সেনায় বাধ্যতামূলক নিয়োগ নিয়ে কড়া শর্তের জন্য সেনা-কর্তাদের তিরস্কার করলেন জেলেনস্কি। জানিয়ে দিলেন, তাকে না জানিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নয়।
বিজ্ঞাপন
তার দৈনিক ভিডিও ভাষণে সেনা-কর্তাদের সমালোচনা করেছেন জেলেনস্কি। সেনা-কর্তারা নতুন নিয়ম চালু করেছেন, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সিরা বিনা অনুমতিতে নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র যেতে পারবেন না। কারণ, প্রয়োজন হলেই তাদের সেনার কাজে লাগানো হতে পারে। এরপরই সামাজিক মাধ্যমে এই নির্দেশের বিপুল প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
ইউক্রেনে জেলাগুলি মাঝারি মাপের। এগুলি সাধারণত পুরসভার থেকে সামান্য বড়। ফলে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে আগাম অনুমতির বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেছেন প্রচুর মানুষ।
জেলেনস্কি বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে মানুষ ক্ষুব্ধ। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শীঘ্রই তিনি বিষয়টি দেখবেন। সেনা-কর্তাদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। মানুষের ক্ষোভ যাতে আর না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন।
জেলেনস্কি ভিডিও ভাষণে জানিয়েছেন, ''আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এই সিদ্ধান্তের স্পষ্টীকরণ দেব। আর সেনা-কর্তাদের অনুরোধ করছি, আমায় না জানিয়ে তারা যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেন।''
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
তিন বছর আগে ‘মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই শেষ করার প্রত্যয় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখন দেশরক্ষার লড়াইয়ের নেতৃত্বে৷ ক্রমশ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেন তিনি...
ছবি: Piotr Skornicki/AGENCJA WYBORCZA/Reuters
আহত যোদ্ধার পাশে
যুদ্ধ চলছে৷ এ অবস্থায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে বসে থাকেন কী করে? জেলেনস্কি দেশের জনগণকে উজ্জীবিত করতে বার্তা দিচ্ছেন, যুদ্ধ বন্ধে কিংবা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন যুদ্ধাহতদের দেখতে৷ওপরের ছবিতে কিয়েভের সামরিক হাসপাতালে আহত এক সৈনিকের পাশে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷
গত ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন জেলেনস্কি৷ ওপরের ছবিতে তারই একটি মুহূর্ত৷
ছবি: J. Scott Applewhite/Pool/REUTERS
সাক্ষাৎকার শেষে স্বস্তি
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে আগেও অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি৷ তবে যুদ্ধ শুরুর পর তার বক্তব্য শোনার আগ্রহ সারা বিশ্বেই অনেক বেড়েছে৷ এক সাক্ষাৎকার শেষে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন কৌতুক অভিনেতা থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া জেলেনস্কি৷
ছবি: Umit Bektas/REUTERS
কাতেরিয়ানাকে সমবেদনা
রুশ হামলা থেকে বাঁচতে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে ভোরজেল শহর থেকে পালাচ্ছিল কাতেরিয়ানা ভ্লাসেঙ্কো৷ কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি৷ আহত হয়ে কাতেরিয়ানা এখন কিয়েভের হাসপাতালে৷ ১৭ মার্চ ফুল নিয়ে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি৷ প্রেসিডেন্টকে পাশে পেয়ে মনে বেশ জোর পেয়েছে ১৬ বছর বয়সি কিশোরী৷
ইউক্রেনে যারা আছেন, তারা প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছেন মৃত্যুর আতঙ্ক নিয়ে৷ যারা দেশ ছেড়েছেন, তারা প্রতিবেশী দেশে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের মাঝেও নিচ্ছেন দেশের খবর৷ সুযোগ পেলে জেলেনস্কির ভাষণ শোনেন না এমন ইউক্রেনীয় খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ ছবিতে মোবাইল ফোনে জেলেনস্কির ভাষণ শুনছেন হাঙ্গেরিতে আশ্রয় নেয়া এক ইউক্রেনীয় নারী৷
ছবি: Bernadett Szabo/REUTERS
ট্রুডোর সম্মান
গত ১৫ মার্চ ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্যানাডার সংসদে ভাষণ দেন জেলেনস্কি৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুরু হতেই আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ান ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
বালিশে জেলেনস্কি
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা পণ্যে দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কির ছবি৷ চেক প্রজাতন্ত্রের চেসকা লিপা শহরে তার ছবি সম্বলিত বালিশের কাভার গুছিয়ে রাখছেন এক নারী৷
ছবি: REUTERS
যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায়
ওয়াশিংটনে রুশ অ্যাম্বাসির পাশের রাস্তার পথ-নির্দেশিকাতেও দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কির নাম৷
ছবি: Leah Millis/REUTERS
পোল্যান্ডের রাস্তায়
পোল্যান্ডের রাস্তায়ও জেলেনস্কির দেখা মিলছে৷ এক শিল্পী হ্যারি পটারের আদলে ম্যুরাল এঁকে জেলেনস্কির নামের প্রথম অক্ষর ‘জেড’ লিখে দিয়েছেন কপালে৷
ছবি: Piotr Skornicki/AGENCJA WYBORCZA/Reuters
জরুরি সেবাকর্মীদের সঙ্গে
ইউক্রেনে যারা যেভাবেই দেশ ও জনগণের জীবন রক্ষায় কাজ করছেন, তাদের সবার পাশেই থাকার চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি৷ ওপরের ছবিতে কিয়েভের এক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাকে৷
রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের দরকার হলে সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হবে। গত অক্টোবর থেকে কিছু বিশেষ পেশার সঙ্গে যুক্ত নারীদেরও সেনায় নিয়োগ করা হচ্ছে।
দনেৎস্কে রাশিয়ার গোলা
মঙ্গলবার থেকে দনেৎস্কের শহর স্লোভিয়ানস্কে গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে রাশিয়া। এর ফলে অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় গভর্নর জানিয়েছেন, রাশিয়ার গোলা এসে শহরের বাজার অঞ্চলে পড়ছে। যেখানে সাধারণ মানুষ জমায়েত হন, রাশিয়া সেই সব জায়গা আক্রমণ করছে।
দনেৎস্কের গভর্নর জানিয়েছেন, সাড়ে তিন লাখ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পুরো দেশের ভাগ্য দনেৎস্কই নির্ধারণ করে দেবে। তাই সাধারণ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া দরকার। তাহলেই ইউক্রেনের সেনা রাশিয়ার সেনার মোকাবিলায় পুরোপুরি নজর দিতে পারবে।
ব্লিংকেন-লাভরভ বৈঠক
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি২০-র বৈঠকের ফাঁকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানিয়েছেন, এই বৈঠক তার কাছে প্রত্যাশিত ছিল না। প্রাইস জানিয়েছেন, তার প্রত্যাশা জি২০ সদস্য দেশগুলি রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করবে।