রবিবার রাতে সৌদি আরবে মিসাইল হামলা চালায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা৷যদিও প্রতিটি মিসাইলই অকেজো করা হয়েছে৷ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে একজনের৷
বিজ্ঞাপন
এবার সরাসরি মিসাইল হামলা হলো সৌদি আরবে৷ অভিযোগ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের উপর এই হামলা চালিয়েছে৷ তবে সৌদি আরবের দাবি, প্রতিটি মিসাইলই অকেজো করতে সমর্থ হয়েছে তারা৷ ভেঙে পড়া একটি মিসাইলের আঘাতে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর৷ ওই ব্যক্তি জন্মসূত্রে মিশরের৷
৩ বছর হয়ে গেল সৌদি আরবের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে নেমেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা৷ ঘটনার পর তাদের মুখপাত্র আক্রমণের দায় শিকার করেছেন৷ এবং বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো হামলা চলবে৷
হুতি সূত্রের খবর, মোট ৮টি মিসাইল সৌদি আরবের দিকে ছোড়া হয়েছিল৷ লক্ষ্য ছিল রিয়াদের বিমানবন্দরসহ দেশের আরো বেশ কয়েকটি অঞ্চল৷ রবিবার মধ্য রাতে আচমকাই রিয়াদের আকাশে দেখা যায় সেই মিসাইলগুলি৷ তখনই মিসাইল অকেজো করার অস্ত্র ব্যবহার করে সৌদি আরবের সেনা৷ সেই ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে সৌদি সেনার তরফ থেকে৷
ইয়েমেনে সৌদি আরবের সাহায্যপ্রাপ্ত দলের মুখপাত্র আল মালকি বলেন, ঘটনা থেকে স্পষ্ট, ইরানের মদতেই এ ধরনের আক্রমণ চালাতে পারছে হুতি বিদ্রোহীরা৷ মিসাইলগুলিও ইরানের দেওয়া বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷ বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরেই ইয়েমেনের এই বিদ্রোহীদের সাহায্য করছে ইরান৷ অন্যদিকে অপর গোষ্ঠীটিকে সাহায্য করছে সৌদি আরব৷ সে কারণেই সৌদি আরবের ওপর বারংবার হামলা চালানোর চেষ্টা করছে হুতি বিদ্রোহীরা৷ তাদের নেতা আবদেল মালেক আল হুতি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো আক্রমণ হবে সৌদি আরবের ওপর৷তাদের বিদ্রোহীরা জীবন উৎসর্গ করতেও তৈরি বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
এর আগে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল সৌদি আরব৷ গত ৩ বছরে ইয়েমেনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর৷ শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের দাবি, সৌদির আক্রমণের কারণেই ইয়েমেনে ভয়ংকর মন্বন্তর হয়েছিল৷ স্বাভাবিকভাবেই নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় চিন্তিত ইউরোপসহ পশ্চিম বিশ্ব৷
এসজি/এসিবি (রয়টার্স)
২৮ ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...
তাদের জীবন বাঁচে ডাস্টবিনের খাবার খেয়ে
যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনের ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ গৃহহীন৷ মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের৷ অনেকেরই সম্বল এখন ডাস্টবিনের খাবার৷ তেমনই এক পরিবারের কথা জানুন এই ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/A. Zeyad
মোহাম্মেদ রুজাইকের পরিবার
ইয়েমেনের রুজাইক পরিবার প্রাণভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে লোহিত সাগরের তীরের হোদেইয়া বন্দরের কাছের একটি জায়গায়৷ আপাতত প্রাণ বাঁচাতে পারলেরও প্রায়ই সবার ভাগ্যে খাবার জোটে না৷
ছবি: Reuters/A. Zeyad
আয়ের পথ নেই
২০১৫ সাল থেকে যুদ্ধ চলছে ইয়েমেনে৷ তবে হুতি বিদ্রোহীদের উৎখাত করে প্রেসিডেন্ট হাদিকে ক্ষমতায় ফেরাতে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বাহিনী হামলা শুরু করার পর থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে৷ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত৷ যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের অনেকেরই রুজি-রোজগার বন্ধ৷ অনেকেই প্রথমে রাস্তাঘাট থেকে প্লাস্টিকের বোতল বা ধাতব ক্যান বিক্রি করে সামান্য কিছু আয় করত৷ সে পথও ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/A. Zeyad
বাজার মন্দা
আগে প্রতি কেজি প্লাস্টিকের বোতল বা ধাতব ক্যান ৫০ ইয়েমেনি রিয়ালে বিক্রি করা যেত৷ এখন আর সেই দাম পাওয়া যায় না৷ কোনো দোকানেই এখন আর প্রতি কেজি প্লাস্টিক বা ধাতব বস্তু ১০ রিয়ালের বেশি দামে বিক্রি করা যায় না৷
ছবি: Reuters/A. Zeyad
ভরসা এখন আবর্জনার স্তূপ
ঘরে খাবার নেই, টাকাও নেই৷ তাহলে উপায়? উপায় একটা বের করেছে রুজাইক পরিবার৷ আগে বোতল আর ক্যান কুড়াতো ডাস্টবিন থেকে৷ এখন তারা খাবারও কুড়ায়৷ হ্যাঁ, অনেকদিন ডাস্টবিন থেকে কুড়ানো খাবারেই কোনোরকমে ক্ষুধা মেটায় রুজাইক পরিবার৷
ছবি: Reuters/A. Zeyad
কী পায় ডাস্টবিনে?
১১ বছর বয়সি আয়ুব মোহাম্মেদ রুজাইক বললো, ‘‘অন্যরা যা ফেলে দেয়, সেই খাবার কুড়িয়েই আমরা খাই, পান করি৷ আমরা মাছ, মাংস, আলু, পেঁয়াজ, ময়দা ইত্যাদি কুড়িয়ে নিয়ে রান্না করে খাই৷’’
ছবি: Reuters/A. Zeyad
আল্লাহর কাছে একটাই দোয়া
রুজাইক পরিবারের প্রধান মোহাম্মেদ রুজায়েক বললেন, ‘‘এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে আমরা চাই তারা যুদ্ধটা বন্ধ করুক৷ সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে একটাই প্রার্থনা – যুদ্ধ বন্ধ হোক৷’’