চীনে অনেক কিছুই শেয়ার করা যায়৷ যেমন মোটর বাইক, ছাতা এবং বাস্কেটবল৷ এই তালিকায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে – সেক্স ডল৷ চীনের যৌন পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘টাচ’ সম্প্রতি ‘শেয়ারড গার্লফ্রেন্ডস’ নামে একটি সেবা চালু করেছে৷
বিজ্ঞাপন
এই সেবার আওতায় সেক্স ডলদের চীনা, রুশ, কোরীয় এবং হংকংয়ীয় সংস্করণ ভাড়া দেয়া হয়৷ প্রতিষ্ঠানদের তালিকায় ‘ওয়ান্ডার ওমেন’ সংস্করণও রয়েছে৷
চীনে শেয়ারে ব্যবহার উপযোগী আরো অনেকে কিছুর মতোই এই সিলিকনের মোহিনী পুতুলদেরও একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে এক সপ্তাহ অবধি ভাড়া করা যায়৷
মানবিক সম্পর্কে হতাশা, পুরুষ ঝুঁকছে পুতুলে
জাপানের অনেক পুরুষের মাঝে মানবিক সম্পর্কে হতাশা দেখা দিয়েছে৷ তাঁদের অনেকে ঝুঁকছেন পুতুলের দিকে৷ কেউ ঘর ভেঙে নতুন এই সম্পর্কে জড়াচ্ছেন৷ আবার কারো ঘর ভাঙছে এই সম্পর্কে জড়ানোয়৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
মাসায়ুকি ওজাকির ভালোবাসা
ছবিটি দেখে হঠাৎ মনে হতে পারে, কোনো ব্যক্তি তাঁর অসুস্থ্য স্বজনকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ ছবিতে দেখা যাওয়া মাসায়ুকি ওজাকি পরম মমতায় যাকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকে তিনি স্বজনই মনে করেন৷ তবে হুইল চেয়ারে করে নারীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি কোনো কারণে অসুস্থ্য নন৷ কোনো দুর্ঘটনায় তাঁর চলার ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়নি৷ এভাবেই তাঁকে তৈরি করা হয়েছে৷ হ্যাঁ, তাকে তৈরিই করা হয়েছে৷ নারীমূর্তিটি বাস্তবে একটা পুতুল৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
মায়ুর সঙ্গে যাত্রা
ওজাকি পুতুলটির নাম রেখেছেন মায়ু৷ কোনো এক শো রুমে দেখে পছন্দ হয়ে যাওয়া মায়ু ধীরে ধীরে ওজাকির জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে৷ নিজের জায়গা করে নিয়েছে পরিবারের অন্যদের মাঝেও৷ ‘রাবার রোমান্সে’-র এই সঙ্গীকে নিয়ে ড্রাইভেও বের হন ওজাকি৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
হতাশ ওজাকি ফিরতে চান না মানবিক সম্পর্কে
মানবিক ভালোবাসায় হতাশ ওজাকি দাবি করেছেন, তাঁর নতুন এই প্রেম ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইটে’-র মতো৷ তিনি আর ফিরতে চান না মানবিক সম্পর্কে৷ যদিও তিনি তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে এখনো একই ছাদের নীচেই বাস করছেন৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
পরিবারে অশান্তি-বিভেদ
যেহেতু এই পুতুল ব্যবহার হয় যৌনতায়ও৷ তাই এটা অনেকের পারিবারিক জীবনে অশান্তি ডেকে আনছে৷ ৬২ বছর বয়স্ক সেনজি নাকাজিমার জীবনেও তাই ঘটেছে৷ তাঁর পুতুল প্রেমিকার নাম সাওরি৷ সাওরিকে নাকাজিমার ছেলে মেনে নিলেও মেয়ে মানতে পারেনি৷ পারিবারিক বাসায় সাওরির প্রবেশ নিষিদ্ধ৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
পুতুল-মানবী
সার্ফিংয়ের জন্য সৈকতে নেয়ার পূর্বে সাওরিকে প্রস্তুত করছেন তিনি৷ এভাবেই জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে পুতুল মানবী৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
নতুন জাপানী-প্রবণতা
কেবল ওজাকি নয়, নতুন এই সম্পর্কে ঝুঁকছেন দেশটির বিপুর সংখ্যক পুরুষ৷ প্রতি বছর দুই হাজার এ রকম পুতুল বিক্রি হচ্ছে জাপানে৷ এই পুতুলগুলের দাম ৬ হাজার মার্কিন ডলারের মতো৷ পুতুলের আঙুল প্রয়োজন ও পছন্দ মতো নেয়া যায়৷ আলাদা করা যায় মাথা ও যৌনাঙ্গও৷ অর্থাৎ মনে না ধরলে মুখ এবং যৌনাঙ্গ পাল্টে ফেলা যায় অচিরেই৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
সত্যিকারের স্পর্শ মেলে?
