বাংলাদেশের সোয়ান গার্মেন্টস-এর শ্রমিকরা আশ্বাস পেলেও এখনো নিশ্চিত নন যে কবে তাঁরা তাঁদের চারমাসের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস পাবেন৷ তাই ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঈদের আগে শুরু হওয়া অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা৷
বিজ্ঞাপন
সোয়ান পোশাক কারখানার ১৩শ' শ্রমিকের ঈদ কেটেছে প্রেসক্লাবের সামনে, খোলা আকাশের নীচে৷ গত ১৩ দিন ধরে এই অবস্থান কর্মসূচি চলছে তাঁদের৷ সরকারের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হলেও কমিটি এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলেনি যে, কীভাবে এই গার্মেন্টস শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া হবে৷
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম সম্পাদক জলি তালুকদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার কমিটির সঙ্গে শ্রমিক নেতা, গার্মেন্টস প্রতিনিধি এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে৷ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া হবে৷ কিন্তু কী পদ্ধতিতে সেটা দেয়া হবে, তা জানানো হয়নি৷ তাই আমরা বকেয়া বেতন-ভাতার টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷''
বাংলাদেশে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা
পশ্চিমা বিশ্বের একদল পরিদর্শক বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে ভয়াবহ নিরপত্তা ঝুঁকি দেখতে পেয়েছেন৷ রানা প্লাজা বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তারা এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
রানা প্লাজা বিধ্বস্তের পর...
২০১৩ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজা বিধ্বস্ত হলে নিহত হয় অন্তত ১,১০০ পোশাক শ্রমিক৷ এ ঘটনার পর পশ্চিমা যেসব দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি হয়, তারা পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়৷ সম্প্রতি বেশ কিছু নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো পরিদর্শন করেছেন৷
ছবি: Reuters
নিরাপত্তা ঝুঁকি
পরিদর্শকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ পোশাক কারখানায় অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা এবং ভবনের কাঠামোর বিষয়ে অন্তত ৮০,০০০ নিরারপত্তা ইস্যু খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা৷
ছবি: Kamrul Hasan Khan/AFP/Getty Images
২,২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য
বাংলাদেশে পোশাক খাতে বাণিজ্যের পরিমাণটি বিশাল৷ অর্থের অঙ্কে প্রায় ২,২০০ কোটি মার্কিন ডলার৷
ছবি: DW/C. Meyer
পোশাক রপ্তানিতে মন্দা
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে গার্মেন্টসগুলো তাদের ক্রেতা হারাচ্ছে৷ ফলে পোশাক রপ্তানির হার হ্রাস হয়েছে৷
ছবি: Reuters
পোশাক কারখানা পরিদর্শন
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পোশাক ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম এবং ইনডিটেক্সসহ ১৮০টিরও বেশি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি ও সদস্যরা অন্তত ১,১০৬টি কারখানা পরিদর্শন করেছেন৷ তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিটি কারখানায় বৈদ্যুতিক ঝুঁকির পাশাপাশি, ভবনের কাঠামো ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাতে গাফিলতি খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা৷ এমনকি অনেক কারখানায় ফায়ার অ্যালার্ম ও ফায়ার এক্সিটও নেই৷
ছবি: DW/C. Meyer
অবিলম্বে খালি করার নির্দেশ
১৭টি কারখানা অবিলম্বে খালি করে বন্ধের নোটিস দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিদর্শকরা৷ কারণ ঐ ১৭টি কারখানা যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা৷ এছাড়া ১১০টি কারখানার ভবন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানা গেছে৷
ছবি: Reuters
নিরাপত্তা ইস্যু খতিয়ে দেখা
