স্কুলে পড়ার সময় ভাবতাম ক্যাপ্টেন হওয়া মানেই দেদার ক্ষমতা৷ অন্য স্কুলে গিয়ে জানলাম ক্ষমতা মানে দায়িত্ব৷ এই শিক্ষা আমায় দিয়েছে ভারতের স্কুলে প্রচলিত ‘ক্যাপ্টেন' নির্বাচন, যার চিত্র এক শহরের তুলনায় আরেক শহরে সম্পূর্ণ আলাদা৷
বিজ্ঞাপন
বাবা-মা সরকারি চাকুরে হলে এক জীবনে বেশ কয়েক রকম স্কুলে পড়ার (সৌ)ভাগ্য হয় ভারতের মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা ছেলেমেয়েদের৷ চাকরিসূত্রে একাধিক শহরে বাসা বাঁধতে হয় যে বাবা-মায়েদের, তাদের সন্তানরাই বুঝবে ঠিক কতটুকু আলাদা হয় দুই শহরের স্কুলের ধরন৷ আমিও কোনো ব্যতিক্রম ছিলাম না৷
কিন্তু ছোট শহর হলে যা হয়, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমার বাবা-মাকে চেনেন৷ কেউ কেউ আবার আমার দাদুর ছাত্র/ছাত্রী ছিলেন কলেজে৷ সুতরাং আমাকে ‘ক্লাস ক্যাপ্টেন' বানিয়ে দিলে ‘নেপোটিজম'-এর ধারা অব্যাহত থাকে৷ কেউ আমার বেচারি সহপাঠীদের মতামত নেবার প্রয়োজনটুকুও বোধ করলেন না৷ হয়ে গেলাম কয়েক মাসের জন্য ক্লাস ক্যাপ্টেন৷ তার ফলে যা হলো, হঠাৎ পাওয়া ক্ষমতার জেরে আমি বদলে যেতে লাগলাম৷ ফাঁক পেলেই কীভাবে কোনো বন্ধুর ব্যাগের ভেতর লুকোনো চুইংগাম ধরিয়ে দিয়ে ‘সেরা ক্লাস ক্যাপ্টেন' হওয়া যায়, সেই তালে থাকতাম৷ একবার তো ক্লাস ফোরে পড়া আমার নেতৃত্বেই ক্লাস টেনের দুই দাদা'র ‘পেরেন্টস কল' হয়েছিল৷ তাদের দোষ স্কুলের সময় বাথরুমের পেছনে লুকিয়ে ওয়াকম্যানে গান শোনা৷ আমি তখন ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর৷ আমি তখন মনে মনে অপরাজেয়৷
যাই হোক, গঙ্গা-পদ্মা-বরাক নদী দিয়ে অনেক জল গড়ালো আর আমিও রীতিমত ‘ডানা' ভেঙে শিলচর থেকে কলকাতায় এসে পড়লাম৷ মফস্বলের ‘নেত্রী' আমার কপালে জুটল নাক-উঁচু মেয়েদের কনভেন্ট স্কুল৷ যেখানে ফড়ফড়িয়ে ইংরেজির বন্যা ছোটানো মেয়েরা আমার সিলেটি উচ্চারণ নিয়ে ঠাট্টা করে মজাই পেত৷ ছোট শহরের বড় নেত্রী বড় শহরে এসে বেমালুম চুপ মেরে গেল৷ এমনই চলছিল সবকিছু, কিন্তু ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় গণতন্ত্রের সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো অবশেষে৷
আমাদের স্কুল কলকাতায় বিখ্যাত ছিল বার্ষিক ‘ফেস্ট' বা সাংস্কৃতিক উৎসবের জন্য৷ সেই উৎসবের মঞ্চ থেকে উঠে এসেছেন বাংলা চলচ্চিত্র ও সংগীত জগতের একাধিক তারকা৷ অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মতো নামকরা ব্যক্তিত্বদের সবার শুরু এই স্কুলের ফেস্ট থেকেই৷ কীভাবে কীভাবে যেন আমি সেই ফেস্টের দায়িত্বে থাকা কমিটিতে নির্বাচিত হয়ে যাই৷
আস্তে আস্তে টেলিভিশন জগতে গান গাইতে শুরু করা আমার কাছে এটা যেন হাতে চাঁদ পাওয়ার সমান৷ আর স্কুলে সেই কমিটিতে থাকা মানে বিশাল দায়িত্ব ও সম্মান! কড়া অনুশাসনে চলা কনভেন্ট স্কুলে আমরা ছিলাম একমাত্র দল, যাদের অনুমতি ছিল মোবাইল ফোন নিয়ে স্কুলে আসার৷
প্রথমবার নিজের পরিবারের নামের চাপে নয়, কেবলমাত্র আমার ব্যক্তিগত যোগ্যতায়, সবার মতামত নেবার পরেই এই সুযোগ আমি পেয়েছিলাম৷ ফলে, ভালো কিছু করে নিজের উৎকর্ষ প্রমাণ করবার তাগিদটাও ছিল আগেরবারের চেয়ে অনেক বেশি৷ আর হলোও তাই৷ পুরো অনুষ্ঠান ঢেলে সাজালাম আমরা৷ দিনরাত পড়া ফেলে শুধু ওই ফেস্টের কাজ৷ লাইট, সাউন্ড থেকে স্পন্সরশিপ তোলা, পুলিশের অনুমতি আনানো সব করতাম আমরা আটজন৷
খুদে মন্ত্রীদের চোখে দেশের মন্ত্রিসভা
সম্প্রতি মাধ্যমিক স্তরের ২২ হাজার ৯৬১টি স্কুল ও মাদ্রাসায় স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ এমন এক স্কুলের মন্ত্রিসভার সদস্যরা দেশের মন্ত্রিসভা নিয়ে তাদের ভাবনা জানিয়েছে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মন্ত্রীরা
