সৌদি জোটে বাংলাদেশ
১৭ ডিসেম্বর ২০১৫৩৪টি মুসলিম দেশের সন্ত্রাসবিরোধী জোটে বাংলাদেশের যোগ দেয়ার খবর নিশ্চিত করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়েরের অনুরোধে সাড়া দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী প্রাথমিকভাবে এই আইএস-বিরোধী জোটে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন৷ সমন্বিত উপায়ে সন্ত্রাসবাদ দমনে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগানোর জন্য রিয়াদে একটি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে৷ সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থি মতাদর্শ দমনে তথ্য-উপাত্ত বিনিময়সহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা জোগাবে এই কেন্দ্র৷'
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য এটাকে কোনো সামরিক জোট বলছে না৷ তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম একে সামরিক জোট হিসেবেই অভিহিত করছে৷
এদিকে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমরা উদ্বিগ্ন নই৷ আমরা মনে করি, এই জোটে যোগ দেয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে বসকাসরত বাংলাদেশের নাগরিকরা আইএস-এর হুমকির মুখে পড়বে না৷ আমরা সন্ত্রাসবিরোধী সৌদি নীতির সঙ্গে একমত হয়ে জোটে যোগ দিয়েছি৷'' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও একই ধরনের কথা বলেছেন৷
একদিন আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ‘জিরো টলারেন্স' নীতির সুফল যে বাংলাদেশ পেয়েছে, সে কারণেই এই জোটে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ একসময় তালেবান নিয়ে বিশ্ব চিন্তিত ছিল, এখন আইএস নিয়ে চিন্তিত৷''
ওদিকে বাংলাদেশ ইন্সটিউট অফ পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্যাডিস (বিআইপিএস)-এর প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) এএনএম মুনীরুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সৌদি আরবের নেতৃত্বে এই জোটটির চরিত্র এখনো স্পষ্ট নয়৷ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দু-একটি একে আইএস বিরোধী সামরিক জোট বললেও, সৌদি আরব তা স্পষ্ট করেনি৷ তবে এ ধরনের জোট শেষ পর্যন্ত সামরিক জোট হতে পারে৷ এর কাজের এলাকাও বিস্তৃত হতে পারে৷ তবে এই জোট আইএস-এর বাইরে সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান নেবে কিনা – তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হবে৷''
উল্লেখ্য জোটে বাংলাদেশের অংশ নেয়া নিয়ে কোনো লাভ-ক্ষতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে হলে জোটের চরিত্র স্পষ্ট হতে হবে৷ তার আগে কিছু বলা যাবে না৷''
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৯ই মার্চ লিবিয়ার সিরাত শহরের দক্ষিণে আল-গানি তেলক্ষেত্র থেকে বাংলাদেশি নাগরিক হেলাল উদ্দিন ও মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে অপহরণ করেছিল তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএস৷ ১৮ দিন পর অবশ্য তাঁদের বিনাশর্তে মুক্তি দেয়া হয়৷
সৌদি আরবের এই উদ্যোগ কি সত্যিই আইএস-বিরোধী? জানান মতামতের ঘরে৷