এর আগে নর্থ অ্যামেরিকান কোম্পানি ওয়ালমার্ট ও গ্যাপ-এর মতো বেশ কিছু কোম্পানির প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ৫৮০টি কারখানা পরিদর্শন করেছেন৷ উদ্দেশ্য একই, নিরাপত্তা ইস্যু খতিয়ে দেখা৷ দেশের অন্তত ৩০০টি কারখানায় ওয়ালমার্ট ও গ্যাপ-এর পোশাক তৈরি হয়৷
ছবি: AP
আশঙ্কায় শ্রমিকরা
তবে যেসব কারখানা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে, সেসব শ্রমিকরা বেতন না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন৷ কেননা পরিদর্শকরা শ্রমিকদের বেতন দেয়ার কথা বললেও মালিকরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি৷
ছবি: Imago/Xinhua
পরবর্তী পদক্ষেপ
পরিদর্শকরা বেশিরভাগ কারখানার মালিক ও প্রকৌশলীদের নিয়ে আলোচনায় বসে কী কী ইস্যুতে পরিবর্তন আনা দরকার, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে৷ এরপর আবারো তাঁরা পরিদর্শনে আসবেন নিজেদের নির্দেশনা কতটা বাস্তবায়ন হলো, তা দেখার জন্য৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
9 ছবি1 | 9
সোয়ান গার্মেন্টস সোয়ান গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান৷ কারখানাটি তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সদস্য (নিবন্ধন ৫৮৭)৷ সোয়ান-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিং ইউন হন ও পরিচালক ইং লি৷ তাঁরা দু'জন স্বামী-স্ত্রী, চীনের নাগরিক৷ বিজিএমইএ-র সভাপতি আতিকুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘কারখানার এমডি গত এপ্রিল মাসে মারা যান৷ এরপর থেকেই বেতন-ভাতা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়৷ বন্ধ করে দেয়া হয় কারখানাটি৷ তবে আমরা আশা করছি, এই জটিলতা কেটে যাবে৷ আর শ্রমিকরা কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁদের বকেয়া বেতন-ভাতা পাবেন৷''
সোয়ান-এর ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সোয়ান গ্রুপের মোট কারখানা পাঁচটি৷ এ সব কারখানা ওয়াললমার্ট, লি অ্যান্ড ফাং, টিম, অটো, নর্দান গেটওয়ে, ফুটলকার, সিয়ার্স এবং জার্মান কোম্পানি আল্ডি'সহ মোট ১৫টি খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের ক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করে আসছিল৷
ঢাকার উত্তরার মোল্লারটেকে সোয়ান গার্মেন্টস-এর অবস্থান৷ গত এপ্রিলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইউন হন মারা যাওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে গার্মেন্টসটি৷ উত্তরাধিকারের জটিলতার কারণে কারখানাটি আর চালু হচ্ছে না৷ আসলে চীনা নাগরিক হনের দুই স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের কারণেই এ জটিলতা তৈরি হয়েছে৷
মালিকের মৃত্যুর পর টাকা পাওনা থাকায় ইসলামী ব্যাংক সোয়ান গার্মেন্টসের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে করে৷ ব্যাংকের কথা, সোয়ান গ্রুপের সমস্ত সম্পত্তি ইসলামী ব্যাংকের কাছে মর্টগেজ থাকায় সম্পত্তিও বিক্রি করা যাচ্ছে না৷
পোশাক শিল্পে শ্রমশোষণ: ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশ
দু মুঠো অন্নের সংস্থান করতে রানা প্লাজায় গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছিলেন এগোরো শ-রও বেশি মানুষ৷ যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের অনেকেরই বাকি জীবন কাটবে দুর্বিষহ কষ্টে৷ পোশাক শ্রমিকদের জীবনের এই নির্মমতার ইতিহাস কিন্তু অনেক দীর্ঘ৷
ছবি: DW/M. Mohseni
বৈশ্বিক শিল্প
প্রতিটি পোশাকে মিশে থাকে শ্রমিকের শ্রম-রক্ত-ঘাম৷ ১৯৭০-এর দশক থেকে ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলো এশিয়া আর ল্যাটিন অ্যামেরিকার কিছু দেশ থেকে পোশাক কিনতে শুরু করে৷ খুব কম মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া যায় বলে দাম পড়ে কম, লাভ হয় বেশি৷ এমন সুযোগ ছাড়ে তারা! কম টাকায় পণ্য কিনবেন, ছবির মতো পোশক তৈরি হবে মিষ্টির দোকানে – তারপর আবার শ্রমিকের অধিকাররক্ষা, পরিবেশ দূষণ রোধ করবেন – তাও কি হয়!
