লোকজন এককালে ন্যাভিগেটর ছাড়া যে কি করে গাড়ি চালাতেন, তারাই জানেন! আজকাল তো পর্বতারোহীরা পাহাড়ে চড়ার আগে পাহাড়ের ‘স্ট্রিট ভিউ' দেখে নেন ইন্টারনেটে৷
বিজ্ঞাপন
না, গুগুল নয়, এর পিছনে রয়েছেন এক সুইস অ্যাল্পিনিস্ট, যিনি ক্যামেরা কাঁধে আইগার নর্থ ফেসে ওঠেন – যাতে আমরা সোফায় বসেই পর্বতারোহী হতে পারি৷ স্টেফান সিগরিস্ট পাহাড়ের চুড়োয় উঠছেন এবং কোনো বাড়তি কষ্ট না করেই তিনি দারুণ সব ভিডিও ছবি সংগ্রহ করছেন৷ সুইজারল্যান্ডের নাগরিক সিগরিস্ট-এর পিঠের ব্যাগে যে ক্যামেরার সরঞ্জাম রয়েছে, তা তাঁর পাহাড়ে চড়াকে ভিডিও ছবিতে ধরে রাখছে৷ প্রকল্পটির ওয়েবসাইটে এই সব ফটো ও ফিল্ম দেখতে পাওয়া যাবে৷ আল্পস পর্বতমালার সমস্যাকর পর্বতারোহণের মূল অংশগুলি একটি ক্লিকেই দেখতে পাওয়া যাবে৷ ছবিগুলো থেকে বাস্তবিক পর্বতারোহণের রোমাঞ্চ অনুভব করা যাবে৷ স্টেফান সিগরিস্ট বলেন:
‘‘আমরা কীভাবে পাহাড়ে চড়ি, তা দেখা যাচ্ছে৷ পরিশ্রম করতে হয়; বরফের অনুভূতি; জুতোর তলার ক্র্যাম্পন বা কাঁটাগুলোর আওয়াজ; অন্যান্য সতীর্থদের জন্যে চিন্তা-ভাবনা৷ এটা সত্যিই আশ্চর্য যে, আমার নিজেরই মনে হয়, আমি যেন এই মুহূর্তে পাহাড়ে চড়ছি, আমি ওপরদিকে তাকাতে পারি, নীচের দিকে তাকাতে পারি৷ পুরো দৃশ্যটা দেখায়, ঠিক যখন আমরা পাহাড়ে চড়ছিলাম, তখনকার মতো৷''
সুইজারল্যান্ডের ‘‘মামুট'' কোম্পানি এই ৩৬০ ডিগ্রি ঘিরে ছবি তোলার টেকনিক আবিষ্কার করেছে৷ আসলে ছ'টি ছোট ক্যামেরা সব দিকের ছবি তুলছে৷ ‘মামুট'-এর মার্কেটিং ম্যানেজার ক্রিস্টিয়ান গিজি বলেন: ‘‘প্রকল্পটির বুনিয়াদি ধারণা হলো পাহাড়গুলোর এক ধরনের ‘গুগল স্ট্রিট ভিউ' তৈরি করা – এবং শুধু ট্রেকিং রুটগুলোর জন্যই নয়, বরং সত্যিই খাড়া পাহাড়ে চড়ার অ্যাল্পাইন রুটগুলোর জন্যও বটে৷ মানুষজন আরাম করে তাদের সোফা থেকেই বিনা বিপদে আইগার নর্থ ফেসে চড়ার মজা উপভোগ করতে পারবেন৷''
হাতের মুঠোয় স্বপ্নের মায়াজাল
কল্পবিজ্ঞান নয়, উইন্ডোস চশমা পরে হাত নাড়িয়ে ত্রিমাত্রিক জগতে প্রবেশ করা যাবে কিছুদিন পরেই৷ হাতের ঘড়িই হয়ে উঠছে স্মার্টফোনের সম্প্রসারিত সংস্করণ৷ প্রযুক্তির জগতে এসে চলেছে এমন একের পর এক চমক৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Elaine Thompson
মাইক্রোসফট-এর হলো-লেন্স
কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা স্মার্টফোনের পর্দা নয়, চারিপাশের বাস্তব জগতের মধ্যেই থ্রিডি ভারচুয়াল কম্পিউটিং এনে দেবে মাইক্রোসফট-এর হলো-লেন্স৷ হলো-লেন্স প্রযুক্তিতে চশমা পরে শুধু আঙুলের ইশারায় আপনার পছন্দমতো ফুটে উঠবে সব কিছু৷ চাইলে এমনকি মঙ্গলগ্রহের বুকেও হেঁটে বেড়াতে পারবেন৷ উপরে ডানদিকে + চিহ্নে ক্লিক করে এখনই তার স্বাদ পেতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Elaine Thompson
সিস্টেম এক, ডিভাইস অনেক
এতকাল কম্পিউটার, ট্যাবলেট ও স্মার্টফোন ছিল পরস্পরের থেকে আলাদা৷ কিছু ক্ষেত্রে শুধু ‘সিনক্রোনাইজ’ করা যেত৷ ‘উইন্ডোস টেন’ এই সব ডিভাইসকেই একই সূত্রে বেঁধে ফেলতে চলেছে৷ ফলে স্মার্টফোনে কাজ শুরু করে ট্যাবলেট বা ল্যাপটপে সেটি শেষ করতে আর অসুবিধা হবে না৷
ছবি: Joe Raedle/Getty Images
স্মার্টফোনই হবে কম্পিউটারের প্রতিফলন