পুতুল প্রস্তুতকারক ওরিয়েন্ট ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিডেও সুচিয়া বলেন, ৭০-এর দশকের পর এ পণ্য উৎপাদনে প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গেছে৷ এখন এটা অনেকটা বাস্তবের মতোই মনে হয়৷ ছুঁয়ে দেখলে মনে হবে, আপনি সত্যিকারের মানুষের ত্বকই স্পর্শ করছেন৷ অনেক বেশি পুরুষ এখন এটা কিনছে৷ কারণ তাঁরা এর সঙ্গে সত্যিকারের যোগাযোগ করতে পারছেন বলে মনে করছেন৷
ছবি: Getty Images/B.Mehri
7 ছবি1 | 7
চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর খোসিয়ামেনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এ সব পুতুল ভাড়া নেয়া খদ্দেররা চাইলে আগে থেকেই সেটির পোশাক এবং চুলের ধরন নির্ধারণ করে দিতে পারেন৷ পাশাপাশি রয়েছে এটি ব্যবহারের সময় কী ধরনের শব্দ হবে তা নির্ধারণেও সুযোগ৷ আর এগুলো পরিষ্কারেরও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে৷
প্রতি রাত ৪৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এসব পুতুল ভাড়া নেয়া যায়৷ তবে শুরুতে ১,২০০ মার্কিন ডলারের মতো জামানত দিতে হবে, যা পুতুলটি ফেরত দেয়ার পর ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে টাচ৷ প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এ সব পুতুল নাকি প্রকৃত মানুষের মতোই আচরণ করে৷ চীনের লাখ লাখ অবিবাহিত পুরুষ এবং বিচ্ছেদের শিকার বা পরিবার থেকে দূরে থাকা পুরুষদের টার্গেট করে এসব পুতুল ভাড়া দেয়া হচ্ছে৷
আপাতত, বেইজিংয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই পুতুল ভাড়া দেয়া হলেও ভবিষ্যতে গোটা চীনেই এই সেবা দিতে চায় টাচ৷ আর চীনের ‘শেয়ারিং’ অর্থনীতিতে এই পণ্য ভালোই বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
এআই/ডিজি (এএফপি, এপি)
যৌন খেলনার ইতিহাস
বর্তমান যুগে সেক্স টয় বা যৌন খেলনা, যেমন ভাইব্রেটরের মতো টয়গুলো কেবল একটা উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হয়, আর তা হলো আনন্দ৷ যদিও ভাইব্রেটরের আবিষ্কার হয়েছিল নারীদের যৌনতার ওপর পুরুষদের নিয়ন্ত্রণের জন্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Spata
সবই প্রাকৃতিক: বিশ্বের প্রথম ডিলডো
