স্কুল বন্ধ থাকছে, কারখানা-পরিবহণ চালু হবে পর্যায়ক্রমে
২৩ এপ্রিল ২০২০বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে এ পর্যন্ত চার হাজার ১৮৬ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন৷ গেল ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭ জন এবং ১৬ জন সুস্থ হয়েছেন৷ সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট ১০৮ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন৷
এদিন মোট তিন হাজার ৯২১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তিন হাজার ৪১৬টি৷
এদিকে, রোগের বিস্তার রোধে আগেই আগামী ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়েছে৷ সেই সঙ্গে এসেছে কিছু নতুন নির্দেশনা৷
দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে ছুটির সময়ে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে ওষুধ ও রপ্তানিমুখী কিছু শিল্প কারখানা চালু রাখা যাবে৷ পর্যায়ক্রমে আরো কিছু কারখানা ও পরিবহণ খাত উন্মুক্ত করা হবে৷ এই সময়ে সীমিত পরিসরে সরকারের ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খোলা রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে৷
বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয় বলে প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
দুই দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই মত প্রকাশ করে বলেছিলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা কঠোরভাবে মেনে শ্রমিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে রোজার মাসের মধ্যে সীমিত আকারে কিছু গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা চালু করা যেতে পারে৷
বৃহস্পতিবারের প্রজ্ঞাপনে যেসব নির্দেশনা জারি করা হয়েছে সেগুলো হলো:
>> জরুরি পরিষেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা ও এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকবেন৷
>> সড়ক ও নৌপথে সকল প্রকার পণ্য পরিবহণের কাজে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল চলাচল অব্যাহত থাকবে৷
>> কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্প পণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না৷
>> চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যমে (ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টি মিডিয়া) নিয়োজিত কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন৷
>> ঔষধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সকল কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে৷
>> পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তীতে শিল্প-কারখানা, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো ও পরিবহণ পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে৷
>> ছুটির মধ্যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না৷
>> জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো খোলা থাকবে৷
>> জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে৷
যেসব মন্ত্রণালয় খোলা থাকবে
সাধারণ ছুটিকালীন ঢাকাসহ সব বিভাগ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যে ১৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং সেগুলোর অধীন দপ্তর সীমিত পরিসরে খোলা রাখতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়৷
এছাড়া, প্রজ্ঞাপনে সব সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের এই সময়ে আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে বলা হয়েছে৷
এসএনএল/জেডএ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)