সকালে উঠে এমন এক গান শুনেছি যা এর আগেও কত সহস্রবার যে শুনেছি বলা মুশকিল৷ সবসময়ই মনে হয়েছে, কাজী নজরুল ইসলামের এ গান সব ভাষায় অনুবাদ করে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিলে দারুণ হতো৷
বিজ্ঞাপন
গানটা ঈদের চাঁদ দেখা গেলেই বিশ্বের প্রায় সব বাঙালি মুসলমানের ঘরে ঘরে বাজবে৷ যার ঘরে বাজবে না তিনিও কোথাও না কোথাও কোনো না কোনোভাবে শুনবেন, হয়তো গুনগুন করে গেয়েও উঠবেন, ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ৷’
আজ থেকে ৮৯ বছর আগে সেই গানটা লিখেছিলেন নজরুল৷ খেয়ালী কবি তখন হয়তো অন্য কিছু লেখার চিন্তায় মগ্ন৷ শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহমেদ বললেন, ‘‘রোজার ঈদ নিয়ে একটা গান লিখুন৷’’ লিখে ফেললেন নজরুল৷ লিখলেন এমন এক গান যা ছাড়া বাঙালি মুসলমানের ঈদুল ফিতর উদযাপন চিন্তাই করা যায় না৷
বহু বারের মতো এবারও গানটা শোনার পর থেকে আমি ভাবছি- আচ্ছা, ঈদ শেষেও এই গানের প্রতিটি কথা সব শ্রোতা যদি নিজের উপলব্ধিতে রেখে দিতেন? যদি সবাই কে দুশমন তা ভুলে চিরকালের জন্য হাত মেলাতেন? ‘যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী’ ‘সেই গরীব ইয়াতীম মিসকিনে’র পাশে সব সময় যদি অন্যরা দাঁড়াতেন? বাংলাদেশ করোনা সংকটের সময়ও কি তাহলে ত্রাণ চুরি, দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ সামান্য ক'টা টাকা ধনীদের ঘরে ওঠার খবর আমাদের পড়তে হতো?
নজরুলের এ গানে ধর্মের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বানও খুব আলোড়িত করে৷ আঘাতের জবাবে আঘাত, ঘৃণায় পাল্টা ঘৃণার কথা ভুলে যেতে বলে নজরুল লিখেছেন, ‘তোরে মারল ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট-পাথর যারা/ সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ৷’
আহা, এরচেয়ে বড় শান্তির বাণী হতে পারে!
কিন্তু মুশকিল হলো, বিচারের বাণীর মতো অনেক বাণীই নিভৃতে কাঁদে৷ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কাঁদে৷
আরেক বাঙালি অতুলপ্রসাদ সেন লিখেছিলেন, ‘সবারে বাসরে ভালো, নইলে মনের কালো ঘুচবে না রে৷’ তার এ বাণী স্রেফ গানের কথাই হয়েছে বেশি মানুষের কাছে, জীবনের পাথেয় হতে পেরেছে বলে মনে হয় না৷
১৬ মে’র ছবিঘরটি দেখুন...
করোনা কালে ঈদ শপিং
ঈদ সামনে রেখে ১০ মে থেকে বাংলাদেশে দোকানপাট খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ যা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা৷ ছবিতে দেখে নেওয়া যাক কেমন চলছে ঈদ শপিং৷
ছবি: Sazzad Hossain
আড়ংয়ে ভিড়
দেশীয় পোশাকের ব্র্যান্ড আড়ং এর শোরুমে ক্রেতাদের ভিড়৷ যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে৷
ছবি: Sazzad Hossain
ক্রেতাদের লাইন
মিরপুর রোডে সাইন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে আড়ং এর শোরুমের বাইরে ক্রেতাদের লম্বা লাইন৷
ছবি: Sazzad Hossain
ফুটপাতের ভিড়
রাজধানীর গাউছিয়ায় দোকান না খুললেও ফুটপাতে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা৷ যেখানে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মানার আগ্রহ কোনো পক্ষেরই নেই৷
ছবি: Sazzad Hossain
জুতার দোকান
এলিফ্যান্ট রোডের এই জুতার দোকানেও একসঙ্গে থাকার নিয়মের অতিরিক্ত ক্রেতা দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Sazzad Hossain
বিক্রেতাদের আক্ষেপ
ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটে ফুটপাত থেকে কাপড় কিনছেন নিম্ন আয়ের মানুষ৷ ক্রেতা না থাকার আক্ষেপ করছেন বিক্রেতারা৷
ছবি: Sazzad Hossain
জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার
ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে বাটার শোরুম থেকে ক্রেতা বেরিয়ে যাওয়ার পর দরজার হাতল জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করছেন একজন বিক্রয়কর্মী৷
ধানমণ্ডির ২৭ নম্বরে একটি শোরুমে ঢোকার মুখে ক্রেতাদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
ছবি: Sazzad Hossain
জীবাণুনাশক টানেল
রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলের সামনে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হয়েছে৷ ক্রেতারা টানেলের ভেতর দিয়ে মলে প্রবেশ করছেন৷
ছবি: Sazzad Hossain
ক্রেতার অপেক্ষায়
ঈদে পুরুষদের পোশাক হিসেবে পাঞ্জাবির চাহিদা থাকে সব থেকে বেশি৷ মিরপুর রোডে সাইন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের এই দোকানটি নানা ধরনের পাঞ্জাবির পসরা সাজিয়ে বসলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না৷
ছবি: Sazzad Hossain
আসছে শিশুরাও
শিশুদের নিয়ে কেনাকাটা করতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকে তা মানছেন না৷ মাপ মত সঠিক পোশাকটি বেছে নিতে শিশুদের সঙ্গে নিয়েই কেনাকাটা করছেন৷
ছবি: Sazzad Hossain
মশারি
করোনা ভাইরাস প্রকোপের মধ্যে ঢাকায় ডেঙ্গুও ছড়াচ্ছে৷ তাই মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে এসময় ফুটপাত থেকে দেখেশুনে মশারি কিনছেন এক নারী৷
ছবি: Sazzad Hossain
সতর্কবার্তা
সরকারের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন দোকানে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সম্পর্কিত সতর্কবার্তার নোটিস দেখা যায়৷
ছবি: Sazzad Hossain
হ্যান্ড স্যানিটাইজার
হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতে ক্রেতার অপেক্ষায় এক বিক্রেতা৷
ছবি: Sazzad Hossain
বন্ধ বসুন্ধরা সিটি
রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ শপিংমল বসুন্ধরা সিটি বন্ধ রাখা হয়েছে৷ কর্তৃপক্ষরা বলেছেন, দোকান মালিক ও কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না ফেলতে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷
ছবি: Sazzad Hossain
বিকিকিনি কম
প্রায় দেড় মাস পর দোকান খোলার অনুমতি পেলও করোনা সংক্রমণের ভয়ে ক্রেতারা আসছেন না বলে আক্ষেপ বিক্রেতাদের৷ বলেন, বেচা-কেনা একদমই নেই৷