কাঁচা কলা হোক বা উটের শুকনো গোবর- প্রাচীন কালে গ্রিস ও মিশরের মানুষ এগুলোর ওপর পিচ্ছিল পর্দার্থের প্রলেপ দিয়ে যৌন খেলনা বানিয়ে নিত৷ এছাড়া আরও বিকল্প ছিল বাঁকানো পাথর, চামড়া বা কাঠের বস্তু৷ বিশ্বের প্রথম ‘ডিলডো’ কিন্তু জার্মানিতেই আবিষ্কার হয়েছিল, তাও আবার ২৮,০০০ বছর আগে৷ ২০ সেন্টিমিটার লম্বা এই পাথরটি কেবল যে ‘সেক্স টয়’ হিসেবে ব্যবহৃত হতো তা-ই নয়, আগুন জ্বালানোর কাজেও ব্যবহৃত হতো৷
ছবি: Phallus von der Hohle Fels/J. Lipták/Universität Tübingen
খুলে দাও
ডিলডো শব্দটি প্রথম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ডিলাটারে’ থেকে, ১৪০০ শতাব্দিতে৷ এর মানে হচ্ছে খুলে দাও৷ আর ইতালিতে দিলেত্তো মানে খোল৷ ইতালীয় রেনেঁসার একশ বছর পর চামড়া ও অলিভ অয়েল দিয়ে যৌন খেলনা তৈরি হতো৷ তবে ইতিহাস বলে শুনতে যতটা আনন্দদায়ক হওয়ার কথা খেলনাটি ততটা ছিল না৷
ছবি: Vassil
নারীর আকাঙ্ক্ষা?
দীর্ঘদিন ধরে সহবাস মানেই ছিল পুরুষের চরম উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছানো৷ পুরুষ শাসিত সেসব সমাজে নারীদের ‘অরগাজম’ বা তাদের তৃপ্তি দেয়াটাকে অবহেলা করা হতো৷ যেসব নারীর যৌন চাহিদা বেশি থাকত, তাদের হিস্টিরিয়া রোগী মনে করত পুরুষরা৷ তাদের জন্য নানা ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল৷
ছবি: Fleury/Siegfried Giedion
নারীদের যৌন চাহিদার চিকিৎসা
নারীদের এ ধরনের ‘হিস্টিরিয়া’ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল৷ একটা নির্দিষ্ট বয়সে প্রায় সব নারীর মধ্যেই দেখা যাচ্ছিল৷ এর ফলে কখনো কখনো অনেকের জ্বরও হতো৷ এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তাররা এই টেবিলে যোনী ম্যাসাজের পরামর্শ দিতেন৷ কেননা, সেসময় হস্তমৈথুন ছিল নিষিদ্ধ৷
ছবি: George Henry Taylor
ডিলডো যখন ভাইব্রেটরে পরিণত হলো
ধনী নারীদের যে কোনো রোগের চিকিৎসা ছিল, কেননা, ডাক্তাররা অনেক অর্থ পেতেন৷ আর তাই তারা কাজে লেগে গেলেন কীভাবে তাদের যৌন হিস্টিরিয়ার চিকিৎসা করা যায়৷ ১৮৮০-র দশকে ভিক্টোরিয়ার আমলে ড. জোসেফ মরটিমার প্রথম ইলেকট্রো ম্যাকানিকেল ভাইব্রেটর আবিষ্কার করেন৷ এই যন্ত্রের ফলে ১০ মিনিটেই চরম উত্তেজনায় পৌঁছে যেতেন নারীরা৷
ছবি: Collections of The Bakken Museum, Minneapolis, USA
সুখী গৃহিনীরা
বিংশ শতাব্দিতে বিভিন্ন কোম্পানি ভাইব্রেটর বানানো শুরু করে৷ স্বাস্থ্য সেবা হিসেবে বিজ্ঞাপন ছাপা হতে লাগলো বিভিন্ন ম্যাগাজিনে৷ ডাক্তাররা এতে মোটেও খুশি হননি৷ অনেকের মনে হলো, অরগাজমের জন্য নারীদের বুঝি আর পুরুষ সঙ্গীর প্রয়োজন থাকবে না৷