গান্ধী পরিবারের একসময়কার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নটবর সিং তাঁর লেখা বইয়ে গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেস রাজনীতির হাঁড়ির খবর ফাঁস করে দেয়ায় কংগ্রেস মহলে বিতর্কের ঝড় উঠেছে৷
বিজ্ঞাপন
এর পাল্টা জবাব দিতে সোনিয়া গান্ধী নিজে একটা বই লেখবেন বলে জানিয়েছেন, যেন প্রকৃত সত্যটা বের হয়৷
প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নটবর সিং কংগ্রেস পার্টি এবং মনমোহন সিং-এর কংগ্রেস-জোট মন্ত্রিসভা থেকে বিতাড়িত হবার আট বছর পর ‘ওয়ান লাইফ ইজ নট এনাফ' নামে একটি আত্মজীবনীমূলক বই লিখে একেবারে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন গান্ধী পরিবারের৷
একজন নরেন্দ্র মোদী
উগ্র সাম্প্রদায়িক আদর্শ এবং বিভাজনের রাজনীতির কারণে ভারতের বহু মানুষের কাছে তিনি খলনায়ক৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে নতুন মোড়কে সামনে এনে সেই নরেন্দ্র মোদীই শোনাচ্ছেন ভারতকে বদলে দেয়ার মন্ত্র৷
ছবি: dapd
চা ওয়ালা
১৯৫০ সালে গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশরে বাবাকে সাহায্য করতে রেল ক্যান্টিনে চা বিক্রি করেছেন৷ ঘাঞ্চি সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক বালিকার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়, যদিও বেশিদিন সংসার করা হয়নি৷ ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও মোদী বিতর্কে ছিলেন ওস্তাদ৷ ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে রাজনীতির দরজায় পা রাখেন মোদী৷
ছবি: UNI
গুজরাটের গদিধারী
১৯৮৫ সালে আরএসএস থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়ার ১০ বছরের মাথায় দলের ন্যাশনাল সেক্রেটারির দায়িত্ব পান ১৯৯৫ সালে গুজরাটের নির্বাচনে চমক দেখানো মোদী৷ ১৯৯৮ সালে নেন দলের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব৷ ২০০১ সালে কেশুভাই প্যাটেলের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দলের মনোনয়নে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আবির্ভূত হন নরেন্দ্র মোদী, যে দায়িত্ব তিনি এখনো পালন করে চলেছেন৷
ছবি: Reuters
দাঙ্গার কালিমা
মোদীকে নিয়ে আলোচনায় ২০০২ সালের দাঙ্গার প্রসঙ্গ আসে অবধারিতভাবে৷ স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গুজরাটে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন৷ মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি দাঙ্গায় উসকানি দেন৷ তিনি এ অভিযোগ স্বীকার করেননি, আদালতও তাঁকে রেহাই দিয়েছে৷ তবে দাঙ্গার পক্ষে কার্যত সাফাই গেয়ে, হিন্দুত্ববাদের গান শুনিয়েই তিন দফা নির্বাচনে জয় পান মোদী৷
ছবি: AP
রূপান্তর
দাঙ্গার পর নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেন নরেন্দ্র মোদী৷ একজন বিতর্কিত নেতার বদলে উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দিতে শুরু হয় ‘গুজরাট মডেল’-এর প্রচার৷ ২০০৭ সালের পর নিজেকে একজন সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে তুলে ধরতে নতুন প্রচার শুরু করেন এই বিজেপি নেতা, প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্র্যান্ড মোদী’৷গুজরাটের উন্নয়নের চিত্র দেখিয়ে কলঙ্কিত ভাবমূর্তিকে তিনি পরিণত করেন ভারতের ত্রাতার চেহারায়৷
ছবি: UNI
ভারতের পথে পথে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে নরেন্দ্র মোদী পাড়ি দিয়েছেন তিন লাখ কিলোমিটার পথ৷ সারা ভারতে পাঁচ হাজার ৮২৭টি জনসভায় তিনি অংশ নিয়েছেন, নয় মাসে মুখোমুখি হয়েছেন পাঁচ কোটি মানুষের৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবে শুরু করলেও এবার তিনি হিন্দুত্ব নিয়ে প্রচার এড়িয়ে গেছেন সচেতনভাবে, যদিও বাংলাদেশের মানুষ, ভূখণ্ড এবং ধর্ম নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতাদের বক্তব্য নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: AP
নতুন ইতিহাস
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটই যে এবার ভারতে সরকারগঠন করতে যাচ্ছে, বুথফেরত জরিপ থেকে তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ ৬৩ বছর বয়সি মোদীর নেতৃত্বে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি৷ ৭ই এপ্রিল থেকে ১২ই মে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮১ কোটি ৪০ লাখ৷ তাঁদের মধ্যে রেকর্ড ৬৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শেষ হাসি
নির্বাচনে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল – মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে, গুজরাটের আদলে তিনি ভারতকে বদলে দেবেন৷ অবশ্য সমালোচকরা বলছেন, ‘কলঙ্কিত ভাবমূর্তি’ ঢাকতে এসব মোদীর ফাঁপা বুলি৷ তাঁর স্বৈরাচারী মেজাজ, শিক্ষা ও অর্থনীতির জ্ঞান নিয়েও ঠাট্টা-বিদ্রুপ হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, ভোটাররা টানা তৃতীয়বার কংগ্রেসকে চায়নি বলেই বিজেপি জয় পেয়েছে৷ যদিও শেষ হাসি দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর মুখেই৷
ছবি: dapd
7 ছবি1 | 7
কি লিখেছেন তিনি?
প্রথম বোমাটি ফাটিয়েছেন এই বলে যে, দশ বছর আগে ২০০৪ সালে কংগ্রেস নির্বাচনে জেতায় দলনেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হবার কথা ছিল সোনিয়া গান্ধীর৷ কিন্তু ছেলে রাহুল গান্ধীর আপত্তিতে তিনি সরে দাঁড়ান৷ তাঁর জায়গায় ড. মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী করেন৷ কিন্তু আসল কারণটা গোপন করে সোনিয়া গান্ধী সেসময় দেশের সামনে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বলেছিলেন, ক্ষমতার প্রতি তাঁর লোভ নেই, স্রেফ ‘অন্তরাত্মার ডাকে' তিনি মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছেন৷ সোনিয়া গান্ধীর তথাকথিত আত্মত্যাগকে মূলধন করে প্রচার চালিয়ে এসেছে কংগ্রেস পার্টি৷
নটবর সিং তাঁর বইয়ে লিখেছেন, এটা মিথ্যা৷ আসলে ছেলে রাহুল গান্ধীই মাকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেননি৷ কারণ রাহুলের মনে হয়েছে, এতে মায়ের প্রাণনাশের আশঙ্কা আছে৷ কাজেই সোনিয়ার আত্মত্যাগের বড়াই আর ধোপে টেকে না৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিং-এর মতো একজনকে শিখণ্ডী খাড়া করে সরকার এবং দলে তিনিই ছড়ি ঘুরিয়ে এসেছেন৷ সোনিয়ার সবুজ সংকেত না পেলে সরকারের কোনো কাজই হতো না, এমনটাই লিখেছেন নটবর সিং৷ সোনিয়াকে তিনি বর্ণনা করেছেন কর্তৃত্বপ্রিয়, খেয়ালি এবং স্বৈরাচারী স্বভাবের মহিলা বলে৷
রাজীব গান্ধী সম্পর্কে বক্তব্য
রাজীব গান্ধী সম্পর্কে নটবর লিখেছেন, তিনি রাজনীতি বা কূটনীতি তেমন বুঝতেন না৷ রাজীব গান্ধীর পররাষ্ট্রনীতি ছিল ভুল, নাহলে শ্রীলংকার তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদী এলটিটিই জঙ্গি সংগঠনকে দমন করতে শ্রীলংকায় সেনা অভিযান চালাতেন না৷ আর তারই পরিণামে রাজীব গান্ধীকে তামিল আত্মঘাতী বোমা হামলায় বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয়৷ তাঁর ভুল পররাষ্ট্রনীতির জন্যই এটা হয়েছে৷ তবে এইসব কথা অতিরঞ্জিত বলে উড়িয়ে দেয়া যেত, বা এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেত, যদি না বই প্রকাশের আগে সোনিয়া গান্ধী স্বয়ং এবং তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী গোপনে নটবর সিং-এর বাড়িতে গিয়ে ঐসব কথা না লেখার জন্য তাঁকে অনুরোধ করতেন৷ অর্থাৎ নটবর সিং এমন সব কথা জানেন যা ফাঁস করলে গান্ধী পরিবার এবং কংগ্রেস পার্টি বেকায়দায় পড়বে৷
ভারতের চা বিক্রেতাদের কথা
রেশম গেলাটলি এবং জ্যাক মার্কস-এর প্রকল্পের নাম ‘ভারতের চায়েওয়ালা’৷ এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ভারত চষে বেড়াচ্ছেন তাঁরা৷ তাঁদের মতে, ‘চায়ে’ বা চা ভারতের সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ এই নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
রাস্তায় ‘চায়ে’
