সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানালেন ডনাল্ড ট্রাম্প।
বিজ্ঞাপন
টুইটার, ফেসবুক, গুগলের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। নিউ জার্সির এক অনুষ্ঠানে বুধবার বক্তৃতা দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ফেসবুক, টুইটার এবং গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। মামলা করেছেন প্রতিটি সংস্থার সিইও-দের বিরুদ্ধেও। ট্রাম্পের অভিযোগ, সংস্থাগুলি মার্কিন বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে। ব্যক্তি-স্বাধীনতাও খর্ব করেছে। অ্যামেরিকার আইন অনুযায়ী যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এদিন ট্রাম্পসুলভ ভঙ্গিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, ''মার্ক সাকারবার্গ, সুন্দর পিচাই, জ্যাক ডর্সি সকলেই খুব ভালো মানুষ। কিন্তু তাদের সকলের বিরুদ্ধএই মামলা করেছি।''
ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডবে ক্যাপিটলে যত ক্ষয়ক্ষতি
বুধবার অনেকটা সময় ট্রাম্প সমর্থকদের দখলে ছিল মার্কিন ক্যাপিটল৷ বিস্তর ক্ষতি করেছেন তারা৷ জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Alex Wong/Getty Images
যা হয়েছিল
বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংসদভবন ক্যাপিটলে ঢুকে পড়লেন উত্তেজিত ডনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকরা৷ পুলিশের বাধা না মেনে দখল নেন ক্যাপিটল ভবনের একতলার৷ বিক্ষোভকারীদের থামাতে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে৷ পরে, বাধ্য হয়ে গুলি চালায়৷ সব মিলিয়ে ক্যাপিটল ভবন ও সংবাদমাধ্যমের নানা সম্পত্তির অনেক ক্ষতি হয়৷
ছবি: REUTERS
রক্তাক্ত ক্যাপিটল
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প সমর্থকদের ক্রোধের আঁচ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জ্যাকারি টেলরের আবক্ষমূর্তিতেও লেগেছে৷ ক্যাপিটলের ভেতরে হাতাহাতির ফলে রক্তপাত ঘটে, সেই রক্ত দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট টেলরের মূর্তির গায়েও৷
ছবি: Samuel Corum/Getty Images
ভাঙচুর যত
বুধবার টেলিভিশন থেকে ইন্টারনেট সর্বত্র ছেয়ে ছিল ক্যাপিটলে ভাঙচুরের ছবি৷ বিক্ষুব্ধরা শুধু ক্যাপিটলের বিভিন্ন দরজা, জানালার কাঠ-কাঁচ ভেঙেই থামেনি, ভেতরের মূল পোডিয়ামও কাঁধে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা৷ একটি ভিডিওতে দেখা যায় কয়েক শতক পুরোনো আসবাব, ঝাড়বাতি সব টেনে মাটিতে ফেলে দিতে৷
ছবি: Erin Scott/REUTERS
যা বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
ক্যাপিটলে উপস্থিত হাউস প্রতিনিধি জেসন ক্রো বলেন, ‘‘আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়৷ পালাবার পথ ছিল না৷ যখন আমি ইরাক বা আফগানিস্তানে লড়ছিলাম, তখনও আমি এতটা ভীত হয়েছিলাম৷ এরপর আর কখনো এমন অনুভূতি হয়নি৷ কিন্তু সেই সময় আমার সামনে লড়ে বিপদ থেকে বেরোবার পথ ছিল৷ লড়ার জন্য ক্যাপিটলে আমার পকেটের কলম ছাড়া আর কোনো অস্ত্র ছিল না৷’’
ছবি: Alex Wong/Getty Images
আক্রান্ত সংবাদমাধ্যম
শুধু ক্যাপিটলের ভেতরে নয়, বাইরে থাকা সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা, মাইক ভাঙা হয়েছে৷ সাংবাদিকদের গালিও দেওয়া হয়৷ ওপরের ছবিতেও তার প্রতিফলন৷ ক্যাপিটলের দরজার ওপরে লেখা ‘মার্ডার দ্য মিডিয়া!’
ছবি: Erin Scott/REUTERS
সন্ত্রাস ও মৃত্যু
বুধবারের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে৷ এর মধ্যে, রয়েছেন এক পুলিশকর্মীও৷ ভাঙচুর, মারামারি ও হাতাহাতির ভয়াবহতার কারণে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই বুধবারের ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছে৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
6 ছবি1 | 6
মিয়ামির ফেডারেল কোর্টে মামলা করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন আইনের ২৩০ নম্বর অনুচ্ছেদের উপর মামলাটি করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে যে আইনে ইন্টারনেটে মন্তব্য এবং তার স্বাধীনতার বিষয়টি যুক্ত হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান সহকর্মীরা এই আইনে বদল আনার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, আইনটিকে নিজেদের সুরক্ষাবলয় হিসেবে ব্যবহার করছে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলি।
ফেসবুক, টুইটার এবং গুগলের সঙ্গে ট্রাম্পের সংঘাত অনেকদিনের। নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের একাধিক টুইটার পোস্ট নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিল সংস্থাটি। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল ট্রাম্পের পোস্টের সত্যতা নিয়ে। তবে ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর ফেসবুক, টুইটার এবং গুগল সকলেই ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করে দেয়। অভিযোগ, ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে সহিংসতা ছড়াচ্ছে। কারণ, নির্বাচনে হেরেও ট্রাম্প হার স্বীকার করছেন না এবং দলীয় কর্মী এবং সমর্থকদের উসকে দিচ্ছেন।
ওই ঘটনার সময়েও সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। এবার তিনি জানিয়ে দিলেন, প্রতিটি সংস্থার বিরুদ্ধেই আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলি এবং তাদের সিইও-রা অবশ্য এখনো এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেননি।