স্থাপত্যের মধ্যেও প্রকৃতির ছোঁয়া
২৮ ডিসেম্বর ২০২০‘বায়োফিলিক আর্কিটেকচার' শৈলির মৌলিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কোনো ভবন তৈরি করলে সেটির বৈশিষ্ট্য চোখ এড়ায় না৷ সিমেন্টের বদলে কাঠ, প্রান্তের বদলে বক্ররেখার মতো স্থাপত্যেরএই শৈলি জীবনের প্রতি ভালবাসার প্রতিফলন ঘটায়৷
জাকোমো গার্সিয়ানো নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরে ‘ফ্রিবুটার' প্রকল্পের স্থপতি৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃতির সঙ্গে সরাসরি সংযোগ গড়ে তোলা বায়োফিলিক শৈলির অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য৷ প্রকৃতির কোনো বৈশিষ্ট্য নকল করে অথবা প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, এমন আরও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে আমরা সেটা সৃষ্টি করেছি৷ আদর্শ আলোকপাত ও ব্যক্তিগত জায়গা আলাদা করতে গোটা ভবন জুড়ে কাঠের পর্দা ছড়িয়ে রয়েছে৷ এক বছর ধরে সূর্যের আলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সেই পর্দা নিখুঁতভাবে সাজানো হয়েছে৷''
ভেতর ও বাইরের অংশের মধ্যে সীমানা ঘুঁচিয়ে তোলা বায়োফিলিক স্থাপত্যের আরেকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য৷ ‘ফ্রিবুটার' ভবনের বিশেষ নির্মাণশৈলির ফলে নির্মাণের ব্যয় ছিল প্রচলিত ভবনের তুলনায় দশ শতাংশ বেশি৷ দুটি ১২০ বর্গ মিটার ইউনিটে একটি করে পরিবার বাস করে৷ অভিনব পরিবেশের পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির দৌলতে জ্বালানীর ব্যয় প্রায় শূন্য৷ ‘ফ্রিবুটার' ভবনের বাসিন্দা এস্টার ডানিং বলেন, ‘‘এই ঘরটি আমার বিশেষ পছন্দের, কারণ সারাদিন সূর্যের আলো ঘোরাফেরা করে দিনের শেষে এখানে শেষ হয়৷ ঘরের আলো খুবই সুন্দর৷''
শুধু আমস্টারডাম নয়, অন্য অনেক জায়গায়ই পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে নির্মাণের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ মালিক ও স্থপতিরা চারপাশের প্রকৃতিকে সম্পৃক্ত করারও চেষ্টা করছেন৷ তবে সব ক্ষেত্রে ‘বায়োফিলিক স্থাপত্য'-এর প্রয়োগ হচ্ছে না৷
জাকোমো গার্সিয়ানো ইতোমধ্যে আরও বড় আকারের প্রকল্পের কথা ভাবছেন৷ যেমন বর্তমানে ‘মাইটোসিস' নামের প্রকল্পের আওতায় তিনি এমন সব মডিউল তৈরি করছেন, যেগুলি প্রয়োজন অনুযায়ী সম্প্রসারণ করা যায়৷ জাকোমো বলেন, ‘‘এর এত সুবিধা রয়েছে এবং এই ধরনের ভবনের বিপুল চাহিদাও রয়েছে৷ ভবিষ্যতে বায়োফিলিক মনোভাব নিয়ে আরও ভবন ডিজাইন করা হবে বলে আমি মনে করি৷''
‘ফ্রিবুটার' ভবনের বাসিন্দাদের মনে নিজেদের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই৷ ‘বায়োফিলিক স্থাপত্য' সবুজ ও সার্বিক৷
এই কনসেপ্ট বা মনোভাব অত্যন্ত ভবিষ্যতমুখিও বটে৷
ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি