সৌদি আরবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৪০ হাজার নারী গৃহকর্মীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নানামুখী আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷ জানা যায়, গৃহকর্মীদের কাজে অস্বীকৃতি, ভাষাগত প্রতিবন্ধকতাসহ আরও বেশ কয়েকটি কারনে তাদের ফেরত পাঠান হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
এমনটিই জানাচ্ছে সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম৷ কিন্তু বাংলাদেশের জনশক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, ভিন্ন কথা৷ তাঁদের মতে, সৌদি আরবে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকরা নির্যাতন, এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকারও হচ্ছেন৷
সৌদি আরব এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮০ হাজারের মতো নারী গৃহকর্মী নিয়েছে৷ সে দেশের একটি নিয়োগ প্রতিষ্ঠানের প্রধান হুসেইন আল-হারথি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন, ‘‘এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বা ৪০ হাজার নারী গৃহকর্মীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷''
হারথি দাবি করেন, ‘‘বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীদের দেশে ফেরত পাঠানোর কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কাজে অস্বীকৃতি, বাংলাদেশে যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব, ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা এবং সৌদি আরবের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পার৷''
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরন
বিভিন্ন নিয়োগকারী অফিসের মালিকরা জানান, ‘‘একজন গৃহকর্মীকে যাচাই করার জন্য গ্রাহকরা তিন মাস সময় পান৷ আর এ সময়ের মধ্যে সে গৃহকর্মী যদি অদক্ষ বলে বিবেচিত হন, তাহলে তারা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর সে তথ্য জানান এবং গৃহকর্মীকে ফেরত দেন৷ পাশাপাশি গৃহকর্মীর অযোগ্যতার কারণ জানিয়ে দূতাবাস বরাবর নোটিশও পাঠানো হয়৷ এরপর নিয়োগকারী অফিস থেকে গৃহকর্মীদের নিজ নিজ দূতাবাসে হস্তান্তর করা হয়৷ আর তখনই দূতাবাসে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়৷''
আলি আল-ওমারি নামে আরেক নিয়োগকারী অফিসের মালিক জানান, ‘‘নারী গৃহকর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে দেড় লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে৷ তবে ভিসার বিপরীতে সবাই সৌদি আরবে যাননি৷''
সৌদি আরবে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের সূত্র উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ‘‘সৌদি আরবে পাঠানোর আগে গৃহকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রশিক্ষন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, কেননা, টাকা উপার্জনই বর্তমান বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর মূল উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''
এদিকে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ‘‘বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের কাজে অনীহার কারণ ভিন্ন৷ তাঁরা নির্যাতনের শিকার এবং তাঁদের বেতনও খুব কম দেয়া হয়৷ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ মাসে ১৫০ জন বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মী সৌদি আরবের কর্মক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেছেন৷ সে সময় রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, তিনটি কারণে নারী গৃহকর্মীরা তাদের কাজ ছেড়ে পালাচ্ছেন৷ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে – গৃহকর্মীদের দিয়ে কঠিন কাজ করানো, গৃহকর্মীদের নিজের বাড়ির প্রতি দুর্বলতা থাকা এবং গৃহকর্তার কাছ থেকে নানা দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের শিকার হওয়া৷
যে ১০ জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ বিদেশে গেছেন
বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫৭ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫৪০ জন বাংলাদেশি কর্মসূত্রে বিদেশে গেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Naamani
১. কুমিল্লা
সবচেয়ে বেশি গেছে এই জেলা থেকে৷ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বলছে, ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কুমিল্লা থেকে মোট ৬ লক্ষ ১৯ হাজার ১৩৮ জন বিদেশ গেছেন, যেটা রপ্তানি হওয়া মোট জনশক্তির প্রায় ১০.৯৪ শতাংশ৷
আপনি যদি এই ১০ জেলার না হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জেলার তথ্য জানতে উপরে ‘+’ চিহ্ন ক্লিক করুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Naamani
11 ছবি1 | 11
কেবল বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীরাই নয়, সৌদি নাগরিকদের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ অন্য দেশগুলোও করেছে৷ গত বছর সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীর ওপর যৌন নির্যাতনের একটি খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে নিন্দার ঝড় তুলেছিল৷ সেবার গৃহকর্মীর ওপর যৌন নির্যাতন চালাতে গিয়ে স্ত্রীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন এক সৌদি নাগরিক৷ স্বামীর আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে সেই নারী ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন৷
একই বছর এক ভারতীয় গৃহকর্মী তার কাজ থেকে মুক্তি চাইলে গৃহকর্তা তার ওপর হামলে পড়েন৷ কেবল তাই নয়, ক্ষুব্ধ হয়ে গৃহকর্তা একটি ছুরি দিয়ে ওই গৃহকর্মীর হাত কেটে ফেলেন৷
কেমন আছে অন্য দেশের গৃহকর্মীরা?
