কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় এবং উত্তরপ্রদেশের সমস্ত স্কুলপাঠ্য থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে মুঘল যুগ। এমনই নির্দেশ দিয়েছে পাঠ্যক্রম সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা।
বিজ্ঞাপন
সুলতানি আমল এবং মুঘল আমল পড়ার প্রয়োজন নেই ছাত্রছাত্রীদের। এমনই মনে করে এনসিইআরটি বা কেন্দ্রীয় পাঠ্যক্রম সংক্রান্ত সংস্থা। তারা নির্দেশ দিয়েছে, ওই বিষয়ক সমস্ত চ্যাপ্টার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। এখানেই শেষ নয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ভারতে সমাজতান্ত্রিক এবং বামপন্থি আন্দোলনের ইতিহাস। বাদ দেওয়া হচ্ছে স্বাধীনতা পরবর্তী কংগ্রেস আমলের একাধিক বিষয়। ভারতের গণতন্ত্র এবং নানা ভাষা নানা পরিধানের বৈচিত্র সংক্রান্ত চ্যাপ্টার বাদ দেওয়া হচ্ছে সিভিক সায়েন্সের বই থেকে। বিজ্ঞানের বই থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে জননতন্ত্র সংক্রান্ত চ্যাপ্টার।
পুরান দিল্লির অলি-গলি-পাকস্থলী
পুরনো দিল্লি মানে শুধু ইতিহাস নয়৷ পেটপুজোও৷
ছবি: DW/S. Ghosh
সুতোর মতো রাস্তা
গরু দাঁড়ালে বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা৷ গলি বললেও বেশি বলা হয়৷ এটাই পুরনো দিল্লি৷ গলি জুড়ে ছড়িয়ে আছে হরেক দোকান৷ খাবার থেকে শাড়ি-- সব পাওয়া যায় এখানে৷
ছবি: DW/S. Ghosh
শাহজাহানাবাদ
পুরান দিল্লির প্রেমে পড়েননি, এমন মানুষ নেই৷ মুঘল সম্রাট শাহজাহান এক সময় এই দিল্লির প্রেমে পড়েই নাম রেখেছিলেন শাহজাহানাবাদ৷ এখনও সেই ফলক জ্বল জ্বল করছে পুরান দিল্লির তস্য গলির ধারে৷
ছবি: DW/S. Ghosh
পরোটার নামে রাস্তা
পরোটাওয়ালি গলি পুরান দিল্লির সম্ভবত সব চেয়ে জনপ্রিয় রাস্তা৷ এই রাস্তাতে ঢুকলেই চোখে পড়বে একের পর এক পরোটার দোকান৷
ছবি: DW/S. Ghosh
হাজার কিসিমের পরোটা
এই সমস্ত দোকানে নানা রকমের পরোটা পাওয়া যায়৷ দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকেরা দিল্লি আসেন এই পরোটা গলির টানে৷
ছবি: DW/S. Ghosh
বিশিষ্টদের পরোটা
পরোটা গলির প্রতিটি দোকানই তৈরি হয়েছে উনিশ শতকে৷ দোকানের গায়ে বড় বড় করে লেখা আছে জন্মের বছর৷ আর আছে বিশিষ্টদের ছবি৷ খেলোয়াড় থেকে শিল্পী এমনকি, রাজনীতিবিদ-পরোটা গলিতে পা রাখেননি এমন মানুষ নেই৷ জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী সকলেই এসেছেন পরোটা খেতে৷ দোকানে দোকানে উজ্জ্বল সে সব ছবি৷
ছবি: DW/S. Ghosh
ওজনে পরোটা
দিল্লিতে পরোটা বিক্রি হয় ওজনে৷ এই সমস্ত শতাব্দী প্রাচীন দোকান শুধুই পরোটা বানায় দিনভর৷ হোলসেলে এখান থেকে ওজনে পরোটা কিনে নিয়ে যান অন্য দোকানদাররা৷
ছবি: DW/S. Ghosh
পরোটা থেকে কচুরি
পরোটা গলিকে যে কোনও সময় চ্যালেঞ্জ করতে পারে এই ঐতিহাসিক কচুরির দোকান৷ ১০০ বছরের পুরান এই দোকান দিনের কোনও সময় ফাঁকা থাকে না৷
ছবি: DW/S. Ghosh
কোর্মা কালিয়া
