স্পেনের মায়োর্কা দ্বীপ ইউরোপের সেরা ছুটি কাটানোর জায়গাগুলোর অন্যতম৷ সেখানে হঠাৎ করে চোখের সামনে এসে হাজির আটফুট লম্বা এক হাঙর...
বিজ্ঞাপন
তবে হাঙরটিকে দেখে নাকি অনেকেই আতঙ্কিত হননি৷ ব্রিটিশ পর্যটক টিম প্রটে-জোন্স যেমন বলেছেন, ‘‘শনিবার তীরের কাছে কম পানিতে যখন হাঙরটি নির্বিকারচিত্তে স্নানরত পর্যটকদের পাশ কাটিয়ে সাঁতরে যায়, তখন কেউ প্যানিক করেননি৷’’ বরং টিম-এর মতো অনেকেই নাকি মুগ্ধনয়নে এই অপরূপ জীবটিকে দেখেছেন৷
অবশ্য তার পর পরই সকলকে পানি থেকে উঠে আসতে বলা হয়৷ লাইফগার্ডরা রেড ফ্ল্যাগ টাঙিয়ে দেয়৷ পুলিশ সারা উপকূল ঘুরে দেখে, কোথাও আর কোনো হাঙর বা হাঙরের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে কিনা৷
পরে সেই হাঙরটাই আবার ফিরে আসে৷ কিন্তু এবার তাকে দেখা যায় বালির ওপর ছটফট করতে৷ স্থানীয় পালমা অ্যাকোয়ারিয়ামের কর্মীরা হাঙরটিকে ধরে পরীক্ষা করে দেখেন, তার মাথায় একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷ ওই আঘাতের কারণেই হাঙরটি সম্ভবত উদভ্রান্ত, দিশাহারা হয়ে পড়েছিল৷ আঘাতের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে হাঙরটিকে পরে মেরে ফেলা হয়৷
মায়োর্কায় এই হাঙর সংক্রান্ত খবর ও ভিডিও বিবিসি, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট বা দ্য গার্ডিয়ানে যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে, কেননা মায়োর্কা ব্রিটিশ টুরিস্টদের কাছে বিশেষভাবে প্রিয়৷ গার্ডিয়ান একটি মায়োর্কিনিজ পত্রিকার সূত্রে খবর দিয়েছে যে, হাঙরটির মাথায় হার্পুনের আঘাতের চিহ্ন ছিল৷
নয়তো ঐ সপ্তাহান্তেই ‘৪৭মিটার পানির নীচে’ শীর্ষক মার্কিন ছবিটিতে দুই বোন কেজ ডাইভিং করার সময় হাঙরের আক্রমণের মোকাবিলা করে বক্স অফিসে ৭৪ লাখ ডলার আমদানি করেছে৷
অপরদিকে ২০১৬ সালে সারা বিশ্বে মানুষের উপর হাঙরের আক্রমণের ঘটনা ঘটে ৮১ বার – প্রাণ হারান চারজন মানুষ৷
বিশেষজ্ঞরা বলেন, হাঙরের আক্রমণে আমার-আপনার মারা যাবার সম্ভাবনা মাথায় ধূমকেতু পড়ে মারা যাওয়ার চেয়ে বেশ কিছুটা কম৷
এসি/এসিবি
বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী কয়েকটি প্রাণী
হাঙর দেখলে আমরা অনেকেই ভয় পাই৷ কিন্তু জানেন কি, হাঙরের আক্রমণে প্রতিবছর কতজন ব্যক্তি মারা যায়? কিংবা বাঘ, সিংহ, সাপের হামলায়? ছবিঘরে থাকছে সে তথ্যগুলো৷
ছবি: AP
মশা
বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাণীর তালিকায় সবার আগে থাকছে মশার নাম৷ কি অবাক হচ্ছেন? তাহলে জেনে নিন যে, মশার কামড়ে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারায়৷ এছাড়া ডেঙ্গু, পীতজ্বর, এনসেফালাইটিস বা মস্তিষ্কপ্রদাহ ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরও প্রায় সোয়া লক্ষ মানুষ৷
ছবি: Fotolia/Kletr
মানুষ
