খেলার ছলে সিরিয়াস ম্যাজিকে ঢুকে পড়েছেন তিনি৷ বয়স মাত্র ২৩৷ কিন্তু এর মধ্যেই ইউটিউবে তাঁর স্ট্রিট ম্যাজিকের ভিডিও ভাইরাল৷ সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্রিটিশ জাদুকর জুলিয়াস ডিন ঢুকে পড়েছেন সকলের ঘরে৷
বিজ্ঞাপন
লন্ডনের অধিবাসী ডিনের ম্যাজিক নিয়ে আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই৷ তবে তা অন্য মাত্রা পায় যখন তিনি ক্যালিফোর্নিয়া যান স্কুলের একটি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে৷ সেখানে গিয়ে বান্ধবীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নানারকম হাতসাফাইয়ের খেলা দেখাতে শুরু করেন৷ শুধু বান্ধবীরাই নয়, পুরুষ বন্ধুদেরও তা দেখে তাক লেগে যায়৷ ডিনেরও মনে হয়, লন্ডনের রাস্তায় রাস্তায় স্ট্রিট ম্যাজিক দেখাবেন তিনি৷ এরপর লন্ডনে নানা ম্যাজিক দেখিয়েছেন৷ ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার মুহূর্তের মধ্যে লক্ষ লক্ষ লাইক পান তিনি৷ তবে ডিনের লক্ষ্য আরো বড়৷ বিশ্বের সেরা স্ট্রিট ম্যাজিশিয়ন হতে চান তিনি৷
ডিনের শুধু একটাই আক্ষেপ৷ তাঁর বাবা ইন্টারনেট সম্পর্কে একেবারেই অনাগ্রহী৷ তাই তাঁর ভিডিও যখন ঘরে ঘরে সমাদৃত হচ্ছে, বাবা তা বুঝতেও পারছেন না৷ ডিনের বাবাও চান আর সকলের মতো পড়াশোনা করে ছেলে চাকরি করবে৷ ডিন যে ম্যাজিশিয়ান হিসেবে ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করেছেন, তাঁর বাবা তা বুঝতেও পারেন না৷
এসজি/এসিবি
ম্যাজিক মানে ম্যাজিক
সুন্দরীদের করাত দিয়ে কেটে দু’টুকরো করা কিংবা বাতাসে মানুষ ভাসানো, এ সব কী করে করা হয়, তা জানতে হলে বন শহরের ‘ম্যাজিক উইক্স’-এ চলে আসুন৷ এপ্রিল মাস অবধি এখানে সারা ইউরোপ থেকে আসা ম্যাজিশিয়ানদের দেখতে ও শুনতে পাবেন৷
ছবি: Syda Productions/Fotolia.com
টুপি থেকে খরগোশ...
...বার না করতে পারলে আবার ম্যাজিশিয়ান কিসের? জার্মানে তো এই ম্যাজিকটা ভাষার অঙ্গ হয়ে গেছে: ‘আউস ডেম হুট গেৎসাউব্যার্ট’ মানে ‘টুপির ভেতর থেকে ম্যাজিক করে বার করা’৷ যেমন আইডিয়াটা কোথায় পেলেন, তা না জানিয়ে হঠাৎ একটা বুদ্ধি দেওয়া৷
ছবি: Kitty/Fotolia.com
দ্য ম্যাজিক সার্কেল
জার্মানির জাদুকর সমিতির সদস্যসংখ্যা ২,৮০০-র বেশি৷ সমিতির নানা নিয়মকানুন আছে৷ সদস্য হতে গেলে সমিতির ৮০টি স্থানীয় সার্কেল-এর কোনো একটিতে পরীক্ষা পাস করতে হয়৷ ম্যাজিক সার্কেল থেকে প্রতি তিন বছর অন্তর জার্মান চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয়, এছাড়া প্রতিবছর একজন ‘ম্যাজিশিয়ান অফ দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করা হয়৷
ছবি: Syda Productions/Fotolia.com
গোপনীয়
বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা মেলে না – এই হলো ম্যাজিকের জীয়নকাঠি মরণকাঠি৷ চুরিবিদ্যার মতো জাদুবিদ্যাও মহাবিদ্যা, যদি না পড়ে ধরা৷ কাজেই কোনো ম্যাজিশিয়ান যদি ম্যাজিকের রহস্য ফাঁস করে দেন, তাহলে সেখানেই ম্যাজিকের ইতি৷ তাই ম্যাজিক সার্কেল-এর সদস্যরা সেই অপকর্মটি না করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Lander