ভারতের প্রায় প্রতিটি রাস্তার কিনারে ‘চায়ে’ বা চা বিক্রেতাদের দেখা মেলে৷ প্রত্যেক বিক্রেতার আবার রয়েছে নিজস্ব ‘রেসিপির’ চা৷ ছবিতে মুম্বই হাইকোর্টের কাছের চা বিক্রেতা বংশী তাঁর খদ্দেরের হাতে চা তুলে দিচ্ছেন৷ অনেক আইনজীবী, এমনকি বিচারকও বংশীর চায়ের বিশেষ ভক্ত৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
‘টি(ম) গেম’
এই ছবিটি রাজস্থানের ক্লক টাওয়ার মার্কেটের সামনে অবস্থিত শ্রী রাম টি স্টলের৷ মহিন্দ্র তাঁর খদ্দেরদের মাঝে চা বিতরণ করছেন৷ তিনিসহ তিনজনের একটি দল দোকানটি চালাচ্ছেন৷ রাজা চা তৈরি করেন, হরেশ কাগজের কাপে করে মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে চা পৌঁছে দেন এবং মহিন্দ্র গ্লাস কাপে খদ্দেরদের চা দেন৷ চার কাপ চা এক হাতে ধরে নিয়ে যেতে বিশেষ পারদর্শী মহিন্দ্র৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
নারীর একক চেষ্টা
কলকাতার একটি আধুনিক শপিং কমপ্লেক্সের সামনে চা বানান মীনাক্ষী৷ পুরো চায়ের দোকান প্রায়শই একা সামলান তিনি৷ তাঁর স্বামী বাড়িতে তাদের চার বছরের ছেলেকে দেখাশোনা করেন৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
তারকাদের জন্য চা
বলিউড ছবি তৈরির সেটে ‘স্পট বয়দের’ দেখা মেলে, যাদের কাজ হচ্ছে ক্যামেরার ভারি যন্ত্রপাতি সরানো এবং চা তৈরি৷ বলিউডের বড় তারকাদের চা পান করিয়ে মুম্বইয়ে বেশ নাম করেছেন ছট্টু৷ প্রিয় তারকা সম্পর্কে জানতে চাইলে কূটনৈতিক সুরে ছট্টুর জবাব, ‘‘আমি নির্দিষ্ট একজনকে প্রিয় বলতে পারিনা, কারণ আমি সবার সঙ্গেই কাজ করি৷’’
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
কখনোই বুড়ো নয়
৭৩ বছরের জীবনের অধিকাংশ সময় কলকাতার বড় বাজারে পশু পালন করেছেন শিবনাথ রাই যাদব৷ কিন্তু দশ বছর আগে তাঁকে বলা হয় পশুর খামার শহরের বাইরে সরিয়ে নিতে৷ তখন চা বিক্রির নতুন পেশা শুরু করেন তিনি৷ তিনি চা তৈরিতে কোন পানি ব্যবহার করেন না৷ শুধু দুধ দিয়ে চা বানান৷ আর এটাই শিবনাথের বৈশিষ্ট্য৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
দৈনিক আয় বারো ইউরো
গঙ্গা নদীর তীরে একটি পিঁড়িতে বসে চা, বিস্কিট এবং সিগারেট বিক্রি করেন সুনীতা দেবী৷ তাঁর চায়ের খদ্দের মূলত নদীর এ পাড় থেকে ও পাড় মানুষ পারাপারের কাঠের নৌকার মাঝিরা৷ সুনীতা দিনে গড়ে দু’শো কাপ চা বিক্রি করেন৷ ইউরোর হিসেবে তাঁর দৈনিক আয় বারো ইউরোর মতো৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
পুজার সময় সারা রাত খোলা
শোভন বরওয়ার চায়ের দোকানের অবস্থান কলকাতার আলীপুরে৷ সাধারণ রাত দশটা পর্যন্ত দোকান খেলা রাখেন তিনি৷ কিন্তু দুর্গা পুজার সময় ভোর পাঁচটা অবধি চা বেঁচেন তিনি৷ পুজা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা রাত জেগে বিভিন্ন প্যান্ডেল ঘুরতে চান৷ তাই তাদের সজাগ রাখতে সারারাত চা বেচেন শোভন৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
যাত্রীদের সহায়তা