ছবি: picture-alliance/dpa
সবার জন্য পোশাক
বড় আঙ্গিকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোশাক তৈরি প্রথম শুরু হয়েছিল ব্রিটেনে, অষ্টাদশ শতাব্দীর সেই শিল্পবিপ্লবের সময়টাতে৷ এখন বিশ্বাস করতে অনেকের হয়ত কষ্ট হবে, তবে ইতিহাস বলছে, শিল্পবিপ্লবের ওই প্রহরে ব্রিটেনের লন্ডন আর ম্যানচেস্টারও শ্রমিকদের জন্য ছিল আজকের ঢাকার মতো৷ শতাধিক কারখানা ছিল দুটি শহরে৷ শিশুশ্রম, অনির্ধারিত কর্মঘণ্টার সুবিধাভোগ, অল্প মজুরি, কারখানার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ – সবই ছিল সেখানে৷
ছবি: gemeinfrei
সেই যুক্তরাষ্ট্র এখন কর্তৃত্বে
যুক্তরাষ্ট্রেও পোশাকশ্রমিকরা স্বর্গসুখে ছিলেন না সব সময়৷ সেখানেও এক সময় কারখানায় আগুন লাগলে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভেতরে রেখেই সদর দরজায় তালা লাগাতো৷ ১৯১১ সালে তাই নিউ ইয়র্কের ট্রায়াঙ্গেল শার্টওয়েস্ট ফ্যাক্টরিতে পুড়ে মরেছিল ১৪৬ জন শ্রমিক৷ মৃতদের অধিকাংশই ছিলেন নারী৷ মজুরি, কর্মঘণ্টা, কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা – কোনো কিছুই এশিয়ার এখনকার কারখানাগুলোর চেয়ে ভালো ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পোশাক শিল্পে চীন বিপ্লব
পোশাক রপ্তানিকারী দেশগুলোর মধ্যে চলছে সবচেয়ে কম খরচে পোশাক তৈরির প্রতিযোগিতা৷ রপ্তানিকারী দেশগুলোর মধ্যে চীনের অবস্থা সবচেয়ে ভালো৷ রপ্তানি সবচেয়ে বেশি, শ্রমিকদের মজুরিও খুব ভালো৷ চীনে একজন পোশাক শ্রমিক এখন মাস শেষে ৩৭০ ইউরো, অর্থাৎ, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৭ হাজার টাকার মতো পেয়ে থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শ্রমশোষণ কাকে বলে...
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর সুমাংগলি৷ তামিল শব্দ ‘সুমাংগলি’-র অর্থ, ‘যে নববধু সম্পদ বয়ে আনে’৷ এলাকায় পোশাক এবং সুতা তৈরির প্রশিক্ষণের নামে খাটানো হয় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মেয়েকে৷ দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করে তাঁরা হাতে পান ৬০ ইউরো সেন্ট, অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় ৬০ টাকা৷ সে হিসেবে মাস শেষে পান ১৮০০ টাকা৷ টাকাটা তাঁদের খুব দরকার৷ বিয়ের সময় বাবাকে তো যৌতুক দিতে হবে!
