দক্ষিণ ফ্রান্সের বিস্তৃত এলাকা জ্বলছে। দাবানল গ্রাস করছে বনভূমি, ঘরবাড়ি, মাঠ। বোর্ডো শহর গত ছয়দিন ধরে দাবানলের কবলে। ১৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অনেকে এখানে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন।

দাবানলের সঙ্গে লড়াই করছেন তিন হাজার দমকলকর্মী। রাতদিন তারা আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত। কিন্তু তারপরেও দাবানলকে বাগে আনা যায়নি।

১৬ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ত্রাণশিবিরে। ফ্রান্সের এমনই একটি ত্রাণশিবিরের ছবি। এখানে বেশ কিছু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এরকম সাতটি ত্রাণশিবির তৈরি করা হয়েছে।

ইউরোপে এবার অস্বাভাবিক গরম পড়েছে। ফ্রান্সে সোমবার তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। দক্ষিণ ফ্রান্সে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। আর এই গরম হলো একেবারে শুকনো গরম। তার ফলেই দাবানল ছড়াচ্ছে।

ফ্রান্সে গত মঙ্গলবার থেকে ১১ হাজার হেক্টর বা ২৭ হাজার একরের বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। রোববার বহু এলবাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

ফ্রান্সে সমুদ্রতীর থেকে দেখা যাচ্ছে দাবানলের কালো ধোঁয়া। ইউরোপে এখন সামার হলিডে চলছে। তারইমধ্যে দাবানলের গ্রাসে পড়ছে একের পর এক দেশ।

স্পেনে অন্তত ৩০টি জায়গা দাবানলের কবলে পড়েছে। সেই আগুন নেভাতে দমকল চেষ্টা করছে। তাদের সাহায্য করছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে বেশ কিছু জায়গা দুর্গম। ফলে সেখানে আগুন নেভাতে বিপাকে পড়ছেন দমকল কর্মীরা।

পশ্চিম স্পেনে একটি ন্যাশনাল পার্কের কাছে দাবানল ছড়াচ্ছে। সেখানে হেলিকপ্টারের সাহায্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্পেনের উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে দাবানল জ্বলছে। তিন হাজার ৫০০ হেক্টরের বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

স্পেনে স্থানীয় মানুষও আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। নিজেদের ঘরবাড়ি, বনভূমি বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তারা।

পর্তুগালে হেলিকপ্টার নিয়ে আগুন নেভাতে গিয়েছিলেন এক পাইলট। কিন্তু হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে।

পর্তুগালে ১৫ হাজার হেক্টর বনভূমি পুড়িয়ে দিয়েছে দাবানল। দাবানলের আগুনে দুইজন মারা গেছেন, ১৬০ জনের বেশি আহত। হাজার হাজার মানুষকে ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে।

ক্রোয়েশিয়া, হাঙ্গেরি, গ্রিসেও দাবানল ছড়িয়েছে। সেখানে দাবানলের মোকাবিলায় সেনা নামানো হয়েছে। উপরের ছবিটি ক্রোয়েশিয়ার।

আবহাওয়া অফিসের দাবি, ইউরোপের দেশগুলিতে তাপমাত্রা আরো বাড়বে এবং তা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছোঁবে। ফলে প্রবল গরম ও দাবানলের মুখে পড়তে হবে ইউরোপের মানুষকে।

চেক প্রজাতন্ত্রে জার্মানির সীমান্ত সংলগ্ন এই উদ্যান পর্যটকদের খুব প্রিয়৷ এখানে গত সোমবার লাগা আগুন আশেপাশের অনেক বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে৷ বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে৷

২০৯ কিলোমিটার দূরে প্রাগ থেকেও এই আগুনের ধোঁয়া গেছে বলে টুইটারে লিখেছে প্রাগ ও আঞ্চলিক দমকল বিভাগ৷

জার্মানি ও চেক প্রজাতন্ত্রের শত শত দমকলকর্মী আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন৷

শ্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড ও ইটালিও বাড়িয়েছে সাহায্যের হাত৷ তারা হেলিকপ্টার ও উড়োজাহাজ দিয়ে সহযোগিতা করেছে৷

চেক প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা মঙ্গলবার এলাকা প্রদর্শন করেন৷ তখন দমকল কর্তৃপক্ষ তাকে জানায় যে, একজন পর্যটকের অবহেলার কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়৷

এদিকে, সারা ইউরোপে গেল কয়েকদিন ধরে তাপদাহ বয়ে গেছে৷ কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে৷ গরমে কয়েকশ’ মানুষও মারা গেছেন৷