সব স্কুলের মতোই ঢাকার মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে আট সদস্যের মন্ত্রিসভা৷ প্রত্যেক শ্রেণি থেকে একজন করে পাঁচটি শ্রেণি (ষষ্ঠ-দশম) থেকে পাঁচজন ও পরবর্তী সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া তিন শ্রেণির তিনজনকে নিয়ে এক বছরের এ মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
মেহনাজ তাবাসসুম, প্রধানমন্ত্রী
আমার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে৷ সবার আশা পূরণ করতে হবে, স্কুলের জন্যও অনেক কাজ করতে হবে৷ সেজন্য একটু ভয় লাগে৷ তবে দায়িত্ব তো, তা সবাইকে পালন করতেই হবে৷ দেশের মন্ত্রিসভার সকলেই অনেক ভাল, তারপরেও অনেক খুঁত রয়েছে তাদের মধ্যে৷ সেগুলো যদি তাঁরা শুধরে নেন তাহলে ভালো হয়৷ ভবিষ্যতে বাস্তবে যদি আমি মন্ত্রী হতে পারি তাহলে সবার আগে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করব, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সবসময় কাজ করব৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
সাদিয়া নূর, অনুষ্ঠান ও দিবস উদযাপন মন্ত্রী
তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছি৷ আমরা যেহেতু মন্ত্রী সেহেতু আমাদের দ্বায়িত্বও অনেক৷ আমি সে দ্বায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করি সবসময়৷ এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে আমরা যদি নেতৃত্ব দেই সেটা কীভাবে দিব সেটা জানতে পারছি৷ বর্তমান মন্ত্রিসভায় অনেক নীতিবান মানুষ আছেন৷ তাঁদেরকে আমি আদর্শ মনে করি৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
ফাতেমা মাশরিকী রেজা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র সর্ম্পকে আমরা জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছি৷ মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ায় দেশটা কীভাবে চলছে সে সম্পর্কেও জানতে পারছি৷ দেশের মন্ত্রীদের অনেকের মধ্যেই দুর্নীতি রয়েছে৷ দেশকে সত্যিকারের ভালবাসলে দুর্নীতি থেকে এখনই সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে৷ আমি ভবিষ্যতে মন্ত্রী হতে পারলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য কাজ করব৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
রোদেলা হোসেন, বৃক্ষরোপণ ও বাগানমন্ত্রী
স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের মাধ্যেমে কীভাবে ভোট প্রদান করতে হয় সে সম্পর্কে অভিজ্ঞতা সঞ্চার করতে পেরেছি৷ গণতন্ত্র চর্চার বিষয়টাও শিখতে পেরেছি৷ দেশের মন্ত্রীদের অনেকেই আইন অমান্য করেন, সড়কে উলটো পথে চলেন, এটা আমাকে ব্যথিত করে৷ তাঁরা সঠিকভাবে আইন মানলে সাধারণ মানুষ কখনও আইন ভঙ্গ করবে না৷ আমি কখনো মন্ত্রী হতে পারলে সবার আগে দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করব, দরিদ্রতা দূর করার চেষ্টা করব৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
রিফাত তাসফিয়া, পানিসম্পদমন্ত্রী
স্কুল কেবিনেটে মন্ত্রী হওয়ায় বিদ্যালয়ের সেবায় সবসময় কাজ করব৷ স্কুলের উন্নয়ন আর শিক্ষার্থীদের জন্যও সবসময় কাজ করব৷ ভবিষ্যতে মন্ত্রী হতে পারলে দেশের সেবার নিজেকে সবসময় নিয়োজিত রাখব৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
মারিয়া মীন, পুস্তক ও লিখন সামগ্রী মন্ত্রী
স্টুডেন্টস কেবিনেটে মন্ত্রী হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো স্কুলের সামনে তুলে ধরে সেগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব৷ দেশের মন্ত্রীদের সম্পর্কে তেমন কিছুই জানিনা৷ তবে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর কাজগুলো ভাল লাগছে৷ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস মনে হয় অল্প সময়েই তিনি বন্ধ করতে পেরেছেন৷ ভবিষ্যতে মন্ত্রী হতে পারলে দেশের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করব৷