ছবি: picture-alliance/Godong
অধিকার আদায়ের করুণ সংগ্রাম
কম্বোডিয়াতেও অবস্থা খুব খারাপ৷ ৩ লক্ষের মতো পোশাক শ্রমিক আছে সে দেশে৷ কাজের পরিবেশ আর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কেমন? মাসিক বেতন মাত্র ৫০ ইউরো, অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় বড় জোর ৫ হাজার টাকা৷ মালিকের কাছে শ্রমিকদের মানুষের মর্যাদা প্রাপ্তি সৌভাগ্যের ব্যাপার৷ মজুরি বাড়ানোর দাবিতে মিছিলে নেমে শ্রমিকরা মালিকপক্ষের গুলিতে মরেছেন – এমন দৃষ্টান্তও আছে সেখানে৷
ছবি: Reuters
ট্র্যাজেডি
গত ২৪শে এপ্রিল বাংলাদেশের রানা প্লাজা ধসে পড়ায় মারা যান ১১শ-রও বেশি তৈরি পোশাককর্মী৷ দেয়ালে ফাটল ধরার পরও সেখানে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় এতগুলো জীবন শেষ হওয়াকে বিশ্বের কোনো দেশই ভালো চোখে দেখেনি৷ ঘটনার পর জার্মানির এইচঅ্যান্ডএম, কেআইকে এবং মেট্রোসহ বিশ্বের ৮০টির মতো পোশাক কোম্পানি শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পোশাক রপ্তানিকারী কারখানাগুলোর সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷
ছবি: Reuters
আলোয় ঢাকা আঁধার
অভিজাত বিপণিবিতান কিংবা দোকানের পরিপাটি পরিবেশে ঝলমলে আলোয় ঝিকমিক করে থরে থরে সাজানো বাহারি সব পোশাক৷ দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়৷ ক্রেতাদের ক’জনের মনে পড়ে রানা প্লাজা কিংবা অতীতের ব্রিটেন বা যুক্তরাষ্ট্রের ভাগ্যাহতদের কথা?
ছবি: DW/M. Mohseni
8 ছবি1 | 8
এ বিষয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, ‘‘এপ্রিলে কারখানাটির চীনা মালিক মারা যাওয়ার পর থেকে মালিকানা নিয়ে জটিলতা চলছে৷ এটি বিক্রির জন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে ১৩ কোটি টাকা দাম চূড়ান্ত হয়ে আছে৷ ফলে ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় করলে শ্রমিকদের বেতন দেয়া সম্ভব৷ কিন্তু সরকারের নিস্ক্রিয়তা এবং ব্যাংকের টালবাহানার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ শ্রমিকদের ঈদ কাটাতে হয়েছে খোলা আকাশের নীচে, বৃষ্টিতে ভিজে৷''
জলি তালুকদার জানান, ‘‘ইসলামী ব্যাংক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলাও করেছে৷ তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়৷ তারা চায়, গার্মেন্টস-এর সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে৷ এপ্রিল থেকে চলতি মাস পর্যন্ত শ্রমিকদের চার মাসের বকেয়া সাত কোটি টাকার বেশি হবে না, যা সহজেই দেয়া সম্ভব৷''
সরকার গঠিত কমিটির প্রধান কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আহমেদ জানান, ‘‘বৃহস্পতিবারের বৈঠকে গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷ বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া দিতে সব পক্ষ সম্মত হয়েছেন৷ সম্মত হয়েছে ইসলামী ব্যাংকও৷ এখন কীভাবে শ্রমিকদের বকেয়া দেয়া হবে, তা মঙ্গলবারের মধ্যেই শ্রমিকদের জানানো হবে৷'' অথচ সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, ঈদের আগে ১৪ই জুলাইয়ের মধ্যেই সব গার্মেন্ট শ্রকিদের বেতন ও বোনাস দেওয়া হবে৷
ঈদের আগে বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে ১২ই জুলাই সোয়ানের শ্রমিকরা জাতীয় প্রেসসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন৷ বেতন না পেয়ে তাঁরা সেখানে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন৷ এমনকি ঈদও সেখানেই পালন করেছেন তাঁরা৷ বেতন পরিশোধে ব্যবস্থা নিতে শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংকের কার্যালয় ঘেরাও করেন৷ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরী সভাপতি সাদেকুর রহমান জানান, ‘‘আন্দোলনরত শ্রমিকদের মধ্যে ৫০ জন জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত৷''
প্রসঙ্গত, গত বছরও ঈদের সময় তুবা গার্মেন্টস-এর শ্রমিকরা বেতন-ভাতা না পেয়ে আন্দোলনে করেছিলেন৷ কারাগারে আটক থাকা তুবা গার্মেন্টস-এর মালিককে ছেড়ে দেয়ার জন্য শ্রমিকদের বেতন-ভাতা না দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল৷ পরে আন্দোলনের মুখে ঈদের পর শ্রমিকরা বেতন-ভাতা আদায় করেন৷