1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সেমিফাইনালে যেতে ৪০ বলে ৩৩৮ করতে হবে পাকিস্তানকে!

রাহেনুর ইসলাম
১১ নভেম্বর ২০২৩

​​​​​​​ইডেনে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করা ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে করেছে ৩৩৭ রান৷ সেমিফাইনালে যেতে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে পাকিস্তানকে৷

CC Men's Cricket World Cup | Pakistan v England
ছবি: Bikas Das/AP/picture alliance

টসের পরই যেন শেষ হয়ে গেল ম্যাচের আকর্ষণ! সেমিফাইনালে যেতে অকল্পনীয় কিছু করতে হবে পাকিস্তানকে৷ সেই রূপকথা হওয়ার কিছুটা আশা জাগত শুরুতে ব্যাট করলে৷ কিন্তু টস জিতে ইংল্যান্ড ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কার্যত সেই আশা শেষ৷ শুরুতে ব্যাট করা জস বাটলারের দল শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফদের সামলে করেছে ৯ উইকেটে ৩৩৭ রান৷

নিচু বাউন্সের ধীর গতির উইকেটে যথেষ্ট বড় স্কোর এটা৷ সেমিফাইনালে যেতে বাবর আজমদের ৩৩৮ রান করতে হবে ৬.৪ ওভারে বা ৪০ বলে! এটা শুধুই কাগজে কলমের অংক৷ বাস্তবে যেন কোনো পর্বতের অজেয় চূড়া৷ ২০১৯ বিশ্বকাপের মত এবারও তাই সেমিফাইনালের আগে ছিটকে যাওয়া শুধু আনুষ্ঠানিকতা পাকিস্তানের৷ ফেভারিট হয়ে আসা কোন দলের জন্য যা হৃদয় ভাঙার আরেকটা উপাখ্যান৷

২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের সমান ১১ পয়েন্ট ছিল পাকিস্তানের৷ সেমিফাইনালে পৌঁছাতে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে হতো ৩০০ রানের বেশি ব্যবধানে৷ লর্ডসে গুরুত্বপূর্ণ সেই ম্যাচে ৯৪ রানে জিতলেও শেষ চারের টিকিট পাওয়া হয়নি আর৷

আজ ইংল্যান্ডকে হারালে নিউজিল্যান্ডের সমান ১০ পয়েন্ট হবে পাকিস্তানের৷ তবে কিউইরা নেট রান রেটে এতটাই এগিয়ে যে, তাদের পেছনে ফেলতে ঐশ্বরিক সাহায্য চেয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের পরিচালক মিকি আর্থার!

কেন উইলিয়ামসনের দলের নেট রান রেট ছাড়িয়ে যেতে শুরুতে ব্যাট করলে পাকিস্তানকে জিততে হত ২৮৭ রানের ব্যবধানে৷ সেক্ষেত্রে বাবররা শুরুতে ব্যাট করে ৩০০ করলে ইংল্যান্ডকে অলআউট করতে হত ১৩ রানে৷ ৪০০ করতে পারলে ইংল্যান্ডকে অলআউট করতে হত ১১২ আর ৪৫০ করলে ১৬২ রানে৷

অর্থাৎ ঐতিহাসিক ইডেনের উইকেটে ৪৫০ করলে বাস্তবসম্মত একটা অংক দাঁড়াত পাকিস্তানের জন্য৷ সেটাও প্রায় অসম্ভব বলে পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম মজা করে বলেছিলেন, ‘‘ব্যাটিংয়ের পর ইংলিশদের ড্রেসিংরুমে তালা দিয়ে রেখে পুরো দলকে টাইমড আউট করলেই সেমিফাইনাল খেলা সম্ভব পাকিস্তানের!''

