মাত্রই মিশরে পাঁচদিনের সফর শেষ করলেন সৌদি বাদশা সালমান৷ এ সময় দু'দেশের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ তবে সৌদি আরবকে দু'টি দ্বীপ দেয়ার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ, অবাক অনেক মিশরীয়৷
বিজ্ঞাপন
শনিবার এক বিবৃতিতে মিশর জানায়, দুই দেশের মধ্যে সমুদ্রের সীমানা নির্ধারণ করে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ এর ফলে তিরান ও সানাফির দ্বীপ দুটি এখন থেকে সৌদি আরবের সীমানায় বলে বিবেচিত হবে৷ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ছয় বছর সময় লেগেছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে৷
এরপর সৌদি আরব ও মিশরের কর্মকর্তারা জানান, দ্বীপ দুটি সৌদি আরবেরই ছিল৷ ১৯৫০ সালে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুলআজিজ আল সৌদ মিশরকে দ্বীপ দু'টি রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিল৷
ঐ দু'টি দ্বীপের মধ্যে বেশি পরিচিত তিরান৷ ছুটি কাটাতে অনেক পর্যটক সেখানে যান৷ নীচের টুইটটিতে দ্বীপ দু'টি দেখা যাচ্ছে৷
মিশরের পর্যটন বিষয়ক ওয়েবসাইটে তিরানকে ‘মাস্ট-সি ডেস্টিনেশন' বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷
দ্বীপ দেয়ার ঘোষণায় অনেক মিশরীয় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন৷ আরবি ভাষায় ‘আওয়াদ সোল্ড হিজ ল্যান্ড' হ্যাশট্যাগ (#عواد_باع_ارضه) ব্যবহার করে অনেকে টুইটারে তাদের ক্ষোভ ব্যক্ত করেন৷ হ্যাশট্যাগটি মিশরের ষাটের দশকের একটি জনপ্রিয় গান থেকে নেয়া৷ সেই সময় আবাদি জমি বিক্রি করাকে অসম্মানের মনে করা হতো৷ সৌদি আরবকে দু'টি দ্বীপ দিয়ে দেয়ার বিষয়টি এমনই অসম্মানের মনে করছেন মিশরীয়রা৷ বিশেষ করে এমন সময়ে এই ঘোষণা এসেছে যখন সৌদি আরবের সঙ্গে মিশর কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করেছে৷ এর আওতায় মিশর ও সৌদি আরবের মধ্যে সাগরের উপর দিয়ে সেতু নির্মাণের ঘোষণাও দিয়েছেন সৌদি বাদশা সালমান৷
মিশরের জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক বাসেম ইউসেফ, যিনি সরকারের সমালোচনা করায় এখন দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন, তিনি টুইটারে মিশরের প্রেসিডেন্ট আল-সিসিকে বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুভেনির বিক্রি করা রাস্তার হকারের সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ আরবি ভাষায় তিনি লিখেছেন, ‘‘এখানে, এখানে, পাশা, এক বিলিয়নে একটি দ্বীপ, দুইতে একটি পিরামিড, তার উপর আমি ফ্রিতে দু'টো মূর্তি বসিয়ে দিব৷''
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, এপি)
ভারতকে ছাড়িয়ে সবার ওপরে সৌদি আরব
স্টকহোমের আন্তর্জাতিক শান্তি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (সিপ্রি)-র প্রতিবেদনে শঙ্কা জাগানো ইঙ্গিত৷ সারা বিশ্বে অস্ত্রের ক্রয়-বিক্রয় বেড়েই চলেছে৷ চলুন দেখা যাক ২০১৫ সালে অস্ত্র খাতে ব্যয়ে কোন দেশ কোন অবস্থানে৷
ছবি: picture alliance/ZUMA Press/Xinhua/P. Thapa
অস্ত্র কেনায় ২০১৫-র সেরা সৌদি আরব
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে গণতন্ত্র নেই৷ মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে নিয়মিত৷ তবে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সৌদি আরব সরকারের উদ্যোগ এবং আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই৷ অস্ত্র ক্রয়ে ৩ হাজার ১৬১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ২০১৫ সালের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ হয়ে গেছে সৌদি আরব৷ ২০১৪ সালে এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারত, সৌদি আরব ছিল দ্বিতীয় স্থানে৷
ছবি: AFP/Getty Images
সামরিক শক্তি বাড়িয়েই চলেছে ভারত
বরাবরের মতো এখনো রাশিয়ার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ক্রয় করে ভারত৷ সিপ্রি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশও ভারত৷ ২০১৫ সালেও এই খাতে ৩ হাজার ৭৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে তারা৷ ২০১৪ সালে ৩ হাজার ৪৮৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে এক বছরের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশের তালিকায় সবার ওপরে ছিল ভারত৷ এবার শীর্ষে উঠে এসেছে সৌদি আরব৷
ছবি: Getty Images
অবাক করেছে অস্ট্রেলিয়া
আগের বছরের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারকদের তালিকায় অষ্টম স্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়া৷ কিন্তু ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৭৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা৷
ছবি: U.S. Navy photo/courtesy Lockheed Martin/Getty Images
চতুর্থ মিশর
মিশরও দীর্ঘদিন ধরে অশান্ত৷ সে দেশে উল্লেখযোগ্য হারে অস্ত্র ক্রয়ও বাড়ছে৷ ২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে ১ হাজার ৪৭৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে সে বছরের সর্বোচ্চ অস্ত্র আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে মিশর৷ এক বছর আগে ২২তম স্থানে তারা!
