1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে শান্তি আসবে?

হান্স স্প্রস, ওয়াসলাত হাসরাত-নাজিমি/এপিবি২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

২৫ বছর আগে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহারের ফল ছিল গৃহযুদ্ধ, যা পরবর্তীতে পুরোপুরি বিধ্বস্ত করে দেয় দেশটিকে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরের শেষে ন্যাটো সেনারা ফিরে যাওয়ার পরও সেখানকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না৷

২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে আফগানিস্তানে হতাহতের সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছেছবি: Reuters

কাবুলের এক স্কুলশিক্ষক ৬১ বছর বয়সি আহমাদ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘যখন রুশ সেনারা আমাদের দেশ ছেড়ে গেল তখন মনে হয়েছিল আমরা স্বাধীন৷ কিন্তু এরপর কি হবে তারা তা ভেবে দেখেনি৷ যার ফল পরবর্তীতে নিজেদের সাথে নিজেদের যুদ্ধ৷''

সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৭৯ সালে, শেষ হয় ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে৷ যুদ্ধে আনুমানিক ১০ লাখ আফগান প্রাণ হারান, যাঁদের বেশিরভাগই ছিল বেসামরিক৷ এই যুদ্ধে অন্তত ৫৫ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন৷

আফগানিস্তান বিশেষজ্ঞ জার্মান সাংবাদিক গ্যুন্টার ক্নাবে তখন এ নিয়ে একটি রিপোর্ট করেছিলেন৷ লিখেছিলেন, ‘‘সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল জেনেভা অ্যাকর্ড-এ স্বাক্ষরের মাধ্যমে৷ অ্যাকর্ডের শর্ত ছিল, ১৯৮৯ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব সোভিয়েত সৈন্যকে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে৷ বলা বাহুল্য, সেই দিনটি আফগানদের জন্য ছিল মুক্তি ও আনন্দের দিন, নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের আশা আর স্বপ্ন ছিল তাঁদের চোখে৷'

আফগান বাহিনী কি নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারবে?ছবি: Getty Images/Afp/Noorullah Shirzada

কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি৷ সোভিয়েত সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়ার পর দীর্ঘ ২৫ বছর কেটে গেছে৷ ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের পতনের পর সেখানে যে সমাজব্যবস্থার উন্নতির আভাস দেখা গিয়েছিল, ন্যাটো সেনাদের ফিরিয়ে নেয়ায় সে অবস্থার অবনতি হতে পারে৷

ক্নাবে বলেন, ‘‘ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্স ফোর্স বা আইএসএএফ সেনাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন আফগানরা৷ কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তা নিতে হবে আফগানদেরই৷ আমার অবশ্য সন্দেহ, তাঁরা চরমপন্থিদের সঙ্গে পেরে উঠবে কিনা – তা নিয়ে৷''

বর্তমানে আইএসএএফ আফগানিস্তানের সাড়ে তিন লাখ সেনা ও পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যাতে তাঁরা নিজ দেশের নিরাপত্তার ভার নিতে পারেন৷ কিন্তু আফগান সরকারের সবশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে আফগানিস্তানে হতাহতের সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে৷ নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৪,৬০০ জন মানুষ৷ জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, কেবল ২০১৩ সালেই নিহত হয়েছে ৩ হাজার বেসামরিক নাগরিক, ২০১২ সালের চেয়ে যা প্রায় ৭ ভাগ বেশি৷

এছাড়া এক আফগান বিশেষজ্ঞ টোমাস রুটিগ-ও ন্যাটো সেনাদের ফিরিয়ে নেয়ার পর আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ সম্প্রতি হেলমান্দ প্রদেশের এক ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জঙ্গি সন্দেহে কিছু মানুষকে আটকাতে গিয়ে আফগান নিরাপত্তারক্ষীদের এলোপাথারি গুলিতে বেসামরিক অনেক নাগরিক নিহত হন৷

এ বছর অভিযান শেষ হওয়ার পর স্থানীয় বাহিনীর প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে অন্তত ৮০০ জার্মান সেনা সে দেশে সক্রিয় থাকবে৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তান অভিযানের সমাপ্তির সময় ক্রমশ এগিয়ে আসছে৷ কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল যৌথবাহিনী, তা অর্জন হয়নি৷ যেসব এলাকায় জার্মান সৈন্যরা মোতায়েন রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি৷ বলেন, স্থায়ী শান্তির জন্য চাই এক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, যার আওতায় আফগান সমাজের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে বোঝাপড়ার প্রয়োজন হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