করোনা সংকটের কারণে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের স্কুল এখনো বন্ধ৷ এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, এর ক্ষতিকর প্রভাব প্রজন্মান্তরে চলতে থাকবে৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার এক ভিডিওবার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব হুয়ান আন্তনিও গুতেরেস বলেন, ‘‘মধ্য জুলাইয়ে ১৬০টিরও বেশি দেশের স্কুল বন্ধ ছিল৷ এতে ১০০ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয়েছে৷’’
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বিশ্বের মোট শিক্ষার্থীর ৯৪ ভাগই কোনো-না-কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্তদের শতকরা ৯৯ ভাগই নিম্ন বা নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের৷
জাতিসংঘ মহাসচিব এ কারণে মানবজাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমরা এমন এক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যার প্রভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পড়তে পারে, যা মানবজাতির অন্তর্গত সম্ভাবনা নষ্ট করতে পারে, বিগত দশকগুলোর উন্নতির ধারাকেও ব্যহত করতে পারে৷’’ শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় লম্বা সময়ের ব্যাঘাতের কারণে শিশুদের পুষ্টিহীনতা, বাল্যবিবাহ এবং লিঙ্গ বিষম্য বেড়ে যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি৷
ভিডিও বার্তায় বিভিন্ন দেশের সরকারকে শিশুদের স্কুলে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে এ বিষয়ে সহায়ক একটি নীতিমালাও উপস্থাপন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস৷
এসিবি/ কেএম (ডিপিএ)
করোনার মাঝেই খুলছে স্কুল জার্মানিতে
গ্রীষ্মকালীন ছুটি প্রায় শেষ, কিন্তু শেষ নয় করোনা সংকট৷ এর মধ্যে কীভাবে স্কুলে ফিরছে জার্মান শিশুরা, দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
পথ দেখাচ্ছে যে রাজ্য
জার্মানির মেকলেনবুর্গ-পশ্চিম পমেরানিয়ান রাজ্যে করোনা সংকটের মধ্যেই খুরচে স্কুল৷ উত্তরপূর্ব জার্মানির এই রাজ্যে গ্রীষ্মকালীন ছুটির শেষে অবশেষে একে একে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন পড়ুয়ারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Charisius
কতগুলি স্কুল খুলছে
এই রাজ্যের মোট ৫৬৩টি স্কুলে পড়েন মোট এক লাখ ৫২ হাজার ৭০০জন শিক্ষার্থী৷ মার্চ মাসে করোনা সংকটের শুরু থেকে বন্ধ ছিল এই স্কুলগুলি৷
ছবি: Imago Images/N. Schmidt
কীভাবে হবে ক্লাস?
সাধারণভাবে সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত টানা চলে ক্লাস এই স্কুলগুলিতে৷ কিন্তু বর্তমানের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হবে না৷ বদলে, সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ ঘন্টার ক্লাসে ফিরতে চান রাজ্য কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Schlueter
যে কারণে সম্ভব হচ্ছে এটা
রাজ্য সরকারের মতে, এই অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে কম সংক্রমণের হারই এই সিদ্ধান্তের কারণ৷ বারবার হাত ধোয়া, যথাযথ দূরত্ব মেনে চলা ও মাস্ক পরার পরামর্শের মাধ্যমে স্কুল চত্বরে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কর্তৃপক্ষ৷ স্কুলের ওপরেও নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুমুক্তকরণের দায়িত্ব রয়েছে৷ পাশাপাশি, শিক্ষকদের জন্য রয়েছে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার পরিষেবাও৷
ছবি: Reuters/W. Rattay
ভাগে ভাগে বিভক্ত শিক্ষার্থীরা
একটি ক্লাসের সব শিক্ষার্থী আগের মতো একসাথে পড়তে পারবেন না৷ এর পরিবর্তে, ছোট ছোট দল বা ‘কোহোর্ট’ করে তাদের পড়ানো হবে স্কুলে৷ এছাড়াও, অনলাইন ক্লাসের সুবিধা থাকবে তাদের জন্যেও৷ কিন্তু অনলাইনে পড়াশোনা তখনই হবে যদি কোনো স্কুলে কোহোর্টে ভাগ করে পড়ানোর মতো যথেষ্ট সংখ্যায় শিক্ষক না পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
রাষ্ট্রের অর্থায়ন
জার্মান সরকার ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে ‘ডিজিটাল’ পড়াশোনার খাতে দশ মিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ করেছে৷ এই অর্থ থেকে অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য ল্যাপটপ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
ডাক্তারদের কী মত?
লাইপৎজিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক্তার বিলান্ড কিসের মতে, শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের সুযোগ কম৷ তাছাড়া, নতুন করে লকডাউন করলে তা শিশুদের ওপর বাড়তি মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলেও তাঁর ধারণা৷