ছবি: dapd
পঞ্চম স্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাত!
সৌদি আরব, ভারত, অস্ট্রেলিয়া আর ফ্রান্সের পরই আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ ২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে তাদের মোট ব্যয় ১ হাজার ২৮৯ মিলিয়ন ডলার৷ ব্যয় বাড়িয়ে এক বছরে ১১ তম স্থান থেকে এক লাফে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Ecpad Handout
ইরাকও আছে অস্ত্র ক্রয়ের প্রতিযোগিতায়
ইরাকের মানুষ রক্তপাতহীন একটি দিন কবে পাবে কে জানে! এখন যে যুদ্ধ চলছে সেখানে ইরাকি সেনাবাহিনীর প্রতিপক্ষ সুন্নি মুসলমানদের তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন আইএস৷ ফলে অস্ত্র ক্রয় আরো বেড়েছে৷ ২০১৫ সালেই এই খাতে মোট ১ হাজার ২১৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ইরাক৷ ফলে ২০১৪ সালের শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় ১৫তম স্থান পাওয়া ইরাক ২০১৫ সালে ৯ ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছে ষষ্ঠ স্থানে৷
ছবি: Reuters/T. Al-Sudani
চীন পিছিয়েছে
২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করা দেশগুলোর তালিকার চতুর্থ স্থানে ছিল চীন৷ পরের বছর ১ হাজার ২১৪ মিলিয়ন ব্যয় করেও সপ্তম স্থানে নেমে গেছে তারা৷ এটা অবশ্য শুধু এক বছরে অস্ত্র আমদানিতে মোট ব্যয়ের হিসেব৷ চীন শুধু অস্ত্র আমদানি করে না, বিক্রিও করে৷ শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার পরই তাদের স্থান৷
ছবি: picture-alliance/AP Images/Color China Photo/Z. Lei
ভিয়েতনামও আছে
২০১৪ সালে এক বছরে অস্ত্রখাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা দেশগুলোর তালিকায় সপ্তম স্থানে ছিল ভিয়েতনাম৷ উন্নয়নশীল এই দেশটি ২০১৫ সালে ৮৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেও এক ধাপ পিছিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Russian Look
অস্ত্র ক্রয়ে সমস্যা নেই গ্রিসের!
চরম অর্থনৈতিক সংকট চলছে গ্রিসে৷ অন্যদিকে অস্ত্র ক্রয়ে ব্যয় বাড়ানোর প্রবণতাও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে৷ ২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে ৭৬২ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে গ্রিস৷ ফলে এক বছরে অস্ত্র খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা দেশগুলোর তালিকায় নবম স্থানে উঠে এসেছে তারা৷ আগের বছর ৩৩তম স্থানে ছিল গ্রিস৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
এক ধাপ পিছিয়েছে পাকিস্তান
২০১৫ সালে অস্ত্র ক্রয়ে মোট ৭৩৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে পাকিস্তান৷ বৈরি প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে দু’হাজার মিলিয়নের চেয়েও কম ব্যয় করে তারা এখন তালিকার দশম স্থানে৷ ২০১৪ সালে নবম স্থানে ছিল পাকিস্তান৷