দোররা মারা নিষিদ্ধ করার একদিন পর কিশোর অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধানও বাতিল করলো সৌদি আরব৷ বাদশাহ সালমানের জারি করা ডিক্রিতে এই ঘোষণা এলো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Jones
বিজ্ঞাপন
সৌদি আরবের রাষ্ট্র পরিচালিত মানবাধিকার সংস্থা রবিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেছে দেশটি৷ কমিশন জানায়, নতুন এই আইন সংস্কারের ফলে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে না৷ এমনকি ১০ বছরের বেশি কারাভোগ করতে হবে না কিশোর অপরাধীদের- এমনটাই জানালেন কমিশনের চেয়ারম্যান আওয়াদ আল আওয়াদ৷ সৌদি রাজ পরিবারের এই পদক্ষেপ দেশটির আইন সংস্কারের পথকে আরো এগিয়ে নেবে বলে ধারণা করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷
সৌদি আরবের মানবাধিকারের রেকর্ড বেশ খারাপ৷ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশ করা তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা দেশগুলোর একটি সৌদি আরব৷ ইরান ও চীনের পরেই তাদের অবস্থান৷ ২০১৯ সালে দেশটিতে ১৮৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে৷ তাদের মধ্যে একজন ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক৷ ১৮ বছরের কম বয়সিদের মৃত্যুদণ্ড দিলে তা জাতিসংঘের শিশু অধিকার কনভেশনের লঙ্ঘন, যা এতদিন করে এসেছে সৌদিআরব৷
আওয়াদ আল আওয়াদ মনে করেন, দেশটিতে অপরাধ আইনকে উন্নত করতে সাহায্য করবে এই ডিক্রি৷ দেশের সব ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সৌদি রাজ পরিবারের যে অঙ্গীকার, এটি তার প্রতিফলন বলেও জানান তিনি৷ নতুন এই আইনের ফলে জেলে থাকা ছয়জন শিয়া ধর্মাবলম্বী কিশোর মুক্তি পেতে যাচ্ছে৷
দেশকে আধুনিকায়ন করতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বেশ কয়েকটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার করেছেন৷ শনিবার দেশটির মানবাধিকার কমিশন দোররা মারা নিষিদ্ধ করার কথা জানায়৷ এর পরিবর্তে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে৷ এইসব সংস্কার সত্ত্বেও এখনো সৌদি আরবে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, চুরি করলে হাত কেটে ফেলার মতো শাস্তি এখনো দেয়া হয়৷
এছাড়া দেশটিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলে বরাবরই অভিযোগ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর৷ বিরোধী ও সমাজকর্মীদের কঠোর চাপের মুখে থাকতে হয় দেশটিতে৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
মধ্যপ্রাচ্যে করোনার প্রভাব
করোনায় বিপর্যস্ত ইরান৷ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও তাই শঙ্কিত৷ সব দেশেই নেয়া হচ্ছে জরুরি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা৷ মসজিদ, দোকানপাট, বিমানবন্দর, অফিস-আদালত, বলতে গেলে সবজায়গাতেই পড়ছে করোনা ভাইরাসের প্রভাব৷
ছবি: Reuters/A. Jalal
ইরান ধুঁকছে
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ৷ প্রায় ১৩ হাজার মানুষের দেহে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ায় এবং অন্তত ৬১১ জনের মৃত্যু হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে করোনা ভাইরাসের এপিসেন্টার বলা হচ্ছে দেশটিকে৷ পরিস্থিতি সামলাতে সারাদেশে জুম্মার নামাজসহ বড় ধরনের সব জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ তবে অর্থের অভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেক পদক্ষেপই নেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ এ কারণে আইএমএফ-এর জরুরি সহায়তা চেয়েছে সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Hosseini
সংকট বাড়ার আগেই সতর্ক সৌদিআরব
করোনা ঠেকাতে ইতিমধ্যে বিমানের সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে সৌদি সরকার৷ শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঘোষণায় জানানো হয়, আগামী ১৫ দিন সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকবে৷ জনগণের প্রতি করোনা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেছে, কেউ রোগ লুকিয়ে রাখলে পাঁচ লাখ রিয়াল বা এক লাখ ২০ হাজার ইউরো জরিমানা করা হবে৷ সৌদি আরবে এখনো করোনায় মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি৷
ছবি: picture-alliance/AP/A. Nabil
ইসরায়েলে বড় জমায়েত নিষিদ্ধ
ইসরায়েলের গবেষকরা বলছেন, সে দেশে অচিরেই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়তে পারে৷ তবে তার আগেই চূড়ান্ত সতর্কতার পথ ধরেছে সরকার৷ কোনো স্থানে একশ’ জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বেথেলহেমে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Schalit
করোনাকে দূরে রাখতে মরিয়া কুয়েত
করোনা থেকে বাঁচতে সারা দেশে দু’সপ্তাহের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার৷ সব ধরনের বাণিজ্যিক ফ্লাইট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ৷ রেস্তোরাঁ, শপিং মল এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক কেন্দ্রের সামনে যে-কোনো ধরনের জমায়েতও এখন নিষিদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/AA/J. Abdulkhaleg
ইরাকে বিক্ষোভ থামাতে পারেনি করোনা
ইরাকে এখনো চলছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ৷ সংক্রমণ এড়াতে বিক্ষোভকারীরাই অবশ্য সাবধানতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন৷ মসজিদসহ সব স্থানে জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে সরকার৷ তারপরও করোনায় বিপর্যস্ত ইরানের এই প্রতিবেশী দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে৷