হ্যাঁ৷ এই আধুনিক যুগে এসেও মানুষই মানুষের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে৷ প্রতিবছর প্রায় পৌনে পাঁচ লক্ষ মানুষ অন্য মানুষের হাতে প্রাণ হারায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সাপ
সব সাপ প্রাণঘাতী নয়, এমনকি অনেক প্রজাতির সাপের কামড়ে বিষও থাকে না৷ কিন্তু যাদের আছে তাদের কামড়েই প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার লোক মৃত্যুবরণ করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/blickwinkel/B. Trapp
কুকুর
কুকুরের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে জলাতঙ্ক রোগের নাম৷ এর টিকা আবিষ্কৃত হলেও এখনও এই রোগে প্রতিবছর মারা যান প্রায় ২৫ হাজার জন৷
ছবি: picture-alliance/ZB/B. Wüstneck
মিঠাপানির শামুক
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দূষিত পানির সংস্পর্শে গিয়ে মূলত শিশুরা একধরণের অসুখে ভোগে, যা কখনও কখনও মৃত্যুর কারণও হয়ে থাকে৷ মিঠাপানির শামুক থেকে নিঃসৃত প্যারাসাইট বা পরজীবী দূষিত পানির সঙ্গে মিশে থাকায় সিসটোসোমিয়াসিস নামক একটি রোগ হয়ে থাকে৷ এতে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার জনের মৃত্যু হয়৷
ছবি: imago/McPHOTO
কেঁচোকৃমি
বিভিন্ন ধরণের কৃমির মধ্যে কেঁচোকৃমি সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী৷ এর সংক্রমণে বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের প্রাণ যায়৷ এর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি৷
ছবি: CDC
ফিতাকৃমি
এই জাতের কৃমির সংক্রমণে মারা যায় প্রায় দুই হাজার মানুষ৷ কেঁচোকৃমির মতো ফিতাকৃমিতেও শিশুরাই বেশি সংক্রমিত হয়৷ কৃমিজাত রোগ থেকে মুক্তি পেতে উন্নত শৌচাগার ও যথাযথ মল নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Loznak
কুমির
হাঙর, সিংহ কিংবা বাঘের মতোই কুমিরকে ভয় পান অনেকেই৷ অবশ্য পাওয়ারই কথা৷ কারণ কুমিরের হামলায় নিহত হওয়া মানুষের সংখ্যা প্রায় এক হাজার৷
ছবি: Fotolia/amnachphoto
জলহস্তী
দেখতে হয়ত ততটা ভয়ংকর নয়, কিন্তু তাদের কাছ থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়৷ কারণ সুযোগ পেলেই আক্রমণাত্বক হয়ে উঠতে পারে জলহস্তী৷ প্রতিবছর প্রায় পাঁচশো মানুষের জীবনের অবসান ঘটায় তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa-Zentralbild
হাতি
দেখতে গোবেচারা গোছের৷ কিন্তু মাঝেমধ্যেই হিংস্র হয়ে ওঠে হাতি৷ বুনোহাতির হামলায় মানুষের নিহত হওয়ার খবর আমরা প্রায়ই পড়ে থাকি৷ প্রতিবছর এভাবে প্রায় একশোজনের প্রাণ যায়৷
ছবি: Reuters/A. Lee
হাঙর
হাঙরকে দেখতে যতই ভয়ংকর মনে হোক, মানুষের যেহেতু তাদের কাছাকাছি যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে, তাই হাঙরের হামলায় মানুষের প্রাণ যাওয়ার ঘটনাও খুব বেশি ঘটেনা৷ সংখ্যাটা প্রতিবছর ১০ জনের মতো৷