বিশ্বকাপের দৌড়
২৬ মার্চ ২০১৩![](https://static.dw.com/image/15931895_800.webp)
কোন স্পেন? যে স্পেন গতবছর ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে, যেটা ছিল তাদের পর পর তৃতীয় বড় খেতাব৷ যারা ২০০৭ সাল যাবৎ ২৪টি কোয়ালিফাইং ম্যাচে সরাসরি জেতার পর এই হালে এসে ফ্রান্স এবং ফিনল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করেছে৷
যে স্পেন তাদের গ্রুপে ফ্রান্সের চেয়ে দু'পয়েন্টে পিছিয়ে আছে৷ যে স্পেন গত অক্টোবরে স্বদেশেই ফ্রান্সকে শেষ মুহূর্তে একটি ইকোয়ালাইজারের সুযোগ দিয়ে জেতা গেমটা ড্র করে বসে৷ বলতে কি, সেকেন্ড হাফে ফ্রান্সের দাপটে স্পেনকে যেন কোণঠাসা মনে হয়েছিল৷ এ সেই স্পেন৷
ফুটবল পরাশক্তি স্পেনের অবক্ষয়?
স্পেনের কোচ দিদিয়ের দেশঁ অবশ্য এ সব ঘটনাকে স্পেনের অবক্ষয়ের চিহ্ন বলে মনে করেন না৷ এমনকি ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্পেনের সাম্প্রতিক ড্র-কেও নয়৷ ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্পেনের ড্র নাকি বাজে ফিনিশিং-এর জন্য, নয়তো স্পেনীয়রা গোল করার ভুরি ভুরি সুযোগ তৈরি করেছিল, কিন্তু সেগুলোর সদ্ব্যবহার করতে পারেনি৷ আর তারপর খানিকটা ঢিলেঢালা ডিফেন্ডিং-এর দরুণ বিপক্ষকে ইকোয়ালাইজারটি প্রেজেন্ট করে বসে ছিল৷
পুরাতন কোঁদল
দেশঁ যাই বলুন না কেন, স্পেনের ডিফেন্সের দুর্বলতা কিন্তু অনেকেরই চোখে পড়েছে৷ বিশেষ করে ফিনল্যান্ডের ঐ ইকোয়ালাইজারের পরে যখন স্পেনের দুই ডিফেন্ডার, রেয়াল মাদ্রিদের আলভারো আর্বেলোয়া এবং বার্সেলোনার জেরার পিকের মধ্যে তকরারের সৃষ্টি হয়৷ আর্বেলোয়া তাঁর ডান দিক সামলাতে পারেননি, বলেন পিকে, যার ফলে ক্রসটা করা সম্ভব হয়েছে, যে ক্রস থেকে ফিনল্যান্ডের টিমু পুক্কি গোলটা করেন৷ অভিযোগ শুনে আর্বেলোয়া সেখান থেকেই পিকের দিকে চিৎকার করতে থাকেন৷ যার উত্তরে পিকে তাঁকে চুপ করতে বলেন৷ আর পণ্ডিতরা দেখেন আবার সেই রেয়াল-বার্সেলোনা বৈরীতার বিভীষণ ছায়া৷
কিন্তু সব মিলিয়ে স্পেন দু-দু'বার তাদের এক গোলের লিড শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখতে পারেনি৷ তার অর্থ কি এই যে, স্পেন খেলার শেষের দিকে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে? স্পেনের কোচ ভিনসেন্ট দেল বস্কে সেটা স্বীকার করেছেন, তবে এ-ও বলেছেন, ক্লান্তির জন্য নয়৷ ফিনল্যান্ডে স্পেন হেরেছে, তারা গোল করতে পারেনি বলে৷
সাভি হের্নান্দেজ কি খেলবেন?
স্পেনের খেলার প্রাণপুরুষ এই ৩৩ বছর বয়সি সাভি৷ কিন্তু তাঁর হাঁটুর পিছনের পেশিতন্তুর চোট এখনও পুরোপুরি সেরেছে কিনা, বোঝা যাচ্ছে না৷ দৃশ্যত তিনি খেলবেন, যেমন খেলবেন সাবি আলন্সো, এবং সেই সঙ্গে সের্জিও বুস্কেটস – স্পেনের মিডফিল্ডের থ্রি মাস্কেটিয়ার্স৷ দেল বস্কে সাভি কিংবা সাবিকে জোর করে খেলাবেন না, কিন্তু ডাক্তার বললে আর প্লেয়াররা রাজি থাকলে যে তিনি তাদের নামাতে পেরে খুশি বৈ অখুশি হবেন না, সেটা ভালোই বোঝা যাচ্ছে৷
জার্মান কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ কিন্তু জার্মানির হেরৎসেনআউরাখ থেকেই মন্তব্য করে বসে আছেন, স্পেন মঙ্গলবার ফ্রান্সের কাছে হারলেও ঠিকই প্লে-অফে জিতে বিশ্বকাপে যাবে৷ স্পেনকে বাদ দিয়ে কি বিশ্বকাপ হয়?
লোকে বলে ফুটবলই হয় না৷
এসি/ডিজি (এপি, ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)