ছবি: DW/M.M. Rahman
7 ছবি1 | 7
আজ সেই ফেস্টের দিনগুলি থেকে প্রায় ১১ বছর পার করে এসেছি৷ পেছনে তাকালে বুঝতে পারি যে ব্যক্তি, গবেষক, সহকর্মী বা দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমার দৃষ্টিভঙ্গির অনেকাংশেই রয়েছে এই দুই স্কুলে পড়ার সময় নেতৃত্বদানের ভিন্ন অভিজ্ঞতা৷ ফেস্টের সময় শিখেছিলাম কীভাবে মঞ্চে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয়, যা পরে গিয়ে আমার সংগীত ও টেলিভিশন জীবনে কাজে লেগেছে৷ শুধু তাই নয়, কলেজে ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে প্রতি পদে টের পেয়েছি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সাংগঠনিক নেতৃত্বদান৷ এই সব শিক্ষার সাথে সাথে ক্ষমতাকে চিনিয়েছে আমায় সেই ফেস্টই৷ক্ষমতার অপব্যবহার কাকে বলে, এখন বুঝতে পারি হয়ত৷ কিন্তু যদি আমার প্রথম স্কুলের অভিজ্ঞতার পর দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা না হতো, তাহলে কি আদৌ বুঝতে পারতাম এই ফারাক?
ক্লাসের সমস্ত সহপাঠীদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে যদি আমায় পালন করতে হতো এমন এক দায়িত্বের বোঝা, যা আবার আমার অপছন্দ, তাহলে কী হতো? সারা জীবন গান-বাজনা-নাটক-নাচের দিকে আকৃষ্ট আমি৷ আমার এই নেশাকে কাজে লাগিয়েছিলেন আমার শিক্ষিকারা৷ আমার ভেতর থেকে যে আসলেই একজন সাংস্কৃতিক সংগঠক বেরোতে পারে, তা আমি অনুধাবন করার আগেই আমার স্কুলের শিক্ষিকারা বুঝেছিলেন৷ গনতান্ত্রিকভাবে নেতৃত্ব গঠনের সাথে সাথে তারা মাথায় রেখেছিলেন কোন কাজের জন্য আসলেই কার কতটুকু যোগ্যতা৷
স্কুলে পাঠরত ছেলেমেয়েদের অন্তত একবার হলেও স্কুলের নির্বাচনে বা কোনো ধরনের নেতৃত্বমূলক কাজে অংশ নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি৷ দুই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ছেলেমেয়েদের গণতন্ত্রের পাঠ দেওয়াটা৷ বাবা-মায়ের সামাজিক বা আর্থিক অবস্থান যাতে কোনোভাবেই তাদের সন্তানদের ক্লাসের বা স্কুলের নেতৃত্ব নির্ধারণের উপর কোনো প্রভাব না ফেলতে পারে, তা মাথায় রাখতে হবে৷ নাহলে পরবর্তী প্রজন্মের ভেতরে জন্মাবে না সাম্যের চেতনা৷ তারা কোনোদিন জানবে না যে, ক্ষমতা আয় করতে হয়৷ কোনোমতেই দায়িত্ব বা ক্ষমতার সম্মান বাজারে কিনতে পাওয়া চাল-ডালের মতো পণ্য নয়৷
আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে আমাদের শিশুরা না শেখে যে, দায়িত্ব মানেই অপার, প্রশ্নহীন ক্ষমতা৷ আমরা চাই না যে তারা শিখুক যে, যার হাতে ক্ষমতা, সেই অপরাজেয়৷ গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে আগে নিশ্চিতকরতে হবে সমাজে সার্বিকভাবে গণতন্ত্রচর্চা, যা শুরু হয় শিক্ষাঙ্গন থেকেই৷ ফলে স্কুলের চার দেওয়ালের ভেতর থেকে আসা গণতন্ত্রের বার্তা এক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা এখন বুঝে কাজে লাগাতে হবে৷
স্কুল শিক্ষার্থীদের নির্বাচন কোন দেশে কেমন?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কুল পর্যায় থেকেই শিশুদের নেতৃত্ব চর্চায় উৎসাহ দেয়া হয়৷ কোথাও কাউন্সিল, কোথাও গভর্নমেন্ট, কোথাওবা কেবিনেট গঠনের মাধ্যমে এই সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে৷ কোনো কোনো দেশে এই চর্চা চলছে প্রায় শত বছর ধরে৷
ছবি: Bdnews24.com
কেন গুরুত্বপূর্ণ
