করোনা ভাইরাসের কারণে ‘লকডাউন’ স্পেনে বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে অসুস্থ মানুষেরা পরিত্যক্ত অবস্থায় আছেন৷ তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া সেনাসদস্যরা কয়েকজনের মৃতদেহ বিছানা থেকে উদ্ধার করেছেন বলে জানায় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷
বিজ্ঞাপন
কেন অসহায় ওই বৃদ্ধ মানুষগুলোকে এভাবে ফেলে রাখা হয়েছিল তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ স্পেনে বৃদ্ধাশ্রমগুলো জীবাণুমুক্ত করতে গিয়ে হৃদয়বিদারক এ ঘটনার মুখোমুখি হন সেনাসদস্যরা৷
করোনা থেকে বাঁচতে যা কিছু সাবধানে ধরবেন
কোন কোন জিনিসে করোনা ভাইরাস লুকিয়ে থাকতে পারে? কোন জিনিসগুলোতে বুঝেশুনে হাত দিতে হবে? দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/Kontrolab/IPA/S. Laporta
দরজার হাতল
গবেষণা বলছে, দরজার হাতলে পাঁচ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে করোনা ভাইরাস। সুতরাং, সাবধান! সব সময় পরিষ্কার রাখুন দরজার হাতল। অথবা হাত দিলে সেই হাত খুব ভালো করে ধুয়ে নিন।
ছবি: picture-alliance/dpa Themendienst/F. Gabbert
চামচ
আপনার এলাকায় এখনো রেস্তোরাঁ বা অফিসের ক্যাফেটেরিয়া খোলা আছে? করোনার আতঙ্কের এই সময়েও সেখানে খেতে হয়? তাহলে চামচ বা কাঁটাচামচ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান। অনেকেই বলছেন, করোনায় সংক্রমিত কেউ ব্যবহার করলে চামচে অনেকক্ষণ জীবাণু থেকে যেতে পারে।
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Kalaene
টেডি বিয়ার
এমনিতে টেডি বিয়ার নিরাপদ। এমন খেলনার মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকির কথা কোনো গবেষণায় উঠে আসেনি। তবে খেলনা তৈরিতে প্লাস্টিক, কার্ডবোর্ড ইত্যাদি ব্যবহার করলে তার মাধ্যমে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Gollnow
প্যাকেট, চিঠি ইত্যাদি
যুক্তরাষ্ট্রের রকি মাউন্টেন ল্যাবরেটরির এক গবেষণা বলছে, কার্ডবোর্ড বা কাগজে তৈরি কোনো দ্রব্যে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে করোনা ভাইরাস।
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Weller
পোষা প্রাণীতেও ঝুঁকি?
না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে পোষা প্রাণীর মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার কথা এখনো গবেষকরা নিশ্চিত করে বলেননি।
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/A. Tarantino
ফলমূল, শাকসবজি
না, ভালো করে ধুয়ে নিলে ফলমূল, শাক সবজির মাধ্যমেও করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নেই। সুতরাং প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করে নিশ্চিন্তে খান।
ছবি: picture-alliance/Kontrolab/IPA/S. Laporta
ফ্রোজেন ফুড
করোনা ভাইরাস তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি নীচে নেমে গেলেও তরতাজা থাকে। সুতরাং ফ্রিজে রাখা প্যাকেটজাত খাবার খুব ভালো করে গরম না করে একদম খাবেন না।
ছবি: picture-alliance /imageBROKER/J. Tack
7 ছবি1 | 7
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রবলস বলেন, ‘‘বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে থাকা বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর এবং অত্যন্ত অনমনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে৷
‘‘সেনাসদস্যরা হঠাৎ করে সেগুলোতে গিয়ে এ অবস্থা দেখতে পায়৷ করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বৃদ্ধাশ্রমের কর্মীরা তাদের স্রেফ ফেলে রেখে চলে গেছে৷''
ইউরোপে করোনা ভাইরাস মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়া দেশগুলোর একটি স্পেন৷ জন হপকিন্সের তথ্যানুযায়ী সেখানে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন৷ মারা গেছেন দুই হাজার ৩১৮ জন৷ স্পেনে সোমবার একদিনে সর্বোচ্চ ৪৬২ জনের মৃত্যু হয়৷
স্পেনে এখন স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের দেহ প্রথমে হিমঘরে রাখা হচ্ছে এবং পরে প্রশাসন থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হচ্ছে৷ কিন্তু করোনার লক্ষণ নিয়ে মৃত্যু হলে মৃতদেহ বিছানাতে রাখা হচ্ছে যতক্ষণ পর্যন্ত না যথাযথ সুরক্ষা পোশাক পরে প্রশাসন থেকে সেটি সরিয়ে নেওয়া হয়৷
সবচেয়ে আক্রান্ত রাজধানী মাদ্রিদে এত মানুষ মারা যাচ্ছেন যে এই কাজে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময়ও পেরিয়ে যাচ্ছে৷ সংকট দিন দিন এতটাই খারাপ হচ্ছে যে মাদ্রিদ পৌরসভার ফিউনেরাল হোম থেকে সুরক্ষা যন্ত্রের অভাবে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃতদেহ সংগ্রহ মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে৷
করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দশ দেশ
করোনায় এ পর্যন্ত কোন দশটি দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি সংক্রামিত হয়েছে, মৃত্যু কোন দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি? দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/F. Lo Scalzo
১০. জার্মানি
মোট আক্রান্ত ১৫ হাজার ৩২০জন৷ মারা গেছেন ৪৪জন৷ সুস্থ হয়েছেন ১১৫জন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Meissner
৯. নেদারল্যান্ডস
মোট আক্রান্ত দুই হাজার ৪৬৮জন৷ মারা গেছেন ৭৭জন৷ সুস্থ হয়েছেন দুইজন৷
ছবি: AFP/R. de Waal
৮. দক্ষিণ কোরিয়া
মোট আক্রান্ত আট হাজার ৬৫২ জন৷ মারা গেছেন ৯৪ জন৷ সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৫৪০জন৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
৭. যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭১৬জন৷ মারা গেছেন ১৩৮ জন৷ সুস্থ হয়েছেন ৬৫জন৷
ছবি: Getty Images/C. Furlong
৬. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মোট আক্রান্ত ১৪ হাজার ২৫০জন৷ মারা গেছেন ২০৫ জন৷ সুস্থ হয়েছেন ১২১জন৷
ছবি: AFP/J. Edelson
৫. ফ্রান্স
মোট আক্রান্ত ১১ হাজার ১০জন৷ মারা গেছেন ৩৭২ জন৷ সুস্থ হয়েছেন ১২জন৷
ছবি: picture-alliance/abaca/A. Marechal
৪. স্পেন
মোট আক্রান্ত ১৮ হাজার ৭৭জন৷ মারা গেছেন ৮৩৩জন৷ সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১০৭জন৷
ছবি: Reuters/E. Alonso
৩. ইরান
মোট আক্রান্ত ১৮ হাজার ৪০৭জন৷ মারা গেছেন এক হাজার ২৮৪জন৷ সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৭৯জন৷
ছবি: Reuters
২. চীন
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রয়েছেন চীনে৷ সেখানে মোট আক্রান্ত ৮১ হাজার ১৯৯জন৷ মারা গেছেন তিন হাজার ২৫৩জন৷ কিন্তু আক্রান্ত যেমন বেশি, তেমনি সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষও সেখানে সবচেয়ে বেশি৷ চীনে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭১ হাজার ২৬৬জন৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Vernon Yuen
১. ইটালি
মোট আক্রান্ত ৪১ হাজার ৩৫ জন৷ করোনা সংক্রমণের কারণে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ইউরোপের এই দেশে৷ সেখানে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৪০৫৷ আক্রান্তের তুলনায় সুস্থ হওয়ার হার সেখানে এখনো কম৷ মোট সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৪৪০জন৷
ছবি: Reuters/Policlinico Gemelli
10 ছবি1 | 10
ইউরোপে সবচেয়ে আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ইটালির পরই আছে স্পেন৷ ইটালিতে সোমবারও ৬০২ জন মারা গেছেনে৷ মোট মৃত্যু ছয় হাজার ৭৭ জন৷ তবে আশার কথা হচ্ছে গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে৷ সরকারের দেশজুড়ে ‘লকডাউন' ঘোষণা এবং কঠোরহাতে তা কার্যকর করার ফল হয়তো ফলতে শুরু করেছে৷