লাগ লাগ লাগ ভেলকি লাগ
অথবা ইংরেজিতে আব্রাকাডাব্রা – এ সবই হলো ম্যাজিকের ফর্মুলা বা জাদুমন্তর৷ সত্যিই এ ধরনের জাদুমন্তর আছে এবং বহু যুগ ধরে চলে আসছে৷ জার্মানির মের্জেবুর্গের জাদুমন্তরগুলি সম্ভবত সংকলিত হয় অষ্টম শতাব্দীতে৷ জার্মানে ‘আব্রাকাডাব্রা’ মন্তরটির চল তৃতীয় শতাব্দী থেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যাজিক শো
জার্মান জাদুকর মহলের পপস্টার বলা চলে আন্ড্রেয়াস ও ক্রিস্টিয়ান রাইনেল্ট, এই ম্যাজিসিয়ান ভ্রাতৃদ্বয়কে৷ ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে তাঁরা ফ্রাংকফুর্টের ফুটবল স্টেডিয়ামে যে ম্যাজিক শো করেন, তাতে দর্শক এসেছিলেন ৩৮,৫০৩ – যা কিনা একটা বিশ্বরেকর্ড৷ রাইনেল্ট ভাইরা তিনবার জার্মানির ম্যাজিসিয়ান অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/Geisler-Fotopress
করাত দিয়ে কাটা
এই ‘জাদু’-টি সারা দুনিয়ার বড় বড় জাদুকর ও ম্যাজিক শো-র পেটোয়া৷ ১৯২১ সালে প্রথমবার দেখানো হয় মার্কিন মুলুকে: এক মহিলাকে বাক্সের মধ্যে পুরে, সেই বাক্স – মহিলা সুদ্ধু! – করাত দিয়ে কেটে দু’টুকরো করে ফেলা হয়৷ তা সত্ত্বেও মহিলাটি শেষমেষ অক্ষত অবস্থাতেই বাক্স থেকে বেরিয়ে আসেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Photoshot
সবচেয়ে নামকরা জার্মান ম্যাজিসিয়ান
‘সিগফ্রিড অ্যান্ড রয়’ – আদতে জিগফ্রিড ফিশবাখার এবং রয় হর্ন-এর নাম নব্বইয়ের দশকে সবাই চিনতো – বিশেষ করে তাঁদের ম্যাজিক শো-তে একাধিক সিংহ ও সাদাবাঘ থাকার কারণে৷ লাস ভেগাসে সিগফ্রিড আর রয়ের শো নাকি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে জটিল ও মহার্ঘ স্টেজ শো৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাতাসে ভাসা(নো)
এই ‘ট্রিক’ বা ‘চালাকি’-র পিছনে আছে মানুষের সেই চিরকালের স্বপ্ন, মাধ্যাকর্ষণের বাঁধন ছিঁড়ে মেঘ হয়ে উড়ে যাওয়া, ভেলার মতো ভেসে বেড়ানো৷ ভেলা তো নয়, ভেলকি৷ কিন্তু সেই ভেলকি যে কীভাবে হয়, সেটা জানতে পারলেই তো মজাটা মাটি, নয় কি?
ছবি: Aarrttuurr/Fotolia.com
বিশ্ব সমিতি
বিশ্বের সর্বত্র ম্যাজিশিয়ানদের পাওয়া যাবে৷ ‘ফেদারাসিওঁ অ্যাঁতারনাসিওনালে দে সোসিয়েতে মাজিক’ বা এফআইএসএম-এ ৫৫টি দেশের মোট ৬০,০০০ জাদুকর সংঘবদ্ধ৷ সংগঠনটি প্রতি তিন বছর অন্তর একটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যবস্থা করে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S.Chunyang
শিক্ষানবীশ
জাদুবিদ্যার কোনো সরকারি বিধিবদ্ধ শিক্ষানবিশী নেই৷ ম্যাজিক শেখার স্কুলে বুনিয়াদী কিছু পাঠ নেওয়া যায়, প্রবীণ জাদুকররা মাঝেমধ্যে সেমিনার করে কিছু কিছু ‘ভেলকি’ শেখান৷ অনেক জাদুকর আবার নতুন ‘ট্রিক’ আবিষ্কার করে তা ম্যাজিকের দোকানদারদের কাছে বেচে দেন৷ বাকিটা কিন্তু হবু ম্যাজিশিয়ানদের নিজেদেরই পড়াশুনা করে শিখে নিতে হয়৷ এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হলো প্র্যাকটিস, প্র্যাকটিস আর প্র্যাকটিস৷