ইংল্যান্ড শুরুতে ব্যাট করায় সেই আশাও ভেসে যায়৷ কারণ তখন ইংল্যান্ডেকে ৫০ রানে অলআউট করতে পারলে সেটা পেরিয়ে যেতে হত ২ ওভারে৷ একইভাবে ১০০তে থামালে ২.৫ ওভার, ১৫০-তে অলআউট করলে ৩.৪ ওভার, ২০০-তে থামালে ৪.৩ ওভার আর ৩০০ রানে অলআউট করলে সেটা তাড়া করতে হবে ৬.১ ওভারে৷ জস বাটলার টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর তাই পাকিস্তানি সাবেক পেসার উমর গুলের টুইট, ‘৫ সেকেন্ডে ২৫ কোটি মানুষের হৃদয় ভাঙলে বাটলার৷'

কঠিন সমীকরণের জন্য টস হেরে মুখে আঁধার নেমে আসে বাবর আজমেরও৷ তিনি বলছিলেন, ‘আমরা শুরুতে ব্যাট করতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু টস আমাদের হাতে নেই৷ আশা করছি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের আমরা দ্রুত আউট করতে পারব৷'

সেটা আর হলো কোথায়? দুই ইংলিশ ওপেনার ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টো উদ্বোধনী উইকেটে গড়েন ৮২ রানের জুটি৷ দুজনেরই শেষ ওয়ানডে হতে পারে আজকের ম্যাচটা৷ মালানের সেটা দুঃস্বপ্নের হতে পারত ১ রানে শাহীন শাহ আফ্রিদি তার ক্যাচ না ছাড়লে৷

প্রথম ৩ ওভারে আড়ষ্টতা থাকলেও ধীরে ধীরে আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে ইংল্যান্ড৷ প্রথম ১০ ওভারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা করেছিল বিনা উইকেটে ৭২, যা এই বিশ্বকাপে তাদের তৃতীয় সর্বোচ্চ৷

উদ্বোধনী জুটিটা ভাঙেন ইফতিখার আহমেদ। তার বলে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দেন ডেভিড মালান (৩৯ বলে ৩১ রান)৷ অপর ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ফিফটি করলেও ফেরেন ৬১ বলে ৫৯ রানে৷ হারিস রউফের বলে সালমানকে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি৷

গত বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরিসহ ৫৩২ রান করে ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন বেয়ারস্টো৷ অথচ এবার তাঁর বিশ্বকাপ শেষ হল দুটি ফিফটিসহ ২১৫ রানে৷

আসলে ইংল্যান্ডের এবারের বিশ্বকাপ ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবিই এই ওপেনার৷ তারকায় ঠাসা বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ভারত এসেছিল শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে৷ জস বাটলার, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, মার্ক উড, আদিল রশিদরা সেরাটা খেলতে না পারায় একটা সময় পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে চলে যায় তারা৷

শঙ্কা জাগে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিট পাওয়া নিয়েও৷ আজ পাকিস্তানকে হারালে অন্তত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা নিশ্চিত হয়ে যাবে বাটলারদের৷ আশা থাকবে খুব বড় ব্যবধানে না হারলেও৷

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা বেন স্টোকসের ব্যাট হেসেছে আজও৷ ৭৬ বলে ১১ বাউন্ডারি ২ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৮৪ করেছেন তিনি৷ তৃতীয় উইকেটে জো রুটকে নিয়ে ১৩২ রানের জুটি গড়েন স্টোকস৷ দুজনকেই ফেরান শাহীন শাহ আফ্রিদি৷

রিভার্স সুইংগিং ইয়র্কারে স্টোকসকে বোল্ড করেছিলেন আফ্রিদি৷ পরের ওভারে তার স্লোয়ারে ৭২ বলে ৬০ করা জো রুট ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন শাদাব খানকে৷ বিশ্বকাপ ইতিহাসে রুটের রান এখন ১০৩৪, যা ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ৷ ইংলিশদের মধ্যে গ্রাহাম গুচের ৮৯৭, বেন স্টোকসের ৭৬৯, জনি বেয়ারস্টোর ৭৪৭ আর ইয়ান বেলের বিশ্বকাপ রান ৭১৮৷

শেষ দিকে জস বাটলারের ১৮ বলে ২৭ আর হ্যারি ব্রুকের ১৭ বলে ৩০-এ  স্কোরটা পৌঁছে ৩৩৭ রানে৷ হারিস রউফ ৩টি ও শাহীন শাহ আফ্রিদি নিয়েছেন ২ উইকেট৷

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে ৩৩৭/৯ (স্টোকস ৮৪, রুট ৬০, বেয়ারস্টো ৫৯; রউফ ৩/৬৪, আফ্রিদি ২/৭২)

রাহেনুর ইসলাম সাংবাদিক
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