আদিত্য এল-১ মহাকাশে পাঠানো ভারতের প্রথম সূর্যযান। সোমবার রাতে যাত্রাপথের দ্বিতীয় ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করেছে আদিত্য।
বিজ্ঞাপন
পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যবর্তী এক অবস্থান থেকে সূর্যের কোরোনা স্তর এবং আলোরশ্মি পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য এল-১ মহাকাশযান। সেখান থেকে একাধিক নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি চন্দ্রযানের সাফল্যের পর গত শনিবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র ইসরো আদিত্য এল-১ সূর্যযানের সফল উৎক্ষেপণ করেছে। সোমবার রাতে ইসরো জানিয়েছে, যাত্রাপথের দ্বিতীয় বাধা অতিক্রম করেছে এই মহাকাশযান।
টুইট করে ইসরো এই খবর জানিয়েছে। আদিত্যের বর্তমান অবস্থান এবং কোন কোন অঞ্চল থেকে আদিত্যকে উপগ্রহের মাধ্যমে ট্র্যাক করা হচ্ছে, তা-ও জানানো হয়েছে টুইটে।
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর তৃতীয় বাধা পার করার কথা এই সৌরযানের। ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটা নাগাদ ওই বাধা পার করার কথা আদিত্য এল-১-এর।
মোট ১২৫ দিন ধরে যাত্রা করবে এই সূর্যযান। প্রথম ১৬ দিন পৃথিবীর কক্ষপথে থাকার পর তা সূর্যের দিকে পাড়ি দেবে। শেষপর্যন্ত এই সূর্যযান পৌঁছাবে ল্য়াগরেজ পয়েন্ট বা এল ওয়ান পয়েন্টে। সেখানেই অবস্থান করবে এই ভারতীয় উপগ্রহ।
চাঁদে কেমনভাবে কাজ করবে চন্দ্রযান-৩
বুধ-সন্ধ্যায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমেছে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। চন্দ্রবিজয়ের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেছে ভারত।
ছবি: ISRO/UPI Photo/IMAGO
ভোর হলো, দোর খোলো
বিক্রম যখন চাঁদে নেমেছিল, তখন সেখানে ভোর হয়েছে। আলো ফোটার পরই ল্যান্ডার বিক্রমের পেট থেকে সফলভাবে বেরিয়ে এসেছে রোভার প্রজ্ঞান। এই রোভার কাজ করে সৌরশক্তিতে। ইসরো জানিয়েছে, বিক্রমের পেতে রাখা ঢালু পথ বেয়ে নেমে এসেছে ছয় চাকার প্রজ্ঞান। এবার চাঁদের পিঠে ঘুরে ঘুরে নানান তথ্য সংগ্রহ করবে। আর তার পাঠানো তথ্য থেকেই চাঁদ নিয়ে অজানা তথ্য পাবেন বিজ্ঞানীরা।
ছবি: ISRO/newscom/picture alliance
১৪ দিন ধরে
প্রজ্ঞান ১৪ দিন ধরে চাঁদের পাথর, জলীয় বরফ-সহ নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে, পরীক্ষা করবে, ছবি তুলবে, তারপর বিক্রমের মাধ্যমে তা পাঠাবে ইসরোর কাছে। অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ এই পরীক্ষাপর্ব। আর যেহেতু প্রজ্ঞান সৌরশক্তিতে চলে এবং ১৪ দিন পর আর সে কাজ করবে না।
ছবি: ISRO/AP/picture alliance
চাঁদের মাটিতে
চাঁদের মাটিতে ভারতের পতাকা ও ইসরোর প্রতীক এঁকে দেবে প্রজ্ঞান। সে দেখবে, চাঁদের মাটিতে কী কী খনিজ পদার্থ আছে। চাঁদের ভূমি কীভাবে তৈরি হয়েছে, ইত্যাদি। এই রোভারে আছে পাঁচটি যন্ত্র।
ছবি: Amit Dave/REUTERS
১৯ মিনিটে অবতরণ
বুধবার ভারতীয় সময় বিকেল পাঁচটা বেজে ৪৫ মিনিটে শুরু হয়েছিল ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদে অবতরণের পালা। ১৯ মিনিট পরে সে চাঁদে নামে। গতবার ঠিক দুই দশমিক দুই কিলোমিটার আগে ভেঙে পড়েছিল চন্দ্রযান-২। এবার সেই দূরত্ব পেরিয়ে যাওয়ার পরই আনন্দে ফেটে পড়েন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
ছবি: ISRO/UPI Photo/IMAGO
৪০ দিনে চাঁদে
গত ১৪ জুলাই অন্ধ্রের শ্রীহরিকোটা থেকে য়াত্রা শুরু করেছিল চন্দ্রযান-৩। ৪০ দিনের মাথায় চাঁদের মাটিতে পা রাখলো ল্যান্ডার বিক্রম। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা সফল হলেন চন্দ্রবিজয় করতে।
ছবি: Aijaz Rahi/AP Photo/picture alliance
উল্লসিত গোটা দেশ
বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যে উল্লসিত গোটা দেশ। বিক্রম চাঁদে পা রাখার পরই শুরু হল বিজয়োল্লাস। শুরু হয় মিছিল। কোথাও পায়ে হেঁটে. কোথাও বাইক-মিছিল।
ছবি: Arun Sankar/AFP/Getty Images
বঙ্গসন্তানরাও সাফল্যের সঙ্গী
ইসরোয় ছয়জন বাঙালি বিজ্ঞানী চন্দ্রযান-৩ অপারেশন দলের সদস্য। তারা হলেন, বিজয় দাই, সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়, কৃশানু নন্দী, তুষারকান্তি দাস, অনুজ নন্দী ও কৌশিক নাগ। এছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের একটি দল ইসরোর সহযোগী সংস্থার ভূমিকা পালন করেছে।
ছবি: ISRO/AFP
7 ছবি1 | 7
এই সৌরযানে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করার জন্য আছে সাতটি পে লোড। এদের প্রত্যেকের নিজস্ব কাজ আছে। সৌরযান তখনই সফল হবে, যখন এই পে লোডগুলি নিজের কাজ ঠিক করে করবে। একটি পে লোড সূর্যের কোরোনা স্তরের ছবি তুলবে।
তাছাড়া সূর্যের বর্ণালি পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেবে ভিএলসি। সূর্যের কোরোনা থেকে আলোর রশ্মির বিচ্ছুরণ ও তার ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক বিকিরণ সম্পর্কেও তথ্য জানাবে ভিএলসি। সোলেক্স পে লোডের কাজ হবে নক্ষত্র হিসাবে সূর্য কেমন তা বিচার করা।
আরেকটা পে লোডের নাম এসইউআইসি। তারা ক্রোমোস্ফিয়ার ও ফটোস্ফিয়ারের ছবি ও তথ্য পাঠাবে। সূর্যস্পৃষ্ঠের নাম ফটোস্পিয়ার ও সেখান থেকে করোনা পর্যন্ত প্লাজমা স্তরের নাম ক্রোমোস্পিয়ার।
অন্য পে লোডগুলি সূর্যের বায়ু, কণা ও চুম্বকক্ষেত্র সম্পর্কে খবরাখবর দেবে।