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের অবস্থা কখনই ভালো ছিল না, এখনও নেই৷ তাঁদের রক্ষায় নেই কোনো আইন৷ কিন্তু বিশ্বের আর অন্যান্য দেশে তাঁদের কী অবস্থা? সেই তথ্যই থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/L. Hurley
পাঁচ কোটি ৩০ লক্ষ
২০১৩ সালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, আইএলও-র এক প্রতিবেদন বলছে, সারা বিশ্বে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৫৩ মিলিয়ন৷ এর মধ্যে ৮৩ শতাংশই নারী৷ তবে প্রকৃত সংখ্যাটি যে আরও কয়েক মিলিয়ন বেশি হতে পারে, সে কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এদিকে ১৫ বছরের কমবয়সি শিশু গৃহকর্মীদের সংখ্যা আইএলও-র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি – ২০০৮ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৭৪ লক্ষ৷
ছবি: AP
আইনের বাইরে
আইএলও-র প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের গৃহকর্মীদের প্রায় ৩০ শতাংশই শ্রম আইনের সুবিধাবঞ্চিত৷
ছবি: DW
সাপ্তাহিক ছুটি
বিশ্বের প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) গৃহকর্মী সাপ্তাহিক ছুটি পান না৷ তাছাড়া তাঁদের এমন কোনো বার্ষিক ছুটি নেই, যার জন্য তাঁদের অর্থ প্রাপ্য (পেইড লিভ)৷
ছবি: DW/M. Krishnan
প্রসূতি সুরক্ষা
প্রতি তিনজনের একজন গৃহকর্মী এই সুবিধা পায় না বলে জানিয়েছে আইএলও৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার!
গৃহকর্মী মানেই যেন কম টাকা দিয়ে বেশি ঘণ্টা কাজ করানো৷ এভাবে গৃহকর্মীদের প্রতারিত করে তাঁদের নিয়োগদাতারা অবৈধভাবে বছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স ফেডারেশন’৷
ছবি: imago/imagebroker
‘কাফালা’ যেন দাসপ্রথার অন্য রূপ
গাল্ফ দেশগুলোতে এই ব্যবস্থা থাকার কারণে গরিব দেশ থেকে সেখানে যাওয়া গৃহকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তাঁদের নিয়োগদাতাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে না৷ কারণ কাফালা ব্যবস্থার কারণে নির্যাতিতরা চাইলেও নিয়োগদাতার ছাড়পত্র ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারেন না৷ ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন’ এই অবস্থাকে দাসত্বের সঙ্গে তুলনা করেছে৷ আইএলও-র হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ২১ লক্ষ৷
ছবি: AP
হংকংয়ে গৃহকর্মীদের অবস্থা
তিন হাজার গৃহকর্মীর উপর চালানো এক জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৮ শতাংশ বলেছে, তাঁদের মৌখিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে৷ ১৮ শতাংশ তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতনের কথা বলেছে৷ আর যৌন হয়রানির কথা জানিয়েছে ৬ শতাংশ৷
ছবি: Miguel Candela/TRANSTERRA
বাড়ি তো নয়, যেন কারাগার!