‘উইন্ডোস টেন’ এমনকি স্মার্টফোনের মধ্যেও কম্পিউটারের কাজ সেরে ফেলতে পারবে৷ মাইক্রোসফট অফিস তো থাকবেই, এছাড়াও পেশাগত অনেক কাজ সেরে ফেলা যাবে ফোনের মধ্যে৷ তবে স্মার্টফোনের বাজার দখলের ক্ষেত্রে এতকাল অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপেল-এর তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে মাইক্রোসফট৷ নতুন অপারেটিং সিস্টেম সেই প্রবণতা বদলাতে পারে কিনা, সেটাই দেখার জন্য অপেক্ষা করছে প্রযুক্তি জগত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অ্যাপল-এর সাফল্য
ব্র্যান্ড হিসেবে অ্যাপল কোম্পানি এই মুহূর্তে তার সাফল্যের তুঙ্গে৷ বিশ্বের অন্য কোনো কোম্পানি একটি মাত্র কোয়ার্টারে ১৮ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করতে পারেনি, যেমনটা অ্যাপল সম্প্রতি করে দেখালো৷ নতুন আইফোন বিক্রির ফলেই এই অভাবনীয় আর্থিক সাফল্য এসেছে৷
ছবি: Getty Images/J. Sullivan
আইফোন
হার্ডওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেম – দুটোই নিজে তৈরি করে আসছে অ্যাপেল৷ বিশেষ করে আইফোন-এর ক্ষেত্রে ব্যবসার এই মডেল সার্থক প্রমাণিত হয়েছে৷ শুধু অসাধারণ ফিচার্সের কারণে নয়, অনেকের কাছে হালের আইফোন থাকাটা ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’-ও৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ঘড়ির মধ্যেই জগত
আইফোন-এর সাফল্য আইওয়াচ-এর ক্ষেত্রেও ঘটবে বলে আশা করছে অ্যাপল কোম্পানি৷ একদিকে আইফোন-এর যোগ্য সঙ্গী হবে এই ঘড়ি, অন্যদিকে কবজিতে থাকার ফলে রক্তচাপ সহ শরীরের অন্যান্য অনেক ক্রিয়াও নিয়মিত মাপতে পারবে এই ডিভাইস৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Davey
সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড
সংখ্যার বিচারে অ্যাপল-এর তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে গুগল কোম্পানির অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম৷ বিশ্বে স্মার্টফোনের বাজারে তাদের আধিপত্য নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ আইফোনের তুলনায় অনেক সস্তায় বিক্রি হয় একাধিক কোম্পানির অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন৷
ছবি: Getty Images
চীন থেকে নতুন চ্যালেঞ্জ
অ্যাপল, গুগল বা মাইক্রোসফট-এর মতো অ্যামেরিকান কোম্পানির আধিপত্যে ভাগ বসাতে চায় চীনের ‘শিয়াওমি’ কোম্পানি৷ স্মার্টফোন সহ অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে বিশ্বের বাজারে বড় আকারে প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা৷ তাদের হালের ‘মি নোট’ স্মার্টফোন নাকি ‘আইফোন সিক্স’-কে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে৷
ছবি: AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
আইগার পর্বতের উত্তরদিকের খাড়াইটা বিশ্বের কঠিনতম পাহাড়ে চড়ার পথগুলোর মধ্যে পড়ে৷ ৬০ জনের বেশি মানুষ এই আইগার নর্থ ওয়ালে চড়তে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন৷ স্টেফান সিগরিস্ট পেশাদার পর্বতারোহী৷ তিনি জানালেন: ‘‘গোটা প্রাকারটা পার হয়ে চার হাজার মিটার উচ্চতায় পৌঁছাতে খাড়া চার কিলোমিটার পাহাড়ে চড়তে হয়৷ পাথরের নানা সমস্যা আছে, বরফের সমস্যা, বেশ ভালোমতো উচ্চতায় সেই সব সমস্যার সমাধান করতে হয়৷''
অভিজ্ঞ অ্যাল্পস পর্বতারোহী, যাদের অ্যাল্পিনিস্ট বলা হয়, তারাও যখন প্রথমবার আইগার নর্থ ফেসে চড়েন, তখন প্রথমে পথটা ইন্টারনেটে দেখে নিতে পারেন – তাতে তাঁদের সুবিধাই হয়৷ আসল কথা, স্টেফান সিগরিস্ট-এর কল্যাণে আমরা সকলেই আজ পাহাড়ে না চড়েই পর্বতারোহী হতে পারি৷