শুধুই কোর্মা পাওয়া যায় এই দোকানে৷ নানা কিসিমের কোর্মা৷ চেখে দেখে ফরমায়েশ করতে পারেন ক্রেতা৷
ছবি: DW/S. Ghosh
জ্যামজমাট
গলির ভিতর জ্যাম নেই, এমন দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়নি কারও৷ রিকশ, ঠেলা, মানুষ-- সব মিলিয়ে জমজমাট হয়ে থাকে পুরান দিল্লির গলি৷ অনেকে বলেন, এই সব গলি ঘুমোয় না৷ সারা দিন সারা রাত চলছে বিকিকিনি৷
ছবি: DW/S. Ghosh
গন্ধের গলি
শুধু খাবার নয়৷ পুরান দিল্লির গলি মানেই আতরের দোকান৷ বৃদ্ধ বিক্রেতা কেবল গন্ধ বিক্রি করেন না, গন্ধের গল্পও বলেন৷ প্রতিটা দোকান মন জিতে নেয় পর্যটকদের৷
ছবি: DW/S. Ghosh
বাড়ির অন্দরে
গোলাপের গন্ধ কোন সময়ে কেমন লাগে, তা জানতে হলে যেতে হবে বিশিষ্ট উর্দু কবি মির্জা গালিবের কাছে৷ পুরান দিল্লির প্রেমে পড়ে সেখানেই বাড়ি বানিয়েছিলেন গালিব৷
ছবি: DW/S. Ghosh
গালিব মিউজিয়াম
ছোট, কিন্তু দিল্লি এলে গালিব মিউজিয়াম দেখতেই হবে৷ পিলারে পিলারে গালিবের লেখা নবাবি দিল্লির কাহিনি শোনায়৷
ছবি: DW/S. Ghosh
রঙ-বেরঙ
পরোটা, কচুরি, আতরের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে রঙ৷ রঙ জাল দিয়ে কাপড়ে ডাই করা হবে৷ পুরান দিল্লির এও এক বহু পুরনো ব্যবসা৷ গলিতে গলিতে এমন দোকান৷
ছবি: DW/S. Ghosh
কুছ দে দে বাবা
আনন্দ আছে, পাশাপাশি রয়েছে মন খারাপ৷ পুরনো দিল্লি জুড়ে ছড়িয়ে ভিখিরির দল৷ নানা বয়সের মানুষ৷ চোখে আকুতি, পেটে খিদে৷
ছবি: DW/S. Ghosh
এক ঝাঁক ইচ্ছে ডানা
একই সঙ্গে আছে এমন প্রাণ খোলা আনন্দও৷ পুরান দিল্লির অলি গলিতে ঘুরতে ঘুরতে দেখা হবেই ওদের সঙ্গে৷
ছবি: DW/S. Ghosh
শেষ চুমুক
এক গ্লাস লেমোনেড৷ তাও ১৫০ বছরের পুরনো দোকানে৷
ছবি: DW/S. Ghosh
16 ছবি1 | 16
কেন এমন হচ্ছে? এনসিইআরটি-র দাবি, ওই বিষয়গুলি না পড়লে ছাত্রছাত্রীদের কোনো ক্ষতি হবে না। করোনার সময় স্কুল যেতে পারেনি ছাত্রছাত্রীরা। ফলে এমনিতেই তাদের উপর এখন অনেক চাপ। তাই চাপ কমাতে এই বিষয়গুলি বাদ দেওয়া হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশ জানিয়েছে, তাদের রাজ্যে সবসময়ই এনসিইআরটি-র বই পড়ানো হয়। ফলে তাদের পাঠ্যক্রম থেকেও এই সমস্ত বিষয় বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব দীপক কুমার জানিয়েছেন, ''২০২৩-২৪ সালের পাঠ্যক্রম থেকে এই বিষয়গুলি বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।''
এনসিইআরটি জানিয়েছে, ২০২২ সালে সিবিএসই-র বই থেকে এই চ্যাপ্টারগুলি আগেই বাদ দেওয়া হয়েছিল। এবার বাকি বোর্ডের বই থেকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে।
ইতিহাসের শিক্ষক সায়ন্তন দাস এবিষয়ে ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''বিজেপির সরকার যে এ পথে হাঁটবে, তাতে আর আশ্চর্য কী! ধীরে ধীরে ভারতের ইতিহাসই বদলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এভাবে ইতিহাস স্তব্ধ করে দেওয়া যায় না।'' সায়ন্তনের বক্তব্য, এই সংকীর্ণ রাজনীতির জন্য একটা গোটা প্রজন্ম অর্ধ সত্য জেনে বড় হবে। এটাই সবচেয়ে দুঃখের।