স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ থাকছে কিনা বৃহস্পতিবারের গণভোটেই সেটা জানা যাবে৷ অবশ্য তার আগেই ব্রিটিশ পাউন্ডের মান পড়তে শুরু করেছে৷ কারণ জরিপগুলো স্বাধীন স্কটল্যান্ডের পক্ষেই মত দিচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্রিটিশ পাউন্ডের মান কমে গেছে৷ গণভোটে ‘ইয়েস' জয়ী হলে সেটা আরও কমার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা৷ সেটা হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন পাউন্ড ব্যবহারকারীরা৷ এছাড়া অনেকের পেনশন-আয় শেয়ার বাজারের সূচকের সঙ্গে কমে, বাড়ে৷ তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন৷
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পলিসি বৈঠক৷ সেখানে নির্ধারিত সময়ের আগেই সুদের হার বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে৷ উল্লেখ্য, অর্থনীতির স্বার্থে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে বন্ড ক্রয় কর্মসূচি চালু করেছে সেটার অংশ হিসেবে সুদের হার কমানো হয়েছিল৷
স্কটল্যান্ডে গণভোট: সম্ভাবনা এবং অনিশ্চয়তা
গ্রেট ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার পক্ষে, নাকি বিপক্ষে? ১৮ই সেপ্টেম্বর এ প্রশ্ন সামনে রেখেই স্কটল্যান্ডে গণভোট৷ তার আগে চলুন দু’পক্ষের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়নি এমন কিছু বিষয় এবং সার্বিক পরিস্থিতির দিকে একটু নজর দেয়া যাক৷
ছবি: Getty Images
আশা এবং উৎকণ্ঠা
স্বাধীনত দেশ হিসেবে অভ্যুত্থান শুধু যে স্কটল্যান্ডের জন্যই একটা বিরাট পরিবর্তন এনে দেবে – তা কিন্তু নয়৷ এমন একটা ঘটনা ব্রিটেন, ইউরোপ, এমনকি ন্যাটো-কেও দাঁড় করাবে নীতিগত পরিবর্তন এবং নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে৷
ছবি: Andy Buchanan/AFP/Getty Images
স্কটল্যান্ডের হাতে
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার সমর্থকরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, স্বাধীনতায় লাভই হবে, এর ফলে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই৷ উত্তর সাগরের তেল ক্ষেত্রের আয় দিয়ে দেশটি সহজেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে বলে বিশ্বাস তাঁদের৷ ব্রিটিশ সরকারে কাছে অবশ্য রাজস্ব হারানোর ব্যাপারটি বড় রকমের ক্ষতি৷
ছবি: Getty Images/J. J Mitchell
মিলে থাকাই ভালো?
স্বাধীনতার বিপক্ষের সবাই একতার শক্তিতে বিশ্বাসী৷ তাঁরা বলছেন, স্কটল্যান্ড আর ব্রিটেনের মধ্যে অমিলের চেয়ে মিলই বেশি৷ তাছাড়া, স্বাধীনতার পরিনামে অর্থনৈতিক যে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেবে তা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত৷ স্কটল্যান্ডের অংশে তেল আর গ্যাসের যে মজুদ রয়েছে এটাও গণভোটের বড় নিয়ামক৷
ছবি: Getty Images/A. Buchanan
মুদ্রা নিয়ে প্রশ্ন
স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলে মুদ্রা নিয়েও জটিলতা দেখা দেবে৷ দুটো উপায় খোলা – হয় ইউরোজোনে থেকে বর্তমান মুদ্রা পাউন্ডকে রেখে দাও, অথবা নতুন মুদ্রা চালু করো৷ স্বাধীন স্কটল্যান্ড কোন পথ ধরবে?
ছবি: Getty Images/J. J Mitchell
আণবিক অস্ত্রমুক্ত এলাকা?
গ্লাসগোর উত্তর-পশ্চিমের ফ্যাসলেন নৌ-ঘাঁটিতে যে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন রয়েছে সেগুলোর কী হবে? স্কটল্যান্ড কিন্তু আগে থেকেই আণবিক অস্ত্র রাখার বিপক্ষে৷
ছবি: AFP/Getty Images/A. Buchanan
রানি থাকবেন?
এমনও হতে পারে, স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলো এবং স্বাধীন দেশেও সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের অংশ হিসেবে মাথার ওপরে থেকে গেলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ৷ সে সম্ভাবনা অবশ্য কম৷ বেশির ভাগ স্কটই যে প্রজাতন্ত্র চান!
ছবি: imago/i Images
নাগরিকত্ব এবং ঋণ
গণভোটের মাত্র কয়েকদিন বাকি, অথচ স্কটল্যান্ডের অনেকেই স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়াবেন, নাকি বিপক্ষে – এ নিয়ে বেশ দোদুল্যমান৷ স্বাধীনতা নতুন দেশের জন্য কিছু সংকটও ডেকে আনতে পারে! যুক্তরাজ্যের যে পরিমাণ জাতীয় ঋণ তার কতটা দায় উত্তরাধিকার সূত্রে স্কটল্যান্ড নেবে? দ্বৈত নাগরিকত্ব কি অনুমোদন পাবে? এ সব প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা৷
ছবি: imago/United Archives
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে, নয়ত বাইরে
কোনো দেশ স্বাধীন হলে আপনা-আপনিই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হয়ে যাবে – এমন কোনো বিধান নেই৷ আগের কোনো দৃষ্টান্ত নেই বলে এ নিয়েও বিতর্ক আছে৷ ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবেদন করেই স্কটল্যান্ডকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে৷
ছবি: Getty Images
8 ছবি1 | 8
এখন অর্থনীতি কিছুটা সচল হওয়ায় সেই হার আবার বাড়ানোর কথা হচ্ছে৷ বুধবার বৈঠক শেষে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাবেন ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেনেট ইয়েলেন৷
ইউরোজোনের অর্থনীতি
‘অরগানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট' বা ওইসিডি বলছে, ইউরোজোনের প্রবৃদ্ধির জন্য ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকারগুলোর আরও সাহায্য করা দরকার৷ বিশেষ করে ইসিবি-র উচিত আরও বন্ড কেনা এবং অর্থনীতিতে আরও অর্থের যোগান দেয়া৷ ইসিবি অবশ্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ যেমন সুদের হার কমিয়ে তারা ০ দশমিক ৫ শতাংশ করেছে৷ এছাড়া কোম্পানিগুলোকে ঋণ দেয়ার শর্তে, ব্যাংকগুলোকে অল্প সুদে ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করেছে৷ তবে এরপরও ইউরোজোন এলাকায় প্রবৃদ্ধির হার কম, বলে মনে করছে ওইসিডি৷ তাই চলতি বছরের জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১.২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৮ শতাংশ করেছে সংস্থাটি৷