পড়াশোনা? মোটেও না৷ স্কুলে যেতে যাদের ভালো লাগেও, তাদের ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ সময় কারণটা থাকে বন্ধুদের সাথে খেলাধুলার সুযোগটা কাজে লাগানো৷ কিন্তু স্কুল নিয়ে মিলার মতো এতোটা বিজ্ঞ মতামত হয়তো আপনি বড় হয়েও দিতে পারবেন না৷
বিজ্ঞাপন
বাচ্চাদের মতো সৎ মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যায়৷ নতুন কাপড়ে আপনাকে কেমন লাগছে বুঝতে পারছেন না? জিজ্ঞেস করুন কোনো এক শিশুকে, মিলে যাবে সঠিক উত্তর৷ তার মতামত আপনার পছন্দ হলো কিনা, তার ধারও শিশুরা ধারে না৷
মিলাও এমনই এক মিষ্টি বাচ্চা, যার বয়স মাত্র দু'বছর৷ তার বাবা-মা তাকে ভর্তি করিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনার এক প্রি-স্কুলে৷ সন্তান প্রথমবারের মতো স্কুলে গেলে সব বাবা-মাই দিনশেষে জানতে চান, কেমন হলো অভিজ্ঞতা৷
অন্য সবার মতো মিলাও কিছু একটা বলে খেলায় মেতে উঠতে পারতো৷ কিন্তু মিলা তো একটু অন্যরকম৷ কারণ জানতে দেখতে হবে ইউটিউবের এই ভিডিওটি৷
রীতিমতো চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কেন এই স্কুল তার একেবারেই পছন্দ না, জানিয়ে দিয়েছে মিলা৷ আচার-আচরণ, অঙ্গভঙ্গি দেখে বোঝার উপায়ই নেই, তার বয়স মাত্র দুই৷
মজার ব্যাপার হলো, ভিডিওর শুরুতেই মিলাকে বলতে দেখা যায় প্রি-স্কুলের বদলে সে আইন বিষয়ক কোনো স্কুলে ভর্তি হয়ে চেয়েছিল৷ কিন্তু তার বয়স মাত্র ২ হওয়ায় তাকে বাধ্য হয়েই স্কুলে ভর্তি হতে হয়৷
১১ আগস্ট, অর্থাৎ মাত্র এক সপ্তাহ আগেইইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে এই ভিডিও৷ কিন্তু দু'বছরের বিজ্ঞ মিলাকে মানুষ এতটাই পছন্দ করেছে যে, এই এক সপ্তাহেই ভিডিওটি দেখা হয়েছে এগার লাখেরও বেশি বার৷
আজকাল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক তাজা খবর শেয়ার করা হয়৷ কিন্তু সেই খবরগুলোতে অনেক ভুয়া খবরও থাকে৷ অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্তও হন৷ ছবিঘরে থাকছে ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি ছড়ানো কয়েকটি ভুয়া খবর৷
একটি ফেসবুক লাইভে দেখাচ্ছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে নভোচারীদের স্পেসওয়াক করার দৃশ্য৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হয়ে যায়৷ ইউএনআইএলএডি, ভাইরাল ইউএসএ এবং ইন্টারেসটিনেট- এটি পোস্ট করার পর ফেসবুকে বিপুল পরিমাণ লাইক ও শেয়ার হয়৷ কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ফুটেজের কোথাও নাসা বা ফেসবুকের লাইভ স্ট্রিম কথাটির উল্লেখ ছিল না৷ পরে নাসা’র এক মুখপাত্র জানান, ভিডিওটি ২০১৩ সালে রুশ নভোচারীদের ধারণ করা ভিডিও৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Nasa
করোনা বিয়ারের প্রতিষ্ঠাতার উইল
২০১৬ সালের অন্যতম ভাইরাল খবর এটি-করোনা বিয়ার-এর প্রতিষ্ঠাতা আন্তোনিও ফার্নান্দেজ মৃত্যুর আগে তাঁর জন্মভূমি স্পেনের একটি গ্রামের ৮০টি পরিবারের মধ্যে ২০ কোটি ইউরো দান করার উইল করে গেছেন৷ ডেইলি মেইল প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে স্থানীয় পত্রিকার বরাত দিয়ে৷ পরে আরটি, দ্য ইন্ডেপেন্ডেন্ট, দ্য মিররসহ বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রও তা প্রকাশ করে৷ পরে ফার্নান্দেজের পরিবার প্রতিবাদ জানানোয় তারা খবরটি সরিয়ে ফেলে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/M. Rourke
ধর্ষণের ভুয়া খবর
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বার্লিনে লিজা নামের এক জার্মান কিশোরীকে এক দল অভিবাসীর ধর্ষণ করার খবর ভাইরাল হয়ে যায়৷ বিশেষ করে রুশ মিডিয়ায় খবরটি বিপুল কভারেজ পায়৷ পরে কিশোরীটি জানায়, সে সব কিছু বানিয়ে বলেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Wuestenhagen
মার্কিন নির্বাচন
মার্কিন নির্বাচনে যে ভুয়া খবরটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছিল তাতে ছিল ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধের মাত্রার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের তুলনা৷ এছাড়া নির্বাচনের ফলাফলের এমন একটি মানচিত্র ওয়াশিংটন পোস্ট প্রকাশ করেছিল, যেটির দিকে ভালোভাবে তাকালে বোঝা যায় একেবারে ওপরে ২০১২ সালের উল্লেখ রয়েছে৷
ট্রাম্প এবং সিম্পসন
সিম্পসন কার্টুনে বেশ কিছু ভবিষ্যদ্বাণী থাকে৷ আর এ কারণে ট্রাম্প নির্বাচনে জেতার পর একটি ট্রল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে বলা হয় সিম্পসনে আগেই বলা হয়েছিল, ট্রাম্প নির্বাচনে জিতবেন৷ কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু হয়নি৷ অথচ টুইটারে বাস্তব আর পুরোনো ভুয়া সিম্পসনের ছবি দেয়ায় নিউজটি ভাইরাল হয়ে যায়৷
ছবি: INTERTOPICS / Taschen-Verlag
শোকার্ত ক্যাঙ্গারু
ডেইলি মেইল এমন একটি ছবি প্রকাশ করে যেখানে দেখানো হয় এক পুরুষ ক্যাঙ্গারু নারী ক্যাঙ্গারুকে দুই হাতে ধরে অশ্রুসজল চোখে তাকিয়ে আছে৷ ইভান সুইৎজারের তোলা ছবিটি এভাবে উপস্থাপনের কারণে ভাইরাল হয়ে যায়৷ তবে ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞরা জানান, নারী ক্যাঙ্গারুর সঙ্গে যৌন মিলনের ইচ্ছে জাগলে পুরুষ ক্যাঙ্গারুর চোখ অশ্রুসজল হয়, তখনই তারা দুই হাত দিয়ে ঝাঁকিয়ে নারী ক্যাঙ্গারুকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করে৷
ছবি: DW/C. Atkinson
বিখ্যাত গণমাধ্যমের নকল
ভুয়া খবর প্রচারকারীরা জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত ওয়েবসাইটগুলোকে নকল করে ৷ ফলে মানুষ খুব ভালোভাবে লক্ষ্য না করলে বুঝতে পারে না, সেগুলো প্রকৃত ওয়েবসাইট, নাকি ভুয়া৷ যেমন, এবিসি নিউজ ডট কম এর সঙ্গে ডট সিও যুক্ত করে (ABCnews.com.co), ব্লুমবার্গের সঙ্গে ডট এমএ যুক্ত করে, ওয়াশিংটন পোস্ট ডট কম- এর সঙ্গে ডট সিও যুক্ত করে কয়েকটি ভুয়া সংবাদ সাইট তৈরি করা হয়েছে৷ এসব ওয়েবসাইটের কাজই ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করা৷