1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্কুল কেবিনেটকে ‘রাজনীতিমু্ক্ত' রাখুন

১৫ এপ্রিল ২০১৯

শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু রাজনীতি শিখুক৷ শিখুক সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চা৷ স্কুল কেবিনেট তার জন্য একটা চমৎকার প্লাটফর্ম৷ এই রাজনৈতিক প্লাটফর্মটিকে মূল ধারার রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে হবে৷

Bangladesh Schulwahl in Dhaka
ছবি: Bdnews24.com

ছাত্র রাজনীতিকে বরাবরই আমি ইতিবাচকভাবে দেখি৷ অনেকেই ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন আছে কী নেই, তা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তোলেন৷ বলেন, শিক্ষার্থীদের কাজ শুধু পড়াশোনো করা৷ কিন্তু আমি বলি, শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষণীয় সব কিছুই করতে পারে৷ যা তার ভালো লাগে সবই সে করবে৷ তাতেই সে অনেক কিছু শিখে যাবে, যা তার জীবনে কাজে লাগবে৷ খেলাধুলা বা সংস্কৃতি বা রাজনীতি চর্চা সবকিছু থেকেই শেখার আছে৷

এবার মূল প্রসঙ্গে আসি৷ তা হলো, স্কুল-মাদ্রাসার কেবিনেট নির্বাচন৷ এই আইডিয়াটি আমার কাছে অনেক চমৎকার লেগেছে৷ ২০১৫ সাল থেকে এটি চলছে৷ মার্চ মাসে ১৬ হাজার ২শ' ৪৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও ৬ হাজার ৭শ' ১৬টি দাখিল মাদ্রাসায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯শ' ৬০টি পদের জন্য ২ লাখ ৩১ হাজার ১শ' ২৬ জন ও মাদরাসা পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৭শ' ২৮টি পদের জন্য ৯৩ হাজার ৭শ' ১০ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়৷

শিক্ষার্থীরা প্রত্যক্ষ ভোটে প্রত্যেক স্কুলে ৮ সদস্যের স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন করে৷ ষষ্ঠ-দশম শ্রেণির যে-কোনো শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারে৷ বিষয়টি অনেক সুন্দর৷ উৎসবমুখর পরিবেশে তারা ভোট দিচ্ছে, নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছে এবং মন্ত্রিসভা নির্বাচিত হচ্ছে৷

যুবায়ের আহমেদ, ডয়চে ভেলেছবি: bdnews24.com

ছোটবেলায় যখন বিতর্ক করতাম, তখন কয়েকটি ফরম্যাট খুব আকর্ষণীয় লাগত৷ সংসদীয় বিতর্ক, আদালত বিতর্ক ইত্যাদি৷ আমার সংসদীয় বিতর্ক খুব ভালো লাগত৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, বিরোধী দলের নেতা থাকতেন, সংসদীয় নেতা থাকতেন৷ আমরা এক্সিবিশন শোগুলোতে বিষয়টিকে জনগণের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য সংসদে ওয়াক আউট করতাম৷ ঝগড়া করতাম৷ এক পক্ষ আরেক পক্ষকে টিজ করতাম৷ বিষয়টি দর্শকরা খুব মজা পেতেন৷ কিন্তু যে বিষয়টি তখন কখনো চিন্তাতেও আসেনি তা হলো, আমরা জনগণের কাছে আকর্ষণীয় করবার জন্যসারাবিশ্বের সংসদগুলোতে যেসব ঘটনা ঘটে তেমন ঘটনা ঘটাবার চেষ্টা করতাম৷ যেমন, ফাইল ছোড়া, ঝগড়া করা, টিজ করা ইত্যাদি৷ কিন্তু একটি আদর্শ সংসদ কেমন হওয়া উচিত, তা কখনো তুলে ধরার চেষ্টা করতাম না, পাবলিক মজা পাবে না বলে৷

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে৷ সেগুলো হলো, সহিংসতা, ভোট কারচুপি, ভীতি ও পেশিশক্তি প্রদর্শনসহ আরো বেশ কিছু বিষয়৷ শিক্ষার্থীদের কেবিনেট নির্বাচনে এগুলোর মাত্রা তেমন না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে হবার শঙ্কা রয়েছে এবং আগে ঘটেছে৷ কিন্তু সুখের বিষয় হলো, ২০১৯ সালের নির্বাচনে তেমন কিছু ঘটেনি৷ এজন্য স্কুল-মাদ্রাসাগুলোর প্রশাসন সাধুবাদ পেতে পারে৷ কিন্তু আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, এই নির্বাচনগুলোতে যেন জাতীয় বা স্থানীয় রাজনীতির ছায়া না পড়ে৷ তাহলে আদর্শ নির্বাচন কী হওয়া উচিত, আদর্শ গণতন্ত্র কী হওয়া উচিত, তা হাতে কলমে শেখার যে বিরাট সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত হবে শিক্ষার্থীরা৷ এই খেয়াল রাখার দায়িত্বটা সরকার বা শিক্ষা প্রশাসন, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের৷ এরা ভবিষ্যতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতিতে যে ভূমিকা রাখবে, তাতে আজকের এই শিক্ষার অনেক প্রভাব থাকবে, যেটা আজ হয়তো বুঝবে না এই শিক্ষার্থীরা, যেটা আমরাও ছোটবেলায় বুঝিনি৷ 

ব্লগপোস্টটি কেমন লাগলো? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