১১ জনকে বিয়ে করেছিলেন সোমালীয় এক নারী৷ বহুগামিতার অভিযোগে তাঁকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলেছে আল-শাবাব ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠী৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/F. A. Warsameh
বিজ্ঞাপন
সোমালিয়ার লোয়ার শ্যাবেলে এলাকার সাবলালে জেলা৷ এখানকার বাসিন্দা ৩০ বছরের শুকরি আবদুল্লাহি৷ অভিযোগ, তিনি একের পর এক ১১ জন পুরুষকে বিয়ে করেছেন৷ অথচ কারও সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাননি৷ বহুগামিতার দায়ে তাঁর বিচার হয় সাবলালের একটি আদালতে৷ জঙ্গিদের দ্বারা পরিচালিত এই আদালতে মহিলা নিজের দোষ কবুল করেন বলে দাবি আল-শাবাবের নিজস্ব বেতার সংস্থা আন্দালুস-এর৷ মহিলার স্বীকারোক্তির কথা জানিয়েছেন আদালতের স্বঘোষিত বিচারক৷
বিশ্বের ভয়ংকর পাঁচ জঙ্গি সংগঠন
তথাকথিত জঙ্গিদের কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ অনেকেরই ধারণা তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-ই সবচেয়ে ভয়ংকর জঙ্গি গোষ্ঠী৷ কিন্তু বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচি বা গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Lieman
বোকো হারাম
ইসলামিক স্টেট বা আইএস নয়, বিশ্বের ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠনগুলোর তালিকার শীর্ষে রয়েছে নাইজেরিয়ার বোকো হারাম৷ ২০১৫ সালে আবু বকর শেকাউ-এর নেতৃত্বে এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি ৬ হাজার ৬৪৪ জন মানুষকে হত্যা করেছে৷ তাদের হামলায় আহত হয়েছে ১,৭৪২ জন৷ বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক৷ এছাড়া হাজারো কিশোরীকে অপহরণ করেছে বোকো হারাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S.Alamba
ইসলামিক স্টেট
যদিও বোকো হারাম আইএস-এর তুলনায় বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু আতঙ্ক সৃষ্টির দিক থেকে সবচেয়ে উপরে আছে আইএস৷ বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলা হচ্ছে আইএসকে৷ ২০১৫ সালে তাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৬ হাজার ৭৩ জন মানুষ এবং আহত হয় ৫ হাজার ৭৯৯ জন৷ ১০৭১টি হামলা চালিয়েছে তারা বিশ্ব জুড়ে৷ আবু বকর আল-বাগদাদির নেতৃত্বে সংগঠনটি সিরিয়া, ইরাক, তুরস্ক ও ইউরোপ জুড়ে এখনো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তালেবান
১৯৯৪ সালে আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ চলার সময় এই জঙ্গি সংগঠনটির আবির্ভাব৷ বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ জঙ্গি সংগঠন বলা হয় এদের৷ ২০১৫ সালে তালেবানের হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৩ হাজার ৪৭৭ জন এবং আহত হয়েছে ৩ হাজার ৩১০ জন৷ গত বছর বিশ্ব জুড়ে ৮৯১ টি হামলা চালিয়েছে তারা৷ হিবাতুল্লাহ আকন্দজাদা এখন তালেবানের নেতৃত্বে রয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Noorullah Shirzada
ফুলানি জঙ্গি গোষ্ঠী
বিশ্বব্যাপী এদের তেমন পরিচিতি নেই৷ এরা নাইজেরিয়ার ফুলা সম্প্রদায়ের মানুষ৷ এদের লক্ষ্য ফুলানির ভূমি মালিকদের হত্যা করা৷ ২০১৫ সালে ১৫০ টি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে ফুলানি, তাদের হামলায় মারা গেছে ১ হাজার ২২৯ জন৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Lieman
আল-শাবাব
বোকো হারামকে যদি আইএস-এর সাথে তুলনা করা হয়, তবে আল শাবাবকে তুলনা করা যায় আল-কায়েদার সঙ্গে৷ পূর্ব আফ্রিকায় এদের আধিপত্য অনেক বেশি৷ সোমালিয়াকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোই তাদের মূল লক্ষ্য৷ গত বছর জঙ্গি গোষ্ঠীটি ৪৯৬টি হামলা চালিয়েছে, হত্যা করেছে ১ হাজার ২১ জন মানুষকে, আহত হয়েছে ৮৫০ জন৷
ছবি: A. Ohanesian
5 ছবি1 | 5
এই আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি জনবহুল এলাকায় মহিলাকে গলা পর্যন্ত পুঁতে দেওয়া হয়৷ তারপর তাঁকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে মুখোশধারী আল-শাবাব জঙ্গিরা৷
আল-শাবাব সোমালিয়ায় ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়৷ তাদের লক্ষ্য কঠোর ইসলামি আইন কার্যকর করা৷ এই জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কের অধীনে কাজ করে৷ আল-শাবাবের আদালতে নামেই বিচার হয়৷ আদতে সেখানে অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয় না৷
গুপ্তচর সন্দেহে বা ব্যভিচারের গন্ধ পেলেই জঙ্গিরা পাথর ছুঁড়ে মানুষ মারে৷ পুরুষ ও নারী – উভয়েই এই পাথরের মুখে পড়ে প্রাণ হারায়৷ সোমালিয়ায় বহুগামিতা আদতে পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়৷ পুরুষরা একসঙ্গে চারটি স্ত্রী রাখতে পারে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে মহিলারা আগের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন৷ তবে অতি দরিদ্র এই দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিয়ের নেপথ্যে থাকে অর্থনৈতিক কারণ৷