আল কায়দার একটি শাখা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে নিয়েছে। সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট বিদেশি চিকিৎসকদের সাহায্য চেয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, জোড়া গাড়ি বিস্ফোরণ হয় সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে। সে সময় রাস্তায় বহু মানুষ ছিলেন। প্রচুর শিশুও ছিল। ঘটনাস্থলেই অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ৩০০ জন। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা আছে।
যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, সোমালিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় তার খুব কাছে। আর তার পাশেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে টার্গেট করেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পাশেই একটি স্কুল আছে। সেখান থেকে ওই সময় বহু শিশু বার হচ্ছিল। যে কারণে, বিস্ফোরণে বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালেও ভর্তি অনেকে।
সোমালিয়ায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি
এখনই ব্যবস্থা না নিলে ৭০ লাখ মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা।
ছবি: Farah Abdi Warsameh/AP/dpa/picture alliance
রেডক্রসের লালবার্তা
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি) যৌথভাবে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানেই সোমালিয়া এবং হর্ন অফ আফ্রিকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে।
ছবি: Yasuyoshi Chiba/AFP
সাত মিলিয়ন মানুষ
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই সাত মিলিয়ন বা ৭০ লাখ মানুষ না খেতে পেয়ে মৃত্যুবরণ করবে। ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ছবি দেখবে গোটা বিশ্ব।
ছবি: Feisal Omar/REUTERS
বাস্তব পরিস্থিতি
সোমালিয়ায় ২০২২ সালের গোড়ায় দুর্ভিক্ষের শিকার ছিলেন চার দশমিক এক শতাংশ মানুষ। বর্তমানে তা সাত দশমিক এক মিলিয়নে পৌঁছে গেছে। সামান্য খাবারটুকুও তাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।
ছবি: Farah Abdi Warsameh/AP/dpa/picture alliance
হর্ন অফ আফ্রিকা
হর্ন অফ আফ্রিকার অবস্থা আরো ভয়াবহ। সেখানে ২২ মিলিয়ন মানুষ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে।
ছবি: Yasuyoshi Chiba/AFP
বৃষ্টি নেই
তিনটি বৃষ্টির মরসুমে বর্ষা হয়নি হর্ন অফ আফ্রিকা এবং সোমালিয়ায়। ফলে সামান্য ফসলও হয়নি। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তাদের কাছে খাদ্যশস্য পৌঁছায়নি। ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছেন তারা।
ছবি: Farah Abdi Warsameh/AP/dpa/picture alliance
অপেক্ষা করলে চলবে না
আইএফআরসি-র প্রেসিডেন্ট ফ্রানসেসকো রোকা সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, এই অঞ্চলগুলির জন্য প্রায় কোনো ব্যবস্থাই করা হয়নি। এমন চলতে থাকলে ২০২৩ সালের মধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। যা আর সামলানো যাবে না।
ছবি: Salvatore Di Nolfi/KEYSTONE/picture alliance
দেরি হয়ে গেছে
আইসিআরসি-র বিদায়ী প্রেসিডেন্ট পিটার মউরের বলেছেন, দেরি হয়ে গেছে। এখনই ওই অঞ্চলে ব্যবস্থা নিতে হবে। ন্যূনতম খাবার তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। নইলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে।
ছবি: Farah Abdi Warsameh/AP/dpa/picture alliance
7 ছবি1 | 7
সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যেভাবে হাসপাতাল ভরে যাচ্ছে, তাতে দেশের চিকিৎসকদের পক্ষে আর সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদেশ থেকে চিকিৎসকরা এসে বাচ্চাদের বাঁচাতে সাহায্য করুক। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মুসলিম দেশগুলির কাছ থেকে তিনি সাহায্যও চেয়েছেন।
কেন বিস্ফোরণ
আল কায়দার একটি শাখার নাম আল-শাবাব। তারা এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই টার্গেট ছিল। কারণ, দেশের সরকার ইসলামবিরোধী সিলেবাস তৈরি করছে। তারা অমুসলিম দেশগুলির কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছে। দেশের ছাত্রছাত্রীদের ভুল পথে চালিত করছে। দেশের সরকার তাদের শত্রু। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ইসলামের শত্রু। সে কারণেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
অতীতেও সোমালিয়ায় একাধিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এই সন্ত্রাসীরা। অপরহণ, বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটাতেই থাকে তারা। সোমালিয়া আগেও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চগুলির কাছে সাহায্য চেয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলের সাহায্য চেয়েছে। তবে সম্প্রতি যে বিস্ফোরণটি হয়েছে, তা অতীতের সমস্ত ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে।