ভারতের স্কুলে পড়ানোর জন্য ‘অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে বিশেষ মডিউল তৈরি করলো এনসিইআরটি। একটি তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য, অন্যটা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য।
অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাকিস্তানের আক্রমণের মোকাবিলা করছে। ছবি: RAKESH BAKSHI/AFP
বিজ্ঞাপন
অপারেশন সিন্দুর বা সিঁদুর নিয়ে বিশেষ মডিউলে শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবিসহ উক্তি দিয়ে। তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য মডিউলে ব্যবহার করা প্রধানমন্ত্রীর উক্তি হলো, ''অপারেশন সিঁদুর কোনো সামান্য সেনা অভিযান নয়। এটা ভারতের নীতি, অভিপ্রায় ও নির্ণায়ক ক্ষমতার ত্রিবেণী।''
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মডিউলে মোদীর উক্তি হলো,''অপারেশন সিঁদুর নিছক একটা নাম নয়, এটা দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের অনুভূতির প্রতিফলন। অপারেশন সিঁদুর হলো ন্যায়ের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি...ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে নিখুঁত নিশানা করে আক্রমণ শানিয়েছে। সন্ত্রাসবাদীরা কখনো ভাবতে পারেনি, ভারত এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু যখন দেশ ঐক্যবদ্ধ এবং জাতীয় স্বার্থ সর্বোপরি, এই ভাবনায় তাড়িত, তখন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং ফললাভ করা যায়।''
বিজ্ঞাপন
এনসিইআরটি মডিউল কী?
এনসিইআরটি মডিউল হলো, ইংরেজি এবং হিন্দিতে সাপ্লিমেন্টারি রিসোর্স, যা বর্তমান ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ভিত্তিক হয়। এগুলি হলো , নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ছোট প্রকাশনা, যা পাঠ্যবইয়ের অংশ নয়, কিন্তু পোস্টার, আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে শেখানো হয়।
মডিউলে যা বলা হয়েছে
দুইটি মডিউলেই শিক্ষক ও পড়ুয়াদের কথোপকথনের মাধ্যমে অপারেশন সিঁদুরের বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির ক্ষেত্রে প্রথমে শিক্ষক বলছেন, তোমরা ফুল, নদী, খুশিয়াল পরিবারগুলিকে নিয়ে একটা উপত্যকার কথা ভাবো। তারপরই সেখানে বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ। মানুষ আক্রান্ত। চারদিকে ভয়। কেউ যখন নিরপরাধ মানুষের ক্ষতি করে তাকে কী বলে জানো? পড়ুয়া জবাব দিচ্ছে, সন্ত্রাসবাদ।
রাজৌরিতে গোলাবর্ষণে ভাঙছে বাড়ি ঘর, নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছে মানুষ
শুরু হয়েছিল ড্রোন হামলা দিয়ে। তার পাশাপাশি রাজৌরিতে ভয়ংকর গোলাবর্ষণ করলো পাকিস্তান। ভাঙলো বাড়ঘর। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছে।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
রাতে ড্রোন হামলা
শুক্রবার রাত থেকেই শুরু হয়েছিল আক্রমণ। রাতেরআকাশে পাক ড্রোন ধেয়ে আসতে দেখা গেছে। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেই হামলা প্রতিহত করে বলে ভারত জানিয়েছে।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
ভোররাতে হামলা
শনিবার সকাল পাঁচটা থেকেই রাজৌরিতে চলেছে শেলিং বা গোলাবর্ষণ। এই অঞ্চল থেকে অল্প দূরেই সীমান্ত। সেখান থেকে ভোর রাতে ধেয়ে এসেছে একের পর এক গোলা। আবাসিক এলাকায় গিয়ে পড়েছে গোলাগুলি।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
গোলার আঘাতে
সীমান্ত থেকে মাত্র ছয় কিমি দূরে রাজৌরির এই গ্রামে আছরে পড়েছে গোলা। গ্রামের বাড়ির একটা বড় অংশ কার্যত গুঁড়িয়ে গেছে সেই গোলার আঘাতে।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
উড়ে যাওয়া ছাদ
এই বাড়িটির ছাদ উড়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে দেওয়াল। মাত্র কয়েক ঘণ্টার গোলাবর্ষণে বাড়িটি ভেঙে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
গোলার ক্ষত
ওই গ্রামেরই ওপর একটি বাড়িতে গোলা ভেঙে ছিটকে পড়েছে। তার টুকরোগুলি বাড়ির দেওয়ালে গিয়ে লাগে। সেই ক্ষতচিহ্ন।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
সীমান্ত লাগোয়া
শুক্রবার রাতের গোলায় গুড়িয়ে যাওয়া এই বাড়িটি সীমান্তের খুবই কাছে। অনতিদূরে যে পাহাড় দেখা যাচ্ছে তার ওপারে পাকিস্তান। ওই দিক থেকেই চলছে গোলাবর্যণ।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
একমাস আগেই
এই বাড়ির মালিক চম্পা দেবী জানিয়েছেন, বাড়িটি মাত্র তিন মাস আগে তৈরি হয়েছে। তারা একমাস হলো থাকতে শুরু করেছিলেন। এখন সেই বাড়ি ছত্রখান করে দিয়েছে গোলা।
রাজৌরি থেকে পুঞ্চ যাওয়ার রাস্তায় কড়া নিরাপত্তা দেখা যাচ্ছে। সুরক্ষার কারণে সাধারণ মানুষকে এই পথে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ছবি: AB Rauoof Ganie/DW
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে
শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত নিরন্তর গোলা আক্রমণে রাজৌরির বহু মানুষ ঘর ছেড়েছেন। শনিবার সকাল থেকেই বাস, ট্যাক্সি, ভ্যানে করে তারা যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।
ছবি: Rauoof Ganie/DW
10 ছবি1 | 10
এভাবে সংলাপ এগোচ্ছে। তার মধ্যে উরি, পুলওয়ামার প্রসঙ্গ এসেছে। তারপর পহেলগামের কথা। ভারত কীভাবে বালাকোট আক্রমণ করেছিল, তার কথা বলা হয়েছে। বলা হচ্ছে, পহেলগামের পর ভারত কীভাবে সন্ত্রাসবাদীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে। রাফাল, মিরাজের মতো যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মোস, আকাশের মতো ক্ষেপণাস্ত্রর কথা বলা হয়েছে। এস ৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কথা বলা হয়েছে।
এটাও বলা হয়েছে, পাকিস্তান সাধারণ মানুষ ও তাদের ঘরবাড়ির উপর আক্রমণ চালিয়েছে। ভারত শুধু সন্ত্রাসবাদী ও সামরিক পরিকাঠামো আক্রমণ করেছে। এর ফলে পাকিস্তানের ৩৫ থেকে ৪০ জন সেনা মারা গেছে। এটাও জানানো হয়েছে, ভারতীয় এজেন্সি প্রমাণ পেয়েছে, পাকিস্তানের আইএসআই এবং লস্কর ই তইবা এই চক্রান্ত করেছিল। তাদের নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তানের সেনা ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
বলা হয়েছে, অপারেশন সিঁদুর হলো ভারতের প্রযুক্তির ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার একটা উদাহরণ।
পড়ুয়াদের কাছে বার্তা
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, ভাষাবিদ, লেখক পবিত্র সরকার ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''এটা এনসিইআরটি-র অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত। আমার মনে হয় না, এই ধরনের মডিউলের কোনো দরকার ছিল।''
তার যুক্তি, ''যুদ্ধ অস্থায়ী বিষয়। আজ কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ আছে, পরে ভালো হতে পারে। এভাবে পড়ুয়াদের মনে অন্য দেশের প্রতি স্থায়ী বিদ্বেষ তৈরি হবে।''
পাকিস্তানে ভারতের হামলা, বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া
বুধবার রাতে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী৷ ভারত সরকারের দাবি, ‘জঙ্গি আস্তানা’ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে৷
ছবি: Punit Paranjpe/AFP/Getty Images
এটা লজ্জানক, আশা করি দ্রুতই থামবে: ট্রাম্প
বুধবার রাতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভারতের হামলার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘‘এটি লজ্জাজনক৷ মাত্রই এ বিষয়ে শুনতে পেলাম৷’’ তিনি বলেন, ‘‘তারা দশকের পর দশক ধরে বিতণ্ডায় লিপ্ত৷ আমি আশা করি এটি দ্রুতই থামবে৷’’
ছবি: Evan Vucci/AP/picture alliance
উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব
হামলার বিষয়ে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘‘লাইন অব কন্ট্রোল, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমানায় ভারতের সামরিক অভিযানের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব খুবই উদ্বিগ্ন৷’’ বিবৃতিতে দু’দেশের প্রতিই সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানানো হয়৷ জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র আরো বলেন, ‘‘ভারত-পাকিস্তানের এমন সামরিক সংঘাত বিশ্ব সামলাতে পারবে না৷’’
ছবি: Richard Drew/AP Photo/picture alliance
‘দুঃখজনক’ বললো চীন
হামলার ঘটনার পর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘বুধবার প্রথম প্রহরে ভারতের সামরিক অভিযান দুঃখজনক৷ চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন৷’’ বিবৃতিতে ওই মুখপাত্র শান্তি রক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান৷
ছবি: Pavel Bednyakov/REUTERS
দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জার্মানির
ভারত এবং পাকিস্তানকে উত্তেজনা আর না বাড়ানোর আহ্বান জানিযেছে জার্মানি৷ সেইসাথে দেশটির নাগরিকদের ওই অঞ্চল ভ্রমণ না করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রাণলয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা এবং ভারতের সামরিক পদক্ষেপের পর, দুই দেশেরই দায়িত্বশীল আচরণ করা জরুরি৷
ছবি: Michael Kuenne/PRESSCOV/Zumapress/picture alliance
সংযম প্রদর্শনের আহ্বান ফ্রান্সের
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিএফ১-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন-নুয়েল বারো সংঘাত ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহান জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ থেকে নিজেদের সুরক্ষা দিতে ভারতের ইচ্ছার বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি৷ তবে আমরা অবশ্যই ভারত এবং পাকিস্তানকে উত্তেজনা কমাতে এবং বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষা দিতে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই৷’’