উন্নত দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও ভালো নেই গৃহকর্মীরা৷ ২০১৪ সালের এক প্রতিবেদনে সেখানে গৃহকর্মীদের সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা কাজ করানো, বেতন না দেয়া ও শারীরিক নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে৷ প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িগুলোকে ‘কারাগার’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে৷
ছবি: Fotolia/apops
একা বাড়ির বাইরে নয়
না, ছোট্ট শিশুদের কথা বলা হচ্ছে না৷ ইংল্যান্ডের মতো দেশে প্রায় ৬০ শতাংশ গৃহকর্মীদের একা বাড়ির বাইরে যেতে দেয়া হয় না বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘কালায়ন’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/L. Hurley
9 ছবি1 | 9
বাংলাদেশের জনশক্তি বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শুধু শারীরিক নয়, বাংলাদেশের নারী গৃহকর্মীদের ওপরও যৌন নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে৷ নির্যাতিতরা নানা কারণে তা প্রকাশ করেন না৷ তাদের সঙ্গে দাসের মতো আচরণ করার অভিযোগও আমরা পাই৷''
কিরন বলেন, ‘‘এই কারণে ফিলিপাইনস, শ্রীলঙ্কা সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধ রেখেছে৷ আমাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে৷ বাংলাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টি রহস্যজনক কারণে আমলে নিচ্ছে না৷''
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরো বলেন, ‘‘মজুরিতে বাংলাদেশের নারী গৃহকর্মীদের ঠকানো হয়৷ যে মজুরির কথা বলা হয় তা দেয়া হয় না৷ তাঁরা সৌদি আরবে যা আয় করেন, তা এখন বাংলাদেশে বসেই আয় করা সম্ভব৷''
তিনি বলেন, ‘‘সরকারের দ্রুত এ বিষয়গুলো আমলে নিয়ে করণীয় ঠিক করা উচিত৷ যদি সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠাতেই হয় তাহলে তা সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) ভিত্তিতে নয়, সুনির্দিষ্ট চুক্তির অধীনে পাঠানো উচিত, যে চুক্তিতে বেতন, ক্ষতিপূরণ এ সব আইনগত অধিকারের বিসয়গুলো সুনির্দিষ্ট থাকবে৷''
প্রসঙ্গত, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ১ লাথ ২০ হাজার নারী গৃহকর্মী নেয়ার সমঝোতা স্মারক সই করে৷ তবে আট বছর ধরে দেশটি বাংলাদেশ থেকে পুরুষ শ্রমিক নেয়া বন্ধ রেখেছে৷
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের দুর্দশার কথা
পশ্চিমা বিশ্ব যখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে, বাংলাদেশে তখনও ঘরের কাজ করছেন গৃহকর্মীরা৷ মাসে তাঁদের গড় বেতন ৫১০ টাকা, কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷ আর ঘুমাতে হয় রান্না ঘরের মেঝেতে৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/Godong
মাসিক বেতন ৫১০ টাকা
পশ্চিমা বিশ্ব এখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে৷ এই নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা৷ তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ সেদেশে ঘরের কাজের জন্য অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছেন গৃহকর্মী৷ যাঁদের মাসিক গড় বেতন ৫১০ টাকা৷ আর দিনে কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷
ছবি: imago/Michael Westermann
৮৩ শতাংশ নারী
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন বা আইটিইউসি ২০১২ সালে বাংলাদেশের গৃহকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে গৃহকর্মীর সংখ্যা বিশ লাখের মতো৷ এঁদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ নারী, যাঁদের অনেকে বয়সে শিশু কিংবা তরুণী৷
ছবি: imago/imagebroker
মেঝেতে ঘুমানো
আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গৃহকর্মীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ রাতে রান্নাঘরে ঘুমান৷ এছাড়া বসার এবং শোয়ার ঘরের মেঝেতে ঘুমান গড়ে ২০ শতাংশ করে গৃহকর্মী৷ কারো কারো আবার ঘুমাতে হয় স্টোর রুমে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
অন্যায়, নির্যাতন
অধিকাংশ গৃহকর্মী বা কাজের মেয়ে পড়ালেখার সুযোগ পান না৷ বিনোদনেরও অভাব রয়েছে৷ কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ গৃহকর্মীর সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলা হয়৷ কাজ হারানোর আতঙ্কও কাজ করে তাঁদের মধ্যে৷ যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর সংখ্যা ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
প্রাণহানি
২০০১ থেকে ২০১০ সাল সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ৩৯৮ গৃহকর্মী প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ বা বিলস৷ এছাড়া নির্যাতনে আহত গৃহকর্মীর সংখ্যা ২৯৯৷ আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যের উৎস বিলস এবং ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/GrafiStart
জনসচেতনতা সৃষ্টি
গৃহকর্মীদের অধিকারের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন উদ্যোগও রয়েছে বাংলাদেশে৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এক্ষেত্রে সক্রিয়৷ এই নেটওয়ার্ক ১৪ বছরের কম বয়সিদের গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে৷
ছবি: imago/epd
ঘরে আটকে রাখা নয়
বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো অনেক সময় গৃহকর্মীদের ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে রাখা হয়৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এই কাজের তীব্র বিরোধীতা করেছে৷ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নীতির আওতায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে নেটওয়ার্কটি৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি
গৃহকর্মী বা গৃহশ্রমিকদের ‘শ্রমিক হিসেবে’ স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ ‘বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্ট-২০০৬’-এ গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