছু সময় গেল৷ এরপর রাশিয়া৷ তারপর ভারত। আমরা সরাসরি অক্সফোর্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি৷ তারা সরাসরি দেয়নি৷ পরে ভারতের মাধ্যমে দিতে রাজি হয়েছে৷ দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলাপ হয়৷ তখন ভারতীয় সরকার বলল, যদি ভ্যাকসিন ভারত পায়, তখন একই সঙ্গে বাংলাদেশও পাবে৷

তাহলে ভারতের সেরাম ইনস্টিউটের সিইওর কথার পর সংশয় সৃষ্টি হওয়ার কারন কী?

 একটি খবর হলো সেরাম ইনিস্টিটিউটের সিইও নাকি বলেছেন তারা ভ্যাকসিনের অনুমোদন পেয়েছে রপ্তানি না করার শর্তে৷ সাংবাদিকরা যখন বললেন, আমরা তখন কিছুই জানতাম না৷ এরপর আমরা যোগাযোগ শুরু করলাম৷ তখন ভারত থেকে আমাদের জানানো হয়, ভারতের সর্বোচ্চ পার্যায়ের সিদ্ধান্ত হলো ভারত যদি ভ্যাকসিন পায়, বাংলাদেশও পাবে৷ উদ্বেগটা কেটে যায়৷

‘আমরা কোভিড ম্যানেজমেন্টে নাম্বার ওয়ান’

04:59

This browser does not support the video element.

ওই কয়েক ঘন্টায় আপনাকে কী ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হয়েছে?

দিল্লিতে আমাদের দূতাবাস বাংলাদেশের চেয়ে আধ ঘন্টা পরে খোলে৷ তাই প্রথমে এখানে ভারতীয় হাইকমিশনারকে জিজ্ঞেস করলাম৷ উনি বললেন , ওনার কাছে কোনো তথ্য নেই৷ তবে ডাব্লিউএইচও এখনো অনুমোদন করেনি সে কারণে দেরি হতে পারে৷ জেনে আমাদের জানাবেন৷ এরপর আমরা আমাদের দিল্লি দূতাবাসে কথা বললাম৷ তারা বলল, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু জানায়নি৷ এটা পেঁয়াজের মতো কাহিনি হয়েছে৷ একবার বন্ধ করে আবার তা বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার হয়েছে৷ ভারতের ভ্যাকসিন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় ওই দিনই আমরা চীন, রাশিয়ার সাথে যোগাযোগ করি৷ রাশিয়া আমাদের বলল, তারা আমাদের ১৭০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন দেবে৷ আমরা আশ্বস্ত হলাম৷ এই সময়ের মধ্যে আমরা দিল্লি থেকে জানতে পারলাম যে, ভারত আমাদের একই সময়ে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন দেবে৷

ভারতের সাথে ভ্যাকসিন নিয়ে যে চুক্তি, সেটা সেরাম ও বেক্সিমকোর মধ্যে, নাকি দুই সরকারের মধ্যে?

ওটা আমি বলতে পারবো না৷ আমরা জানি, ভারত যখন ব্যবহার করবে আমরাও তখন ব্যবহার করবো৷ এটাই আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ কীভাবে আনা-নেয়া করবে এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে৷ তবে আমরা আমাদের প্রাইভেট সেক্টরকে উৎসাহিত করি৷

ভারতের সাথে যেমন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক, তেমনি স্পর্শকাতরও৷ পেঁয়াজ, ভ্যাকসিন এইসব বিষয়ে যখন অনিশ্চয়তা হয়, তখন এই সম্পর্কে ঘাটতি হয়?

আমাদের সম্পর্কটা আস্থার৷ তাই যখন এ ধরনের ইস্যু আসে, তখন আমরা তর্ক করতে পারি৷ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যায়৷ আমাদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস অনেক বেশি৷ আর বিশেষ করে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কারণে ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী৷

চীনের সাথে নানা দিক দিয়ে বাংলাদেশের সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ায় ভারত সরকার কি বাংলাদেশের প্রতি অসন্তুষ্ট?

নিশ্চয়ই না৷ ভারত সরকার আমাদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক৷  তাদের সাথে আগে আমাদের রক্তের সম্পর্ক ছিল৷ তাদের সাথে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক ছিল৷ কালচারাল সম্পর্ক৷ কিন্তু এখন হয়েছে বিশ্বাসের সম্পর্ক৷

বাংলাদেশ গ্যাভি থেকেও ভ্যাকসিন পেতে চায়৷ ভ্যাকসিন কূটনীতি কতটা বিস্তৃত করছে বাংলাদেশ?

আমরা প্রথম দিন থেকেই চেয়েছি ধনী-গরিব সব দেশ যাতে ভ্যাকসিন পায়৷ এজন্য আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ৫০ হাজার ইউরো দিয়েছি৷ আমরা টপে আছি৷ গ্যাভির সাথে যোগাযোগ রাখছি৷ যেসব দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করছে, সবার সাথেই যোগাযোগ রাখছি৷

করোনা ও ভ্যাকসিন দেশে দেশে সম্পর্কের কী নতুন মাত্রা যোগ করেছে?

করোনা পৃথিবীকে আরো কাছাকাছি নিয়ে এসেছে৷ করোনার আগে বিভিন্ন দেশ অর্থনেতিক দিক দিয়ে নিজেদের আলাদা করে ফেলেছিল৷ যুক্তরাষ্ট্র ডাব্লিউএইচও, ইউনিসেফ থেকে বের হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু এখন মানবিকতা আবার ফিরে এসেছে৷

আমরা এই ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে চাই৷ আমরা পৃথিবীর মধ্যে, এশিয়ার মধ্যে কোভিড ম্যানেজমেন্টে নাম্বার ওয়ান৷ বিদেশি পণ্ডিতরা বললেন, বাংলাদেশে ৫০ লাখ থেকে এক কোটি লোক মারা যাবে৷ আল্লাহর মেহেরবানি আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেরকম হয়নি৷ মাত্র সাড়ে সাত হাজার মারা গেছেন৷ আমরা চাই যেন একজনও মারা না যায়৷

আমাদের অত্যন্ত সুশাসন আর আর মিনিমাম করাপশনের কারণে সবাই খাবার পেয়েছেন৷ বিশ্বের অন্য দেশে অনেক বেশি করাপশন হয়েছে৷ (বাংলাদেশে) কেউ না খেয়ে মারা যাননি৷ বাংলাদেশ সুশাসনের মডেল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