নিজেদের জীবনে প্রভাব ফেলবে এমন সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিশুদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত৷ জাতিসংঘের ‘কনভেনশন অন দি রাইটস অব দি চাইল্ড’ বা ইউএনসিআরসি এর ১২ ধারায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে৷ স্কুলে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নির্বাচন তেমনই একটি ধারণা যার মাধ্যমে শিশুরা মত প্রকাশ করতে ও নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে শিখে৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Mukherjee
যুক্তরাষ্ট্রে ৯০ বছরের চর্চা
যক্তরাষ্ট্রে উচ্চমাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচন হয়৷ কোথাও স্টুডেন্ট কাউন্সিল, কোথাও স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট নামে তা পরিচিত৷ নির্বাচিতদের কেন্দ্রীয় সংগঠনও রয়েছে৷ তেমনই একটি ন্যাশনাল স্টুডেন্ট কাউন্সিল৷ ১৯৩১ সাল থেকে এটি স্টুডেন্ট কাউন্সিলগুলোকে সক্রিয় রাখতে ভূমিকা পালন করছে৷ কাউন্সিল বা গভর্নমেন্টের সদস্যদের দায়িত্ব, নির্বাচন পদ্ধতিতে অবশ্য প্রতিষ্ঠানভেদে পার্থক্য রয়েছে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com/R. Majewski
যুক্তরাজ্যে সরকারি সহযোগিতা
স্কুলগুলোতে স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠনে উৎসাহ দিয়ে থাকে যুক্তরাজ্যের সরকার৷ এ নিয়ে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলাদা একটি প্রকল্প আছে, যার নাম ‘ডেমোক্রা স্কুল’৷ বিদ্যালয়গুলোতে স্কুল কাউন্সিল গঠনে এর মাধ্যমে সহযোগিতা দেয়া হয়৷ অন্যদিকে ওয়েলসের প্রতিটি স্কুলে স্টুডেন্ট কাউন্সিল থাকা আইনত বাধ্যতামূলক৷ কীভাবে নির্বাচন হবে, কাউন্সিলের কার্যক্রম কী হবে তা নিয়ে ২০০৫ সালে বিধিমালাও জারি করেছে সেখানকার সরকার৷
ছবি: S.Ponsford
ইউরোপে শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র চর্চা
ইউরোপের ব্যক্তিমালিকানাধীন স্কুলগুলোর নেটওয়ার্ক ‘ইউরোপিয়ান স্কুলস’৷ তাদের গঠনতন্ত্রে ক্লাস প্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কমিটির জন্য ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে৷ পাশাপাশি প্রতি বছর ৯ মে’র মধ্যে স্কুলে আলাদা একটি ছাত্র কমিটিও গঠন করতে হয়৷ যেখানে সভাপতি, সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষসহ কমপক্ষে ছয়টি পদে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Gea
ভারতে সহযোগিতা দেয় ইসি
ভারতে অনেকদিন ধরেই স্কুল শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রচলন রয়েছে৷ শিক্ষার্থীরা একজন প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন পদের প্রার্থীদের নির্বাচন করে৷ প্রতিযোগিতামূলক ও জাতীয় নির্বাচনের আবহ তৈরি করতে অনেক সময় এমনকি রাজ্যের নির্বাচন কমিশন ভোটিং মেশিনসহ তাদের অন্যান্য সহযোগিতাও দিয়ে থাকে৷
ছবি: Imago/Hindustan Times
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের আদলে
নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ছাত্রদের প্রতিনিধি বেছে নেয়া হয় পাকিস্তানের বিভিন্ন স্কুলে৷ কোনো কোনো স্কুলে জাতীয় নির্বাচনের আদলেই হয় এই আয়োজন৷ মনোনয়ন, প্রচার, ভোটগ্রহণ সবই চলে গুরুত্বের সাথে৷
ছবি: DW/I. Jabeen
বাংলাদেশে স্কুল শিক্ষার্থীদের মন্ত্রিসভা
বাংলাদেশে গত চার বছর ধরে স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোতে আয়োজিত হচ্ছে ছাত্রদের মন্ত্রিসভা বা স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন৷ প্রতিটি স্কুল থেকে মোট আটজন প্রতিনিধি নির্বাচন করে শিক্ষার্থীরা৷ এর মধ্যে প্রতিটি শ্রেণি থেকে এক জন এবং সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্তদের মধ্য থেকে তিনজনকে বাছাই করা হয়৷ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে কেবিনেটে একজন প্রধানমন্ত্রী এবং বাকিরা বিদ্যালয়ে মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত পায়৷