ছবি: Magali Cohen/Hans Lucas/AFP/Getty Images
উত্তেজনা নিরসনে সহায়তার প্রস্তাব যুক্তরাজ্যের
ভারত ওবং পাকিস্তানের মধ্যে চলমান অস্থিরতা নিরসনে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাজ্য৷ বুধবার রাতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এমন প্রস্তাব দেন যুক্তরাজ্যের ট্রেড সেক্রেটারি জোনাথন রেনল্ডস৷ বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বার্তা হলো, আমরা উভয় দেশের বন্ধু. সঙ্গী৷ দুই দেশকে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত৷’’
ছবি: House of Commons/UK Parliament/PA Wire/picture alliance
‘ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করে ইসরায়েল’
ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘‘ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে ইসরায়েল৷ সন্ত্রাসীদের জানা উচিত যে, নিরীহ মানুষের উপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর লুকিয়ে থাকার কোনো জায়গা নেই৷’’
ছবি: Valerio Rosati/Zoonar/picture alliance
চাল সরবারাহ নিয়ে উদ্বেগে মালয়েশিয়া
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বা উত্তেজনার ফলে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে চালের আমদানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ডেটুক সেরি মোহামাদ সাবু৷ তিনি বলেন, ‘‘তাদের (ভারত ও পাকিস্তানের) রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা মালয়েশিয়ার খাদ্য নিরাপত্তার জন্য জরুরি৷’’ উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার আমদানিকৃত চালের প্রায় ৪০ ভাগ ভারত ও পাকিস্তানের৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/V. Thian
‘শান্ত ও সংযত’ থাকার আহ্বান বাংলাদেশের
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ৷ বুধবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের এই উদ্বেগের কথা জানায়৷ একইসঙ্গে দুই দেশকে শান্ত ও সংযত থাকা এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷
ছবি: DW
পাকিস্তানে ভারতের হামলা
কাশ্মীরে ২২ এপ্রিল জঙ্গি হামলার জবাবে যে-কোনো সময়ই পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে ভারত- এমন কথা বলা হচ্ছিল৷ এরই ধারাবাহিকতায়, ৭ মে, বুধবার রাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত৷ ভারত সরকার বলছে, সুনির্দিষ্ট জঙ্গি আস্তানায় হামলা চালিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী৷ হামলায় ২৬জন নিহত হয়েছেন বলে পাকিস্তান সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়৷
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
10 ছবি1 | 10
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দেবাশিস ভৌমিক ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''পশ্চিমবঙ্গের পাঠ্যবইতে সিঙ্গুর পড়ানো হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় সম্পর্কেও দুই লাইন লেখা ছিল। সিঙ্গুর সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রী জানতেই পারে, তবে তা পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে কেন হবে? একইরকমভাবে অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কেও তারা জানতে পারে, জানেও। তবে তা স্কুলের মডিউলভুক্ত করার কোনো দরকার নেই।''
দেবাশিস মনে করেন, ''যখনই এই ধরনের প্রয়াস হয়, তখন এর মধ্যে রাজনীতি ঢোকার সুযোগ থাকে, জাতি বা সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষও ঢুকে যেতে পারে। তাই স্কুলের বইতে সিঙ্গুর থেকে অপারেশন সিঁদুরের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।''
লেখক, উদ্ভাস পত্রিকার সম্পাদক এবং সাংবাদিক দীপঙ্কর দাশগুপ্তও এই বিষয়ে দেবাশিসের সঙ্গে একমত। ডিডাব্লিউকে দীপঙ্কর বলেছেন, ''সিঙ্গুর নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। উর্বরা জমিকে কেন শিল্পের জন্য বেছে নেওয়া হলো, সেটা অন্য বিষয়, সিঙ্গুর ছিল একটা বিশেষ রাজনৈতিক আন্দোলন। সেটা পাঠ্যসূচিতে কেন ঢোকানো হবে? রাজ্যের ভেঙে পড়া শিক্ষা পরিকাঠামো ঠিক করার দিকে বরং নজর দেওয়া হোক।''
দীপঙ্করের মতে, ''পহেলগাম নিয়েও প্রশ্ন আছে। ওরকম জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্রে কেন নিরাপত্তা বাহিনী ছিল না? কেন কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না? সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে কেউ সমর্থন করে না। ভারত বারবার এই সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার শিকার। তার বিরুদ্ধে লড়াই করতেই হবে। তারপরেও অপারেশন সিঁদুরকে এখনই বাচ্চাদের পড়ানোর মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল কি?''