গনেশের চায়ের দোকানের অবস্থান বিহারের পাটনা ট্রেন স্টেশনে৷ এই ছবি যখন তোলা হয়, তখন রাতের শেষ পট চা চুলায় চড়িয়েছেন তিনি৷ গনেশের দোকানের পাশেই রয়েছে আরেকটি চায়ের দোকান৷ তবে দুই দোকানি একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন না৷ বরং দু’টি দোকান হওয়ায় ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের কাছে দ্রুত চা পৌঁছানো যায়, এতেই সন্তুষ্ট গনেশ৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
‘চায়ে ওয়ালা’ প্রকল্প
মার্কিন সাংবাদিক রেশম গেলাটলি (বামে) এবং জ্যাক মার্কস (ডানে) ২০১০-২০১১ সালে ভারতে বসবাসের সময় প্রথম চাওয়ালাদের সঙ্গে পরিচিত হন৷ পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের চাওয়ালাদের কথা জানতে এবং তাদের কথা গোটা বিশ্বকে জানাতে আগ্রহী হন তারা৷ আর সেই আগ্রহ থেকেই চলছে তাদের প্রকল্প ‘ভারতের চায়ে ওয়ালা’৷
ছবি: R. Gellatly/Z. Marks
9 ছবি1 | 9
কংগ্রেসের বক্তব্য
কংগ্রেস পক্ষের মন্তব্য, সোনিয়া গান্ধীর ওপর প্রতিশোধ নিতেই এটা লেখা হয়েছে৷ আর মায়ের প্রাণনাশের দুশ্চিন্তা ছেলে হিসেবে রাহুলের থাকতেই পারে৷ এটাই তো স্বাভাবিক৷ কারণ ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধী এবং বাবা রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড তিনি ভুলতে পারেন না৷ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বলেছেন, ঘরোয়া আলোচনায় এমন অনেক কথাই হয়, সেটাকে বই বিক্রি বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা অনুচিত৷ আর সোনিয়া গান্ধীর মন্তব্য, এর জবাব তিনি দেবেন পাল্টা বই লিখে৷ সেই লেখা পড়লেই সকলে আসল সত্যটা জানতে পারবে৷ পাল্টা মন্তব্য নটবর সিং-এর৷ বলেছেন সোনিয়া গান্ধীর মতো এক জাতীয় ব্যক্তিত্বের অবশ্যই বই লেখা উচিত৷
যে কারণে নটবর সিং বিতাড়িত হয়েছিলেন
নেহেরু-গান্ধী জমানা থেকেই গান্ধী পরিবারের কাছের লোক ছিলেন প্রাক্তন কূটনীতিবিদ নটবর সিং৷ পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে অবসর নেবার পর ১৯৮৪ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন৷ রাজীব গান্ধী মন্ত্রিসভার সদস্য হন৷ প্রথম মনমোহন সিং মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন৷ কিন্তু ইরাকের সঙ্গে তেলের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্প কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি৷ বিচার বিভাগীয় কমিশন নটবর সিংকে দোষী সাব্যস্ত করেন৷ তারপর সোনিয়া গান্ধী এবিষয়ে কড়া অবস্থান নেওয়ায় তাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিতে হয়৷ তিক্ততার শুরু এখান থেকেই৷
প্রশ্ন এত বছর পরে কেন এইসব কথা? পর্যবেক্ষকদের মতে, তবে কি বিজেপি সরকার আসার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি? কারণ কংগ্রেসের এখন ঘোর দুর্দিন৷ সংসদীয় নির্বাচনে কংগ্রেসের কোমর ভেঙে গেছে৷ সামনে চারটি রাজ্যের বিধানসভা ভোট৷ তার আগে কংগ্রেস সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস যখন আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, ঠিক সেই সময়ে এই ‘বই-বোমা' বিস্ফোরণ কংগ্রেসকে বেকায়দায় ফেলতে পারে৷