1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যালিস পাস্কিনির স্ট্রিট আর্ট

গ্যোনা কেটেলস/এসি১১ মার্চ ২০১৬

৩৫ বছরের অ্যালিস পাস্কিনি ইটালির মেয়ে ও রোমের চিত্রশিল্পী৷ স্ট্রিট আর্ট বা রাস্তার চিত্রকলায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছেন অ্যালিস – পরতে পরতে ছবি এঁকে ও সেই ছবি রাস্তাতেই প্রদর্শন করে৷

DW euromaxx Alice Pasquini EINSCHRÄNKUNG
ছবি: DW

অ্যালিস পাস্কিনির ছবি আজকাল আর্ট গ্যালারিতে ঝোলে৷ তবে তিনি আজও দেয়ালে ছবি আঁকেন৷ অ্যালিস বলেন, ‘‘একটা দেওয়ালে ছবি আঁকা ক্যানভাসে ছবি আঁকার চেয়ে অনেক বেশি৷ দেয়ালের একটা ইতিহাস থাকে, রং থাকে, মানুষজন থাকেন, যারা ঐ দেয়ালের কাছাকাছি বাস করেন৷ নিজের স্টুডিওতে একটা ক্যানভাস নিয়ে কাজ করে আমি কোনো প্রেরণা পাই না৷ একটা বাস্তব কাহিনি আছে, এমন কিছু নিয়ে কাজ করার জন্য দেওয়াল বা অন্য কোনো রিসাইকেল্ড মেটিরিয়াল নিয়ে কাজ করতেই আমার বেশি ভালো লাগে৷''

সারা বিশ্বে দেয়ালে দেয়ালে রং স্প্রে করে ছবি এঁকেছেন অ্যালিস৷ কিন্তু সবচেয়ে বেশি তাঁর নিজের শহর রোমের পথেঘাটে৷ রোমের রাস্তাতেই অ্যালিস তাঁর ছবির বিষয় খুঁজে পান: মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাটো সব মুহূর্ত৷ নিজের স্কেচবইতে সেগুলোকে ধরে রাখেন৷ অ্যালিস বলেন, ‘‘আরো বেশি নাড়া দেয় সেই সব জিনিস, যা পঞ্চাশ বছরেও বদলায়নি৷ কী জানেন তো? বিশ্বজনীন কিছু একটা৷ এভাবে আমি যখন ঘুরে বেড়াই, তখন আমি যেন প্রমাণ পাই যে, মস্কো থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে সিডনি পর্যন্ত মানুষের আবেগ-অনুভূতি একই থাকে৷''

অ্যালিস পাস্কিনির স্ট্রিট আর্ট

04:24

This browser does not support the video element.

গ্র্যাফিটি থেকে আর্ট

অ্যালিস পাস্কিনির স্টুডিও শিল্পীদের মহল্লা সান লোরেঞ্জোয়৷ এখানেই তিনি ছবি আঁকেন, অলংকরণ বা অন্যান্য ফরমায়েশি কাজ করেন৷ ইটালির মেয়ে অ্যালিস আর্ট কলেজে পড়ার সময় গ্র্যাফিটির সংস্পর্শে আসেন – আর্ট সম্বন্ধে ওপরমহলের নাকউঁচু ধারণার প্রতিবাদ হিসেবে৷ অ্যালিস স্মৃতিচারণ করলেন, ‘‘আমার খারাপ লাগছিল, কেননা নতুন ছাত্রী হিসেবে সে আমলে কোনো চিত্রপ্রদর্শনীতে গেলেই আমার নিজেকে খুব বোকা মনে হতো, কারণ আমি কিছুই বুঝতে পারতাম না৷ শিল্পকলা যেন অনুভূতির ব্যাপার নয়, মগজের ব্যাপার৷ এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমি রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি – তাছাড়া আমার ছোটবেলা থেকেই আঁকতে ভালো লাগত৷''

বাড়ির দেওয়াল অথবা ক্যানভাস, অ্যালিস যেখানেই আঁকুন, তাঁর ছবির উপজীব্য হল মানুষ আর মানুষের সম্পর্ক৷ অ্যালিস সবচেয়ে ভালোবাসেন মহিলাদের আঁকতে, তাঁরা ঠিক যা, সেইভাবে, কোনোরকম ন্যাকামি করে নয়৷ অ্যালিস বললেন, ‘‘বাবা-মা আর সমাজ মিলে আমাদের একটা চরিত্র গড়ে দেয়৷ সেই চরিত্র আগে থেকেই নির্দিষ্ট, আমাদের সেটা মেনে চলতে হবে৷ আমাদের ভদ্রসভ্য হতে হবে, সব কিছুতে নাক গলানো নয়, দুমদাম করে ঘুরে বেড়ানো নয়, বেশি আওয়াজ করা নয়....অথচ সব মেয়েরাই কৌতূহলী আর প্রাণচঞ্চল, সে তো আপনারা জানেনই৷''

স্তরে স্তরে

‘প্রাচীরের মধ্যে – স্তরে স্তরে', এই নাম দিয়ে অ্যালিস একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেছেন: ত্রিমাত্রিক স্ট্রিট আর্ট৷ সাথে নিয়েছেন এক আলোকচিত্রশিল্পীকে৷ প্রস্তুতি হিসেবে অ্যালিস বেশ কিছু ছোট মডেলের দেওয়াল তৈরি করেছেন, ‘‘একটি দ্বিমাত্রিক ছবিকে ত্রিমাত্রিকে রূপান্তরিত করার জন্য সেটিকে একাধিক স্তরে ভাগ করতে হয়৷ এখানে চারটে স্তর দেখা যাচ্ছে৷ বাস্তবে কিন্তু সাতটা স্তর, সেই সঙ্গে পটভূমি৷''

দর্শকরা ত্রিমাত্রিক চশমা নাকে দিয়ে প্রাচীরের ভেতরে ঢুকতে পারেন৷ প্রদর্শনীর স্থানটি হলো রোম৷ দর্শকদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্কটাই অ্যালিসকে প্রেরণা দেয়৷ সেজন্যই তিনি বারংবার জনসমক্ষে ছবি আঁকেন, ‘‘প্রত্যেকেই একটু অন্যরকম করে দেখে আর তা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েই কথাবার্তা হয়৷ দর্শকরা পরস্পরকে বলেন, তাদের কিরকম লাগছে, কিরকম বোধ হচ্ছে৷''

এখানেও আদানপ্রদানটাই বড় কথা৷ রোমের এই উদ্বাস্তু আবাসনে অ্যালিস অভিবাসী কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে গত এক বছর ধরে কাজ করছেন, তাদের অভিজ্ঞতা চিত্রপটে ধরে রেখেছেন৷ ৩৫ বছর বয়সি শিল্পীর লক্ষ্য খুব সহজ: ‘‘বলতে কি, মানুষের ইতিহাস তো শিল্পকলায় ভরা৷ আর্ট হলো মানুষের হিস্টরি, মানবজাতির ইতিহাস৷ আর্ট আমাদের প্রয়োজন৷ আর্ট দুনিয়া বদলাতে পারে না, কিন্তু পৃথিবীটাকে আর একটু ভালো করে তুলতে পারে৷''

অ্যালিস পাস্কিনি এভাবেই দুনিয়াটাকে আর একটু ভালো করে তুলছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