স্পেনের প্রশাসন জানিয়েছে, এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ। সব জায়গায় এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত স্পেনের বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৫০ তে পৌঁছেছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ বলে জানা গেছে। ভ্যালেন্সিয়া কার্যত একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখনো বহু জায়গায় উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারেননি বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তবে উদ্ধারকাজ চলছে।
মঙ্গলবার প্রবল বৃষ্টির পর ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা চকিত বন্যা হয় ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আরো বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে। বৃষ্টির জন্য উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
বৃহস্পতিবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যাঞ্চেজ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গেছিলেন। সেখানে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, খারাপ সময় এখনো শেষ হয়নি। আরো বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। এরপর বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
চকিত বন্যায় স্পেন জলের তলায়
প্রবল ঝড়, সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। তারপরেই চতিক বন্যায় ভেসে গেল স্পেন। তিনজন মারা গেছেন। নিখোঁজ তিন।
ছবি: Isabel Infantes/REUTERS
স্পেনের অবস্থা
সাধারণত ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশে এই ধরনের ছবি দেখা যায়। এখন তা দেখা গেল স্পেনে। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের পর রাস্তা পরিবর্তিত হয়ে গেল এক ভয়াবহ নদীতে। প্রবল গতিতে জল ছুটতে শুরু করলো সেই রাস্তা দিয়ে।
ছবি: MAITE GARCIA-COOPER/REUTERS
মৃত তিন
এখনো পর্যন্ত এই বন্যায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনজন নিখোঁজ। একজন মারা গেছেন লিফটে জল ঢোকার ফলে, আরেকজনের গাড়িতে জল ঢুকে মৃত্যু হয়েছে। তৃতীয়জনের দেহ নদীতে পাওয়া গেছে। প্রচুর মানুষ আটকে পড়েছেন। মাদ্রিদের থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে টোলেডোতে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে মানুষকে উদ্ধার করতে হয়েছে। তারা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ছবি: Susana Vera/REUTERS
মাদ্রিদের ছবি
মাদ্রিদ অঞ্চলের অবস্থা শোচনীয়। সমস্ত রাস্তায় এখন হয় নদী না হয় কাদার স্রোত বইছে সেখানে। গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। সেতু ভেঙে পড়েছে। সপ্তাহান্তে প্রবল বৃষ্টি, ঝড়, বজ্রপাতের পর এই অবস্থা।
ছবি: Isabel Infantes/REUTERS
জরুরি পরিষেবায় সমানে ফোন
মাদ্রিদের জরুরি পরিষেবা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাতে সেখানে এক হাজার দুইশটি ফোন যায়। প্রত্যেকটি ফোন গেছে মানুষকে উদ্ধার করার আবেদন জানিয়ে।
ছবি: Marc Asensio Clupes/Zuma/IMAGO
ট্রেন বন্ধ, সাবওয়েও
মাদ্রিদের সঙ্গে দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। শহরের সাবওয়েগুলিও বন্ধ রাখা হয়েছিল। সোমবার সন্ধ্যার পর ঝড়-জল কমলে তা আবার চালু হয়।
সপ্তাহান্তের ঝড়-বৃষ্টিতে বেহাল হয়ে পড়েছে স্পেন। সেসময় আবহাওয়া নিয়ে সর্বোচ্চ লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এখন তা কমিয়ে হলুদ করা হয়েছে। তারপরেও মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
ছবি: Marc Asensio Clupes/ZUMA Press Wire/picture alliance
বাড়িতে জল
অনেকের বাড়িতেই এভাবে ভিতরে জল ঢুকে গছে। হঠাৎ এই ঘটনা ঘটেছে বলে কোনোকিছুই করতে পারেননি বাসিন্দারা। ফলে ঘর-গেরস্থালির অনেক জিনিসই জলে খারাপ হয়ে গেছে।
ছবি: Marc Asensio Clupes/ZUMA Press Wire/picture alliance
কাদায় ভরা
রাস্তা, গাড়ি, বাড়ি ভরে গেছে কাদায়। ফলে বাসিন্দারা কেউ গাড়ি থেকে কাদা সাফ করছেন। কেউ বাড়ি ঠিক করতে ব্যস্ত।
ছবি: Isabel Infantes/REUTERS
জলবায়ু পরিবর্তনের ফল
আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রচণ্ড গরম, ঝড় এ সবই হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। পৃথিবী যত উষ্ণ হবে, ততই এই ধরনের ঘটনা ঘটবে। তারা জানিয়ছেন, আরো তীব্র ও ভয়ংকর ঝড়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ছবি: Isabel Infantes/REUTERS
9 ছবি1 | 9
বাড়িতে থাকার পরামর্শ
ভ্যালেন্সিয়া এবং ক্যাসেলন অঞ্চলের মানুষদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বস্তুত, ১৯৭৩ সালে শেষ এমন বন্যা দেখেছিল স্পেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। তবে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা তিনি বলেননি। এদিকে, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এমন আবহাওয়ার জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। যত দিন যাবে, এই ধরনের পরিস্থিতি আরো বেশি তৈরি হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ নেই, জল নেই
বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখনো বিদ্যুৎ নেই। নেই খাওয়ার জল। গাড়ি, ট্রাক, বাস ভেসে গেছে জলের তোড়ে। বহু মানুষ স্থানীয় পুলিশ স্টেশন, দমকলের দপ্তরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। উদ্ধারকারীরা আক্রান্তদের বিভিন্ন শিবিরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
স্পেনের রাজা এবং প্রধানমন্ত্রী দু'জনেই মৃতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, সব করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজা।