সৌল বৈঠক শেষে চলছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব
১৩ নভেম্বর ২০১০দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী সৌলে জি টোয়েন্টি সম্মেলন শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বারাক ওবামা বলেন, কিছু অগ্রগতি হয়েছে৷ তবে তিনি এটিও যোগ করেন যে, ‘‘আমরা এখানে যা করেছি তার যে নাটকীয় ফল দেখা যাবে তা নয়৷'' বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে ওবামা বলেন, ‘‘এটা সবসময় এমন নয় যে, তাৎক্ষণিকভাবে গোটা বিশ্বে পরিবর্তন ঘটে যাবে৷ বরং আমরা ধাপে ধাপে যা করছি তা আরো শক্তিশালী প্রক্রিয়া এবং প্রতিষ্ঠানে রূপ পাবে৷ আর এটি বিশ্ব অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সুনিশ্চিত করতে এবং উদ্বেগ কমাতে সহায়ক হবে৷''
মুদ্রা বাজার প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, ‘‘মুদ্রা বিনিময় হার অবশ্যই অর্থনৈতিক বাস্তবতার ভিত্তিতে হতে হবে৷ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর উচিত বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে মুদ্রার মান নির্ধারণ করা৷'' তিনি বেশ স্পষ্ট করেই চীনের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘‘চীনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও এর সাথে আমি এই বিষয়ে কথা বলেছি এবং চীনের মুদ্রার উন্নতির বিষয়টি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো৷'' এমনকি চীনের মুদ্রার মূল্যমান প্রসঙ্গে ওবামা এও বলেন যে, ‘‘এটা নিম্নহার এবং এটাকে নিম্নহারে রাখার জন্য বাজারে বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করে চীন৷''
২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার বিশ্লেষণ করে ওবামা, জিনতাও এবং জি টোয়েন্টির অন্যান্য নেতারাও সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বিশ্ব অর্থনীতির সামনে ঝুঁকি এখনও বিদ্যমান৷ এই অবস্থায় সমন্বয়হীন কর্মপন্থা সবার জন্যই আরো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করবে, বলে মত দেন তাঁরা৷
এদিকে, রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা টেনে দেওয়ার প্রচেষ্টা সফল হয়নি সৌল সম্মেলনে৷ আর এটিকে চীন এবং জার্মানির মতো শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য বড় সাফল্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ সৌল সম্মেলন শেষে এটিকে সফল বৈঠক বলেই অভিহিত করলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতে এই বৈঠক থেকে অর্জনের প্রশংসা করেন তিনি৷
তবে বিশ্লেষকদের কাছে সৌল সম্মেলনের অপর গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য৷ বিশেষ করে আইএমএফ এর নীতি নির্ধারণে ভারত, ব্রাজিল ও চীনের মতো দেশগুলোর বক্তব্যের গুরুত্ব বাড়বে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়৷ এছাড়া সৌল ঘোষণাপত্রেও বলা হয়েছে যে, ‘‘এই সংস্কার প্রতিষ্ঠানটির বৈধতা, বিশ্বস্ততা এবং কার্যকারিতা বাড়াবে৷ আর এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এবং প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এর ভূমিকাও বৃদ্ধি পাবে৷''
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা